সোমবার দুপুরে নিরাপদে ওমানে পৌঁছানোর পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন জাতীয় দলের মিডফিল্ডার মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মামুনুল ইসলাম ও গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলতে রোববার রাত সাড়ে ৯টায় বাংলাদেশ বিমানে করে ওমানের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল ফুটবল দলের। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেরিতে রওনা দেয় দল। উড়াল দেওয়ার পর নতুন করে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বিমানবন্দরে ফিরে আসে বিমানটি।
উত্তরার একটি হোটেলে রাত কাটিয়ে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার ফ্লাইটে ওমানের পথে রওনা দেয় দল। নিরাপদে সেখানে পৌঁছালেও ইব্রাহিমের কণ্ঠে শোনা গেল আতঙ্কের রেশ।
“দুই ঘণ্টা তারা আমাদের বসিয়ে রেখেছিল। কখনও বলে তেল নিচ্ছে। বিভিন্ন সমস্যার কথা বলছিল। রওনা দেওয়ার ২৫-৩০ মিনিট পর একটা শব্দ হয়ে লাইট-এসি বন্ধ হয়ে গেল। সবার প্রশ্ন তখন, এগুলো কেন বন্ধ হয়ে গেলো? সবার মধ্যে ভয়-আতঙ্ক ঢুকে গিয়েছিল।”
“এর ৫-৭ মিনিট পর পাইলট জানালেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঢাকায় ফিরে যাচ্ছে বিমান। অনেক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি ছিল। সবার অবস্থা খারাপ। ওই সময় ভয়ে আমরা কেউ কারো দিকে তাকাতে পারছিলাম না।”
“আমাদের কথা হচ্ছে, সমস্যা তারা আগে জানাতে পারত। ফ্লাইটও তো তারা বদলে দিতে পারত। সমস্যার বিষয়টি তারা অনেক আগে থেকেই তো জানত।”
১৪ নভেম্বরের ম্যাচ সামনে রেখে সোমবারই অনুশীলনে নামার কথা ছিল দলের। স্পেন থেকে অধিনায়ক জামাল ভূইয়া দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু ক্লান্তি আর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার পর এদিন অনুশীলন না করার ইঙ্গিত দিলেন ইব্রাহিম।
“অনেক জার্নি হয়েছে। আজ সন্ধ্যায় অনুশীলন করার কথা ছিল। কিন্তু শরীর ও মনের ওপর দিয়ে যে ধকল গেছে, তাতে মনে হচ্ছে আজ আর অনুশীলন হবে না।”
মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামের বর্ণনাতে উঠে এলো বিমানের ভেতরের তখনকার পরিবেশ।
“বিমান আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া শুরু হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও ঠিকভাবে কাজ করছিল না। কিছুক্ষণ এভাবে চলার পর পাইলট যান্ত্রিক ত্রুটির কথা জানিয়ে ঢাকায় নিরাপদ অবতরণ করান। স্বস্তি ফেরে সবার মধ্যে।”
একই রকম অভিজ্ঞতার কথা বললেন গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাও।
“হঠাৎ করে ইলেক্ট্রিক সাপোর্ট বন্ধ হয়ে গেলো। সে এক ভয়ানক পরিস্থিতি। পাইলট ঝুঁকি না নিয়ে জরুরি অবতরণ করেছে। যারা তখন ঘুমিয়ে ছিল, আমরা তাদেরকে ডাকার সাহসও করিনি।”
“ওমানে নিরাপাদে পৌঁছাতে পেরে আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া। শরীর ও মনের ওপর দিয়ে যে চাপ গেছে, তাতে আজ আর কোনো অনুশীলন হচ্ছে না।”