‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচটি ২-০ গোলে জিতেছে দক্ষিণ কোরিয়া। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্ব পার হতে পারল না জার্মানি।
একই সময়ে গ্রুপের অন্য ম্যাচে মেক্সিকোকে ৩-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে গেছে সুইডেন। গোল ব্যবধানে পিছিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে মেক্সিকো।
ইতালি ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আসা জার্মানি টুর্নামেন্ট জুড়ে ছিল বিবর্ণ। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দলটি টুর্নামেন্ট শুরু করে মেক্সিকোর বিপক্ষে হার দিয়ে। সুইডেনের বিপক্ষে শেষ সময়ের গোলে কোনোরকমে জিতে ইওয়াখিম লুভের শিষ্যরা।
কাজান অ্যারেনায় বুধবার প্রথমার্ধের শুরু থেকে আক্রমণ করে খেলে জার্মানি তবে টিমো ভের্নার, মার্কো রয়েসরা গোলের তেমন কোনো ভালো সুযোগ তৈরি করতে পারেননি।
লাল কার্ডের জন্য জার্মান দলে ছিলেন না জেরোম বোয়াটেং; চোট কাটিয়ে উঠতে পারেননি আরেক ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার। তবে তার কোনো প্রভাব শিরোপাধারীদের রক্ষণে পড়েনি।
অষ্টাদশ মিনিটে মানুয়েল নয়ারের ব্যর্থতায় সুযোগ পেয়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়া। মিডফিল্ডার জুং উ ইয়ংয়ের ফ্রি-কিকে বল জার্মান গোলরক্ষকের হাত থেকে ফস্কে যায়। তবে ছুটে গিয়ে সন হিয়ুং মিন শট নেওয়ার আগেই কোনোমতে ফিস্ট করে বল সরিয়ে দিতে পারেন নয়ার।
৪০তম মিনিটে কর্নার থেকে ভের্নারের কাট ব্যাকে বল পান হুমেলস। তার শট ফিরিয়ে দেন হিয়ুন-উ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত জার্মানি। দ্বিতীয় মিনিটে ইয়োশুয়া কিমিখের ক্রসে অরক্ষিত লেয়ন গোরেটস্কার হেড দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষক।
প্রতি আক্রমণ থেকে সুযোগ আসে দক্ষিণ কোরিয়ার সামনে। কিন্তু প্রতিপক্ষের রক্ষণে গিয়ে বারবারই তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ফরোয়ার্ডরা। বেশিরভাগ সময় শটই নিতে পারছিলেন না তারা।
মারিও গোমেজ ও টমাস মুলার বদলি নামার পর কিছুটা বাড়ে আক্রমণে শক্তি বাড়ে জার্মানির। কিন্তু গতি বা ধার কোনোটাই বাড়েনি।
৬৮তম মিনিটে কিমিখের ক্রস খুঁজে পায় গোমেজকে। তবে গোলরক্ষক বরাবর হেড নিয়ে সুযোগ হাতছাড়া করেন অভিজ্ঞ এই ফরোয়ার্ড।
জার্মানির একের পর এক আক্রমণ ব্যর্থ হয় ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায়। প্রতি আক্রমণগুলো কাজে লাগাতে পারছিল না দক্ষিণ কোরিয়া।
৮৭তম মিনিটে মেসুত ওজিলের দারুণ ক্রস খুঁজে পায় হুমেলসকে। খুব কাছে থেকেও এই ডিফেন্ডার হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে জার্মানির জালে বল পাঠান কিম ইয়ং ওন। শুরুতে অফ সাইডের পতাকা উঠেছিল। তবে ভিডিও রিপ্লে দেখে গোলের নির্দেশ দেন রেফারি। গোলমুখে দাঁড়িয়ে থাকা ওন বল পেয়েছিলেন টনি ক্রুসের টোকায়। তাই দক্ষিণ কোরিয়া ডিফেন্ডারের গোল টিকে যায়।
গোলের জন্য মরিয়া জার্মানির জালে যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বল পাঠান সন হিয়ুং মিন। গোলের জন্য পোস্ট থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার ডি-বক্সের কাছে চলে গিয়েছিলেন নয়ার। প্রায় ৮০ গজ দূর থেকে বল পাঠান জু সে জং। ছুটে গিয়ে খালি জালে বল পাঠানোর সহজ কাজটা সারেন সন হিয়ুংমিন।
১৯৩৮ সালের প্রথমবারের মতো প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয় জার্মানি। তবে সেই আসর ছিল নক আউট ভিত্তিক; ছিল না গ্রুপ পর্ব।
এশিয়ার প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে জয় পাওয়া দক্ষিণ কোরিয়া বিদায় নিল মাথা উঁচু করে ৩ পয়েন্ট নিয়ে। গ্রুপের তলানিতে থেকে ফিরছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
এফ | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | পক্ষে গোল | বিপক্ষে গোল | গোল পার্থক্য | পয়েন্ট | |
সুইডেন | ৩ | ২ | ০ | ১ | ৫ | ২ | ৩ | ৬ | |
মেক্সিকো | ৩ | ২ | ০ | ১ | ৩ | ৪ | -১ | ৬ | |
দক্ষিণ কোরিয়া | ৩ | ১ | ০ | ২ | ৩ | ৩ | ০ | ৩ | |
জার্মানি | ৩ | ১ | ০ | ২ | ২ | ৪ | -২ | ৩ |