১৯৫৮ বিশ্বকাপে সুইডেনের বিপক্ষে ব্রাজিলের ৫-২ ব্যবধানে জেতা ফাইনালে জোড়া গোল করেছিলেন পেলে। এতদিন বিশ্বকাপে কোনো টিনএজারের একাধিক গোলের সেটাই ছিল একমাত্র কীর্তি। আর্জেন্টিনার জালে দুই গোল করে ৬০ বছর পর পেলের কীর্তিতে ভাগ বসিয়েছেন এমবাপে। এরপর থেকে ব্রাজিলের সাবেক ফরোয়ার্ড রোনালদোর সঙ্গে তার তুলনা করছেন অনেক ফুটবল পণ্ডিত।
ইংল্যান্ডের সাবেক ফরোয়ার্ড গ্যারি লিনেকার যেমন বলেছেন, “আগেই বলেছিলাম, কিলিয়ান এমবাপে হবে বিশ্ব ফুটবলের পরবর্তী সুপারস্টার।”
“আমি খুবই খুশি। পেলের পর দ্বিতীয় টিনএজার হওয়াটা তৃপ্তিদায়ক। পেলে ভিন্ন ক্যাটেগরির। তবে তাদের সঙ্গে থাকতে পারাটা ভালো।”
“আমি সব সময় যেটা বলি, সেটা ইতোমধ্যে বলেছি, বিশ্বকাপে আপনি সব উচুঁ পর্যায়ের খেলোয়াড় পাবেন। তাই আপনি কি করতে পারেন এবং আপনার কি সামর্থ্য সেগুলো দেখানোর জন্য এটা একটা সুযোগ। এটা দেখানোর জন্য বিশ্বকাপের চেয়ে ভালো জায়গা আর নেই।”
ফ্রান্সের অধিনায়ক উগো লরিস জানান, রাশিয়ায় এসে ঠিক এই কাজটিই করেছেন এমবাপে।
“আমি মনে করি, এমবাপে সারা বিশ্বের সামনে নিজেকে তুলে ধরেছে।”
আর্জেন্টিনা ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে চার মিনিটের মধ্যে গোল দুটি করেন এমবাপে। অতোঁয়ান গ্রিজমানের স্পট কিক থেকে পাওয়া গোলের পেছনের কারিগরও তিনি। দানবীয় গতিতে ৭০ মিটার দৌড়ে ডি-বক্সে ঢুকে পেনাল্টিটি আদায় করেছিলেন পিএসজির এই ফরোয়ার্ড।
মেসিদের বিপক্ষে দারুণ পারফম্যান্সের পর এমবাপের মাটিতে পা রাখা দেখে খুশি ফরাসি ফরোয়ার্ড ফ্লোরিয়ান থাউভিন। পেনাল্টি আদায় করা ওই দৌড়ের প্রসঙ্গ টেনে মজা করে তিনি বলেন, “আমি বিস্মিত হয়ে ভাবছিলাম সে স্কুটার চালাচ্ছে নাকি।”
“ম্যাচের পর আমি তাকে ঠাণ্ডা দেখলাম। যেন কিছুই ঘটেনি এমন একটা ব্যাপার।”
তারপরও ফ্রান্সের এই ‘বিস্ময় বালককে’ কোয়ার্টার-ফাইনালে আরও বেশি কিছু দেখাতে হবে। সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ উরুগুয়ে। এমবাপেকে খেলার জন্য অতটা জায়গা উরুগুয়ে দেবে না, যতটা কাজানে আর্জেন্টিনা দিয়েছিল।
“একটা বিষয় নিশ্চিত, অতোঁয়ানের উপদেশ হবে মহামূল্যবান। সে তাদের (উরুগুয়ের) কিছু খেলোয়াড়কে জানে।”
“গদিন এবং হিমেনেস আতলেতিকোয় একসঙ্গে খেলে। তারা পরস্পরকে নিখুঁতভাবে জানে এবং তারা খুবই কম ভুল করে। তারা কেবল একটু ধীর গতির হতে পারে। তাই তাদের পেছনে আমাদের খেলার জন্য জায়গা খুঁজে পাওয়া দরকার।”
উরুগুয়ে ম্যাচে এমবাপের ওপর বাড়তি প্রত্যাশার চাপ দিতে রাজি নন গ্রিজমান। তবে অস্কার তাবারেসের দলের বিপক্ষে লড়তে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন এই ফরোয়ার্ড।
“কোয়ার্টার-ফাইনালে অবশ্যই এমবাপের কাছে অত বেশি আশা করা ঠিক হবে না। কেননা, উরুগুয়ে তার জন্য প্রস্তুত থাকবে।”
“টেকনিক্যালি কোচ গতকাল (আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচে) নিখুঁত কাজ করেছেন। তাই আমরা জানি (উরুগুয়ে ম্যাচে) আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত থাকব।”