রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পিএসজিকে হারিয়ে শেষ আটে ইউনাইটেড

হাস্যকর দুটি ভুলে প্রথমার্ধেই দুই গোল হজম করে বসে পিএসজি। তারপরও দুই লেগ মিলিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে লক্ষ্য পূরণের পথেই ছিল তারা। কিন্তু শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় পাল্টে গেল পুরো চিত্র। প্যারিসের দলটিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে গেল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2019, 10:01 PM
Updated : 7 March 2019, 12:12 PM

প্রতিপক্ষের মাঠে বুধবার রাতে শেষ ষোলোর ফিরতি পর্বে ৩-১ গোলে জিতে ইংলিশ ক্লাবটি। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-৩। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে এক গোল বেশি করে পরের রাউন্ডের টিকেট পায় উলে গুনার সুলশারের দল। প্রথম লেগে ২-০ গোলে জিতেছিল পিএসজি।

রোমেলু লুকাকুর গোলে ইউনাইটেড এগিয়ে যাওয়ার পর পিএসজিকে সমতায় ফেরান হুয়ান বের্নাত। কিছুক্ষণ পর লুকাকুর দ্বিতীয় গোলে আবারও এগিয়ে যায় অতিথিরা। আর শেষ দিকে মার্কাস র‌্যাশফোর্ডের স্পট কিকে পরের রাউন্ডের টিকেট পায় তিনবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা।

ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে পিএসজির জার্মান ডিফেন্ডার টিলো কেরার এক লক্ষ্যহীন ব্যাকপাস করে বসেন। বলের ধারে কাছে ছিলেন না গোলরক্ষক কিংবা ডিফেন্ডার চিয়াগো সিলভা। ছুটে গিয়ে বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে জানলুইজি বুফ্ফনকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে দলকে এগিয়ে দেন লুকাকু।

শুরুর ধাক্কা দ্রুতই সামলে ওঠে স্বাগতিকরা। ১০ মিনিট বাদে সমতাসূচক গোলও আদায় করে নেয় তারা। ডি-বক্সে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বাঁ দিকে পাস দেন কিলিয়ান এমবাপে। গোলমুখে ফাঁকায় বল পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার বের্নাত।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচে পরপর দুই মিনিটে দুটি সুযোগ নষ্ট হয় পিএসজির। গোল করার মতো পজিশনে বল পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন বের্নাত আর আনহেল দি মারিয়ার দূরপাল্লার শট পোস্ট ঘেঁষে চলে যায়।

আসরের সবচেয়ে বেশি বয়সী গোলরক্ষক বুফ্ফনের মারাত্মক ভুলে ৩০তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজম করে পিএসজি। র‌্যাশফোর্ডের সোজাসুজি শট ধরতে গিয়ে তালগোল পাকান অভিজ্ঞ ইতালিয়ান গোলরক্ষক। ছুটে এসে আলগা বল জালে ঠেলে দেন লুকাকু।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই নিয়ে শেষ তিন ম্যাচের প্রতিটিতে দুটি করে গোল করলেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড লুকাকু।

দ্বিতীয়ার্ধে একচেটিয়া বল দখলে রেখে আক্রমণ করতে থাকে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ররা। কিন্তু গোলের দেখা মেলেনি। ৫৫তম মিনিটে দি মারিয়া জালে বল পাঠালেও তিনি অফসাইডে থাকায় ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোল দেননি রেফারি।

৮৪তম মিনিটে প্রতি আক্রমণে গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন এমবাপে। তবে দাভিদ দে হেয়াকে কাটাতে গিয়ে পড়ে যান ফরাসি ফরোয়ার্ড। আলগা বলে বের্নাতের নেওয়া শট পোস্টে লাগলে হতাশা বাড়ে পিএসজি শিবিরে।

খেলার ধারার বিপরীতে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে সফল স্পট কিকে স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে দেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড র‌্যাশফোর্ড। দিয়েগো দালোতের শট ডি-বক্সে পিএসজির ডিফেন্ডার প্রেসনেল কিম্পেম্বের হাতে লেগে বাইরে চলে গেলে প্রথমে কর্নারে বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। পরে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি দেন রেফারি।

এর পরপরই দানি আলভেসকে তুলে চোট কাটিয়ে ফেরা এদিনসন কাভানিকে মাঠে নামান কোচ টমাস টুখেল। কিন্তু বাকি সময়ে পিএসজিকে কাঙ্ক্ষিত গোল এনে দিতে পারেনি কেউই।

ক্লাব ফুটবলে ইউরোপের সেরা প্রতিযোগিতার ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে নকআউট পর্বের প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ২-০ বা তার চেয়ে বড় ব্যবধানে হারের পর ঘুরে দাঁড়িয়ে পরের রাউন্ডে ওঠার কীর্তি গড়লো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আর এই নিয়ে টানা তিন মৌসুমে প্রতিযোগিতাটির শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নিলো পিএসজি।

একই সময়ে শুরু হওয়া আরেক ম্যাচে দুর্দান্ত এক জয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে পোর্তো। ঘরের মাঠে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে রোমাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে পরের রাউন্ডে ওঠে পর্তুগালের ক্লাবটি।

প্রথম পর্বে নিজেদের মাঠে ২-১ গোলে জিতেছিল ইতালিয়ান ক্লাব রোমা।