ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ব্রাইটনের বিপক্ষে ২০ মিনিটের মধ্যে চার গোল করে ফেলেন চেলসির এই উইঙ্গার।
Published : 29 Sep 2024, 01:58 PM
কত কত গ্রেট ফুটবলার গোটা ক্যারিয়ারে কখনও এক ম্যাচে চার গোল করতে পারেননি। কোল পালমার সেই স্বাদ ফের পেয়ে গেলেন মাস পাঁচেকের মধ্যেই! তাতেও ঠিক মন ভরছে না ২২ বছর বয়সী ফুটবলারের। রেকর্ড গড়া কীর্তির পরও চেলসির এই উইঙ্গার বলছেন, আরও দু-একটি গোল তার করা উচিত ছিল। তার কোচ এন্টসো মারেস্কা তো বলছেন, অন্তত আরও দু-তিনটি গোল করতে পারতেন পালমার!
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শনিবার ইতিহাস গড়া পারফরম্যান্স দেখান পালমার। ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিয়নের বিপক্ষে চেলসির হয়ে ঘরের মাঠে চারটি গোল করেন তিনি ২০ মিনিটের মধ্যে।
প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো ফুটবলার চার গোল করতে পারলেন প্রথমার্ধেই।
ম্যাচের সপ্তম মিনিটে এগিয়ে যায় ব্রাইটন। পালমার সমতা ফেরান ২১তম মিনিটে। ২৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে চেলসিকে এগিয়ে নেন তিনি।
চেলসিতে আসার পর ১০ পেনাল্টির সবকটিই কাজে লাগিয়ে তিনি নাম পেয়ে গেছেন ‘আইস-কোল।’
এর মিনিট তিনেক পরই হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে দলকে আরও এগিয়ে নেন তিনি। ৩৪তম মিনিটে একটি গোল করে ব্যবধান কমায় ব্রাইটন। তবে ৪১তম মিনিটে আরেকটি গোল করেন পালমার। ওই ৪-২ ব্যবধানেই শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে নেয় চেলসি।
গত এপ্রিলে এভারটনের বিপক্ষে চেলসির ৬-০ গোলের জয়ে চার গোল করেছিলেন পালমার।
ম্যানচেস্টার সিটিতে নিয়মিত খেলার নিশ্চয়তা না পেয়ে গত মৌসুমে ৪ কোটি ২৫ লাখ পাউন্ডে চেলসি আসেন তিনি। নতুন ক্লাবের হয়ে তিনটি হ্যাটট্রিক হয়ে গেল তার।
চেলসির জার্সিতে তিনটি হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব তার আগে আছে আর কেবল তিনজনের- ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড, দিদিয়ে দ্রগবা ও জিমি ফ্লয়েড হাসেলব্যাঙ্ক।
পালমার তাদের ছুঁয়ে ফেললেন স্রেফ ৩৯ ম্যাচ খেলেই।
যদিও আরও গোল করতে না পারার অতৃপ্তি তার আছে। শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত তিন পয়েন্টের স্বস্তির কথাও তিনি বললেন ম্যাচ শেষে বিবিসিকে।
“পাঁচ-ছয় গোল করা উচিত ছিল আমার। প্রথম সুযোগটি কাজে লাগাতে না পারায় হতাশ ছিলাম। তবে ওরা যেভাবে খেলেছে এবং তাদের যেরকম ‘হাই লাইন’ রক্ষণ ছিল, মনে হচ্ছিল যে আরও সুযোগ পাবই।”
“আমাদের ম্যানেজার খুব ভালো পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন। আমরা জানতাম, দ্রুত পাস দিয়ে কীভাবে কাজে লাগাতে হয়। আমাদের মূল চাওয়া ছিল তিন পয়েন্ট এবং আমরা তা পেয়েছি।”
ওই আফসোসটুকু আছে এন্টসো মারেস্কারও। তবে সেটা পাশে সরিয়ে পালমারকে স্তুতিতে ভাসালেন কোচ।
“সে চার গোল করেছে, তবে আরও দুই-তিনটি গোল করতে পারত। এই ক্ষুধা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা তার ধরে রাখা জরুরি।”
“সে শীর্ষমানের ফুটবলার। এখনকার ফুটবলে একজন তরুণ ফুটবলার দ্রুতই বদলে যেতে পারে। কিন্তু কোল (পালমার) গোল করে এবং কখনোই বদলায় না।”
আট বছর বয়সে ম্যানচেস্টার সিটির একাডেমিতে যোগ দিয়ে ওখানেই বেড়ে উঠেছেন পালমার। পরে ক্লাবের যুব দল হয়ে খেলেছেন মূল দলে। ওই সময়টায় সিটি কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার কোচিং স্টাফে ছিলেন মারেস্কা। পালমারকে তাই ভালো করেই চেনেন তিনি।
ফুটবলার হিসেবে এই তরুণকে তিনি দারুণ পছন্দ করেন তো বটেই, তবে মানুষ হিসেবে তাকে অন্য উচ্চতায় রাখেন কোচ।
“অনেক আগে থেকেই ওকে খুব ভালো করে চিনি আমি, যখন ম্যান সিটির অনূর্ধ্ব-২৩ ও মূল দলে খেলেছে। ছেলেবেলায় যেমন ছিল, তিন-চর বছর আগেও তেমনই এবং এখনও। গোল, অ্যাসিস্ট, প্রিমিয়ার লিগের সেরা ফুটবলার হওয়া… এসব প্রাপ্তি তাকে বদলে দেয় না। সে খুবই বিনয়ী এবং আমার কাছে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।”
“সে স্পেশাল ফুটবলার, খুবই সাধারণ ও বিনম্র ছেলে। লোকের কাছে তার নিজের বলার দরকার নেই যে, সে কতটা ভালো, কারণ সবাই তা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে।”
এই জয়ের পর ছয় ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চারে আছে চেলসি। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিভারপুল।