রিওতে বোল্টের ইতিহাস

দৌঁড়ালেন সবাইকে ছাড়িয়ে, গড়লেন ইতিহাস। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে টানা তৃতীয় অলিম্পিকে সোনা জিতে নিলেন উসাইন বোল্ট।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2016, 01:30 AM
Updated : 16 Oct 2016, 11:13 AM

রিও অলিম্পিকের নবম দিনে সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাতটা ২৫ মিনিটে আসরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ইভেন্টে জ্যামাইকার এই গতি দানবের বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিন গ্যাটলিন।

অলিম্পিকের ট্র্যাকে ব্যক্তিগত ইভেন্টে এর আগে টানা তিনটি সোনা জিততে পারেনি কোনো অ্যাথলেট।

বোল্ট দৌড় শেষ করেন ৯.৮১ সেকেন্ডে। আবারও তার পেছনে থাকতে হলো লন্ডনে গত আসরে ব্রোঞ্জ জেতা গ্যাটলিনকে (৯.৮৯ সেকেন্ড)।

৯.৯১ সেকেন্ড সময় নিয়ে তৃতীয় হয়েছেন কানাডার অঁদ্রে দে গ্রাস। বেইজিংয়ে গত বছরের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ফিনিশিং অর্ডার এটাই ছিল।

১০০ মিটারে তিন বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অবশ্য তার বার্লিনে ২০০৯ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে গড়া বিশ্ব রেকর্ড ৯.৫৮ সেকেন্ডের ধারে কাছে আসতে পারেনি। তবে বোল্ট নিজের পুরো ফর্মে না থাকলেও তাকে হারানো প্রায় অসাধ্যই।

সেমি-ফাইনালে অনায়াসে দৌড়ে ৯.৮৬ সময় নিয়ে বোল্ট ফাইনালে ওঠায় বোঝা গিয়েছিল ফিটনেস নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ফাইনালে ধীর শুরুর পর ৭০ মিটার পর্যন্ত পিছিয়ে ছিলেন। তবে বড় বড় পদক্ষেপে শেষ দিকে ২০০৪ সালে এথেন্স অলিম্পিকে সোনাজয়ী গ্যাটলিনকে ছাড়িয়ে যান বিশ্বের দ্রুততম মানব।

সেই ১২ বছর আগে জেতা অলিম্পিক খেতাবটা পুনরুদ্ধার করার আর সুযোগ পাচ্ছেন না ৩৪ বছর বয়সী গ্যাটলিন। ডোপিংয়ের অভিযোগ দুইবার নিষিদ্ধ থাকার পর ফিরে এসে এই বয়সেও বোল্টকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য কৃতিত্ব প্রাপ্য তার; তা রিওর দর্শকরা যতই তাকে দুয়ো দিক।

অন্যদিকে বোল্ট মাঠে আসার পরই স্টেডিয়াম জুড়ে দর্শকদের মুখে কেবল তার নাম। গ্যাটলিন জিতলে ব্রাজিলের দর্শকদের আচরণে বিব্রতকর অবস্থাতেই পড়তে হতো আয়োজকদের।

২০০৮ সালে বেইজিং ও ২০১২ সালে লন্ডনে ১০০, ২০০ ও ৪*১০০ মিটার রিলেতে জয়ী বোল্টের অলিম্পিক সোনা হলো ৭টি। এই আসরে ২০০ আর ৪*১০০ মিটারের সোনা জিতলে হবে ঐতিহাসিক ‘ট্রিপল ট্রিপল’।

২০০৮ সালের অলিম্পিকে বিশ্বকে মোহিত করার পর অলিম্পিক আর অ্যাথলেটিক্স বিশ্ব চ্যাম্পিয়শিপের মতো বড় আসরে একবারই কেবল তার তিনটি ইভেন্টের কোনো একটিতে সোনা হাতছাড়া হয়েছে। ২০১১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার দেগুতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়শিপে ডিসকোয়ালিফাইড হয়েছিলেন। এছাড়া গত চারটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তার ১১টি ইভেন্টের মধ্যে ১১টিতেই সেরা বোল্ট।

রিও দে জেনেইরোর এই আসর হতে যাচ্ছে ২৯ বছর বয়সী বোল্টের শেষ অলিম্পিক। গত ফেব্রুয়ারিতে জানিয়েছিলেন, ২০১৭ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পর অবসর নেবেন তিনি। এর আগে রিওতে বাকি দুটো ইভেন্টে সোনা জিতে বোল্টের ইতিহাস গড়ার চেষ্টায় চোখ থাকবে পুরো বিশ্ববাসীর।

স্থানীয় সময় আগামী বৃহস্পতিবার হবে ২০০ মিটার দৌড়ের ফাইনাল।

গতি কমছে গতিদানবের:

২০০৮

বেইজিং অলিম্পিক

৯.৬৯ (বিশ্ব রেকর্ড)

২০০৯

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, বার্লিন

৯.৫৮ (বিশ্ব রেকর্ড)

২০১২

লন্ডন অলিম্পিক

৯.৬৩ (অলিম্পিক রেকর্ড)

২০১৩

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, মস্কো

৯.৭৭

২০১৫

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, বেইজিং

৯.৭৯

২০১৬

রিও দে জেনেইরো অলিম্পিক

৯.৮১