সেমির স্বপ্নে যেকোনো মূল্যে এগিয়ে যেতে চান জামাল

গ্রুপ পর্বে মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচ লক্ষ্য পূরণের ‘ফাইনাল’ বলে মনে করেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2023, 04:12 PM
Updated : 4 June 2023, 04:12 PM

সেই ২০১৩ সালের আসর থেকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলছেন জামাল ভূঁইয়া। একে একে খেলে ফেলেছেন চারটি আসর। কিন্তু প্রতিবারই গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার হতাশা হয়েছে সঙ্গী। এবার সে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে যেকোনো মূল্যে বেরিয়ে আসতে চান জামাল।

ভারতের বেঙ্গালুরুতে আগামী ২১ জুন শুরু হতে যাওয়া সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ সামনে রেখে রোববার ক্যাম্প শুরু করেছে বাংলাদেশ। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় সোমবার শুরু হবে মাঠের প্রস্তুতি।

ক্যাম্পে যোগ দিয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জামাল জানালেন সাফ নিয়ে নিজের ভাবনা। সেখানে লেবানন, মালদ্বীপ ও ভূটানের বিপক্ষে লড়ে সেমি-ফাইনালে ওঠার তাড়না ফুটে উঠল বারবার।

বিশেষ করে মালদ্বীপের বিপক্ষের ম্যাচটিকে লক্ষ্যপূরণের ‘ফাইনাল’ মনে করছেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। সবশেষ সিশেলসের বিপক্ষে হারে ভেঙে পড়েনি জামালের মনোবল।

“প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে সেমি-ফাইনালে ওঠা। আমার মনে হয়, আমাদের ভালো সুযোগ আছে। গ্রুপে আমাদের ‘ফাইনাল’ হবে মালদ্বীপের সাথে। কোচ ও বাকিরা এরই মধ্যে এগুলো বলে দিয়েছে। আমরা যদি প্রথম ম্যাচে লেবাননের সঙ্গে একটা পয়েন্ট আদায় করে নিতে পারি, আমি মনে করি এটা দলের জন্য ভালো। আমরা জানি, সাফের আগে লেবানন চারটা ম্যাচ খেলবে। ওদের ম্যাচ ফিটনেস, ওদের টিম শেপ অলরেডি ভালো, কিন্তু আমি মনে করি, প্রথম ম্যাচ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচ ভালো খেললে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। বিশেষ করে প্রথম দুই ম্যাচ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

“(আমাদের নিয়ে) অন্য মানুষের আত্মবিশ্বাস আমি খেয়াল করি না। আমাকে আমার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। কিভাবে খেলতে হবে, পয়েন্ট নিতে হবে, কিভাবে জিততে হবে-এটা আমাদের ভেতরের বিষয়। কোচ, খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলে যেকোনো মূল্যে সামনের ১৪-১৫ দিনের মধ্যে এই উপায়গুলো বের করতে হবে।”

সতীর্থদের উদ্দেশ্যে নিজেদের প্রমাণের তাগিদ দিলেন জামাল। 

“এটা দলের জন্য অপরিহার্য এবং এটা দলের সবাই জানে। আমার কাছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ সবকিছু। এই পর্যায়ে এসে আমাদের প্রমাণ করতে হবে, আমরা কিছু করতে পারি। এটা দেশের জন্য ভালো, দেশের জন্য ভালো।”

চলতি মৌসুমের ফেডারেশন কাপ শেষ হয়েছে। তবে প্রিমিয়ার লিগ পুরোপুরি শেষ হয়নি এখনও। খেলোয়াড়রা তাই টানা খেলার মধ্যে আছে। তবে একের পর এক ম্যাচ খেলার ক্লান্তি, অবসাদের অজুহাত দেখাতে চান না জামাল।

“এটা ফুটবলের অংশ। আপনারা যদি ইউরোপে দেখেন, বিষয়গুলো একই। এটা তাই আমাদের জন্যও একইরকম হওয়া উচিত। কোনো অজুহাত নেই। আমাদের সবটুকু দিতে হবে। কোচ জানে, হয়ত কিছু খেলোয়াড় মানসিকভাবে ক্লান্ত, তিন-চার দিন পর পর অনেক ম্যাচ খেলতে হয়েছে তাদের, কিন্তু এ মুহূর্তে আমাদের ওগুলো নিয়ে পড়ে থাকার সময় নেই এবং এটা সবাই জানে। প্রস্তুতি এবং কিভাবে সবকিছুর জন্য তৈরি হতে হবে, সেটা কোচ নির্ধারণ করবেন এবং আমরা তার নির্দেশনা ও পরিকল্পনা অনুসরণ করব।”

শেখ মোরসালিন, ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের মতো তরুণদের কাঁধেও আস্থার হাত রাখছেন অধিনায়ক। স্কোরিংয়ের পুরনো সমস্যা দল কাটিয়ে উঠবে বলেও আশার কথা শোনালেন তিনি।

“ফাহিমের সাথে আমি গত চার-পাঁচ বছর ধরে খেলছি। আমি মনে করি ও অনেক পরিণত। লিগের সেকেন্ড লেগে প্রায় সব ম্যাচই খেলেছে, খুবই ভালো খেলেছে। আমি মনে করি ও বিপজ্জনক, গতিময় এবং মানসম্পন্ন খেলোয়াড়; সে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে।”

“ফুটবলে গোলই মূল কথা। যারা সামনে খেলে, আমরা যারা আছি, তারা যদি গোল দেখতে চায়…আমি মনে করি প্রস্তুতির সময় এই দিকটা নিয়ে স্ট্রাইকারদের সাথে কোচ কাজ করবেন। সবাই জানে, আমাদের ফিনিশিংয়ে একটা ইয়ে (সমস্যা) আছে।”

২০০৩ সালে প্রথম ও সবশেষ এই প্রতিযোগিতার শিরোপা জেতা বাংলাদেশ ফাইনাল খেলেছিল পরের আসরেও। সেই শেষ। এবার আরও একবার তেমন দারুণ কিছুর স্বপ্ন।

জামাল অবশ্য বড় স্বপ্ন এখনই দেখাচ্ছেন না। তবে গ্রুপ পর্বের বৈতরণী পেরিয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠা স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তিনি।

“আশা করছি এবার হবে। আমি মনে করি, আপনার সবাই দেখেছেন, আমরা ভারত, কুয়েত ও নেপালের গ্রুপে নেই। তাই আমি মনে করি, আমাদের সেমি-ফাইনালে যাওয়ার ভালো সুযোগ আছে। সাফ জেতা সহজ নয়। আমাদের ম্যাচ বাই ম্যাচ ভাবতে হবে। আমি শুধু চাই, আপনারা সবাই দলের জন্য দোয়া করেন। ”