রোনালদোর চূড়ায় বসতে এখনও দেরি!

পেশাদার ফুটবলে ক্লাব ও আন্তর্জাতিক অঙ্গন মিলিয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত গোলের হিসাব ফিফা না রাখার কারণেই যত জটিলতার সৃষ্টি। তাইতো, গত বছরের শুরু থেকে কয়েকবার ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো উঠে বসার পরও ‘কিন্তু’ শেষ হয় না। রেকর্ডটা যেন তার হয়েও হয় না। এই যেমন, টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ইয়োসেফ বিকানের ‘৮০৫ গোল’ ছাড়িয়ে গেলেও বলা হচ্ছে রেকর্ডটি সত্যিকারের অর্থে নিজের করে নিতে আরও কিছুটা পথ যেতে হবে পর্তুগিজ মহাতারকাকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2022, 09:14 AM
Updated : 13 March 2022, 10:23 AM

পুরো বিষয়টি আসলে নির্ভর করছে, কোন তথ্য বা তথ্যসূত্রকে আমলে নেওয়া হবে।

অফিসিয়াল পরিসংখ্যানবিদদের হিসেবে রেকর্ডটি অনেক আগেই ছাড়িয়ে গেছেন রোনালদো। সেই হিসেবে ৭৫৯ গোল নিয়ে শীর্ষে ছিলেন অস্ট্রিয়া ও চেকোস্লোভাকিয়ার (সেই সময়কার) ফুটবলার বিকান। গত বছরের জানুয়ারিতে তাকে টপকে যান রোনালদো।

ওই হিসেবেই পেলের গোল ৭৫৭টি। তবে একমাত্র ফুটবলার হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির মতে, তার অফিসিয়াল গোল ৭৬৭। গত বছর সেটাকেও ছাড়িয়ে যান তিনি।

আনঅফিসিয়াল পরিসংখ্যানবিদদের সংগঠন ‘আরএসএসএফ-এর মতে, ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময় চেকোস্লোভাকিয়ার ক্লাব স্লাভা প্রাগে খেলা বিকানের গোল ৮০৫টি। শনিবার রাতে প্রিমিয়ার লিগে টটেনহ্যামের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো অসাধারণ হ্যাটট্রিকে সেটাকেও টপকে গেছেন রোনালদো। তার গোল এখন ৮০৭।

এদিকে, গত বছরেই চেক ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন দাবি করে যে বিকানের ক্যারিয়ার পুনরায় পর্যালোচনা করে তারা এই স্ট্রাইকারের গোল পেয়েছেন ৮২১টি! এর অর্থ হলো, ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে তর্কের উর্ধে গিয়ে বসতে আরও অন্তত ১৪টি গোল চাই রোনালদোর।

আন্তর্জাতিক ফুটবলেও সর্বোচ্চ গোলের মালিক রোনালদোর বয়স পেরিয়ে গেছে ৩৭ বছর। বয়সের ভারে ধার কিছুটা কমলেও তার গোল ক্ষুধা যে এখনও একটুও কমেনি, তা সবশেষ ম্যাচের পারফরম্যান্সেই প্রমাণ।

তার ক্যারিয়ারে ৫৯তম হ্যাটট্রিকের পর সতীর্থ পল পগবার কণ্ঠেও শোনা গেল একই কথা। সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক ম্যাচে রোনালদোর সাদামাটা পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়, দলে তার অবস্থান নিয়েও নানারকম কথা শোনা যায়। সেসবও যেন থামিয়ে দিলেন পগবা।

“তার কখনোই কোনো সমস্যা হয়নি। আমাদের দলে ইতিহাসের সেরা স্ট্রাইকার আছে, এতে কোনো সমস্যা হতেই পারে না। আজ সে দেখিয়েছে যে সে কেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। তার ও দলের সবার পারফরম্যান্স চমৎকার ছিল।”

২০০৩ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার পর রোনালদোর আজকের মহাতারকা হয়ে ওঠার পথে যাত্রা শুরু। ক্লাবটিতে প্রথম মেয়াদে তিনটি লিগ শিরোপা জিতেছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে জিতেছিলেন প্রথম ব্যালন ডি’অর। সেখানে ২০০৭-০৮ মৌসুমে স্বাদ পান প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগেরও।

২০০৯ সালে পাড়ি জমান রিয়াল মাদ্রিদে। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উজ্জ্বল সময়টা তিনি কাটান সেখানেই। মাদ্রিদের দলটির হয়ে ৯ বছরের ক্যারিয়ারে দুটি লা লিগাসহ জিতেছিলেন চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তার মধ্যে টানা তিনবার। এরপর ইউভেন্তুসে গিয়ে জেতেন টানা দুটি সেরি আ ট্রফি।

ক্যারিয়ারে মোট সাতটি লিগ শিরোপা জয়ী রোনালদো তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে গড়েছেন অসংখ্য রেকর্ড। ১৪০ গোল নিয়ে আছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে।