ফুটবলের বর্ণিল এক চরিত্র নেইমার। তার পথচলার বাঁকে বাঁকে গল্পের অন্ত নেই। শৈল্পিক ফুটবলের পসরা মেলে প্রশংসিত হন। সমলোচিতও হন নানা কাণ্ড করে। নেটফ্লিক্সের তিন পর্বের ডকুমেন্টরিতে ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডের ফুটবলার হয়ে ওঠা, পথচলা, জীবন দর্শন থেকে শুরু করে অনেক কিছুই উঠে এসেছে। সেখানে বরাবরের মতোই অকপটে নিজের একান্ত কথাগুলো মেলে ধরেছেন তিনি।
Published : 20 Jan 2022, 05:51 PM
‘The Perfect Chaos’ নামের ডকুমেন্টরি প্রচারিত হওয়ার আগেই ভেতরের কিছু বিষয় প্রকাশিত হয়েছে। ইএসপিএন-এর সঙ্গে আলোপচারিতায় নেইমারও কিছু বিষয় জানিয়েছেন। যেমন বলেছেন, সমালোচকদের অহেতুক কথা-বার্তা মোটেই পাত্তা দেন না তিনি।
“যারা জানে আমি কে, কেমন-সেটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যারা আমাকে জানে না এবং আমাকে নিয়ে কেবল বাজে কথা বলে, আমি তাদেরকে পাত্তা দেই না।”
“আশা করি, এরপরও লোকে এই ডকুমেন্টরি দেখবে এবং আমাকে তারা যে দৃষ্টিতে দেখে, ভাবে, এই তথ্যচিত্র তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও ভাবনা বদলে দিতে পারে। আমার আশা, এরপর তারা আমাকে পছন্দ করতে শিখবে...এমনকি অল্প হলেও!”
পরিবার-পরিজন এবং বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে গেলে নেইমার হারিয়ে যান অন্য জগতে। গান-বাজনা, আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠেন নিজের মতো করে। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও এমন আয়োজন করে সমালোচকদের রোষানলেও তিনি পড়েছেন একাধিকবার।
এই ডকুমেন্টরিতে নেইমার বাইরের মানুষকেও জানাতে চেয়েছেন তিনি কেমন। কেমন তার দিনের রুটিন, কাজ। একজন বাবা, সন্তান ও পিতা হিসেবে কেমন, সেটাও তুলে ধরতে চেয়েছেন সবার সামনে।
“সত্যিই খুব কম সংখ্যক মানুষ জানে, আমি আসলে কেমন। শুধু আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, আমার পরিবার ও কিছু সতীর্থ সেটা জানে এবং এখন আমার মনে হয়, আমার জীবনের কিছুটা অংশ আমি দেখাতে পারি (বাইরের মানুষকে); আমার প্রতিদিনের জীবন, কাজ, বাড়িতে আমি কেমন, একজন বাবা, সন্তান, ভাই হিসেবে কেমন। আশা করি, এই ডকুমেন্টরি মানুষকে সেই দিকগুলো দেখাবে।”
“এই বিষয়গুলো নিয়েই আমরা কাজ করেছি (তথ্যচিত্রে)। শতভাগ সত্যি দেখাচ্ছি আমরা এবং এটাই গুরুত্বপূর্ণ।”
“ডকুমেন্টরির এই নাম দেওয়া হয়েছে, কেননা সবসময় আমার জীবনটাই ছিল এরকম। ছয় মাস বয়সে আমি বাবা-মায়ের সঙ্গে দুর্ঘটনায় পড়েছিলাম এবং তখন থেকেই বিশৃঙ্খলার শুরু…আমার কিছু হয়নি তখন।”
“এরপর ফুটবলার হলাম। অবশ্যই খুব সুন্দর সব মুহূর্ত পেলাম, কিন্তু এখনও আমার জীবনে অনেক কাণ্ড ঘটে।”
ব্রাজিলে তো বটেই, সান্তোস ছেড়ে বার্সেলোনায় পাড়ি জমানো এবং এরপর পিএসজিতে যোগ দেওয়া, সবখানেই সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে। নেইমার কখনও তা আড়াল করেননি।
“অবশ্যই মাথা উঁচুতে রাখতে হবে, যাতে পড়ে না যাই, ভেঙে না পড়ি। পরিবার-বন্ধুরা গুরুত্বপূর্ণ, সতীর্থরাও। সবসময় তারা আমার পাশে থেকেছে। আমার কোনো একটা কষ্টের দিনে তাদের একটা কথা, একটু আলিঙ্গন আমাকে ভালো অনুভব করতে সাহায্য করে।”
“কিন্তু, আমি এখন নিজেকে শক্ত মনে করি। একজন শক্ত মানুষ, এটা কেবল শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও। কেননা, আমাকে অনেক চাপ সামলাতে হয়। আমি কে, সেটার কারণে, আমি কোথায় খেলি, সেটার কারণে। আমি একজন ব্রাজিলিয়ান এবং আরও অনেক কারণে আমাকে অনেক চাপ সামাল দিতে হয়। এখন আমি অনেক শক্ত, পরিণত এবং এমন হতে আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে।”
চোটের কারণে বর্তমানে মাঠের বাইরে রয়েছেন নেইমার। পিএসজির এই ফরোয়ার্ডের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচে ফেরা। আগামী মাসে শেষ ষোলোয় মাদ্রিদের দলটির মুখোমুখি হবে পিএসজি।