বিশ্বকে প্রস্তুত থাকতে বললেন বোল্ট

বেইজিং, লন্ডন ও রিও দে জেনেইরো - টানা তিন অলিম্পিকেই মর্যাদার ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সোনা জেতা উসাইন বোল্টকে সর্বকালের সেরা বলাই যায়। রিও অলিম্পিকে আরও দুটো সোনার পদক জিতে ‘অমরত্ব’ পাওয়ার লক্ষ্যের দিকেই ছুটছেন জ্যামাইকার এই গতিদানব। আর সেটা দেখার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন বিশ্ববাসীকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2016, 04:53 AM
Updated : 15 August 2016, 03:47 PM

রিও গেমসের দশম দিনে সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাতটা ২৫ মিনিটে আসরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ইভেন্ট ১০০ মিটার স্প্রিন্ট জিতে ইতিহাস গড়ে বোল্ট জানালেন মনের ভাবনা।

“কেউ কেউ বলে আমি অমর হতে পারি। আরও দুটি পদক জেতা বাকি। এরপর আমি অবসরে যেতে পারি, অমর হয়ে।”

অলিম্পিকের ট্র্যাকে ব্যক্তিগত ইভেন্টে এর আগে টানা তিনটি সোনা জিততে পারেনি কোনো অ্যাথলেট। ২০০৮ সালে বেইজিং ও ২০১২ সালে লন্ডনে ১০০, ২০০ ও ৪*১০০ মিটার রিলেতে জয়ী বোল্টের অলিম্পিক সোনা হলো ৭টি। এই আসরে ২০০ আর ৪*১০০ মিটারের সোনা জিতলে হবে ঐতিহাসিক ‘ট্রিপল ট্রিপল’।

রিও দে জেনেইরোর এই আসর হতে যাচ্ছে ২৯ বছর বয়সী বোল্টের শেষ অলিম্পিক। গত ফেব্রুয়ারিতে জানিয়েছিলেন, ২০১৭ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পর অবসর নেবেন তিনি। এর আগে রিওতে বাকি দুটো ইভেন্টে সোনা জিতে বোল্টের ইতিহাস গড়ার চেষ্টায় চোখ থাকবে পুরো বিশ্ববাসীর। স্থানীয় সময় আগামী বৃহস্পতিবার হবে ২০০ মিটার দৌড়ের ফাইনাল।
বোল্ট বাকি দুই স্প্রিন্টের জন্য বিশ্ববাসীকে প্রস্তুত থাকতে বললেন।

“সাথেই থাকুন, আরও দুটি বাকি।”

পরে সংবাদ সম্মেলনে বোল্ট জানালেন বাকি দুটি সোনা জিতে ‘ট্রিপল ট্রিপল’ করতে কতটা মরিয়া তিনি।

“আমি এখানে এসেছি তিনটা সোনার পদক জিততে। আমি এসেছি প্রমাণ করতে যে আমি সেরাদের একজন। আমি নিজেকে অন্য সবার চেয়ে আলাদা করতে চাই এবং এই অলিম্পিক ও এই জায়গাতেই আমি এটা করতে চাই।”

১০০ মিটারে তিন বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অবশ্য তার বার্লিনে ২০০৯ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে গড়া বিশ্ব রেকর্ড ৯.৫৮ সেকেন্ডের ধারে কাছে আসতে পারেনি। তবে রেকর্ড টানা তিনটি সোনা জিতেই খুশি তিনি।

“আরও দ্রুত দৌড়ানোর আশা করেছিলাম কিন্তু জিততে পারায় আমি খুশি। পারফর্ম করার জন্যই এখানে এসেছি। যেটা আমার করার ছিল, আমি সেটাই করেছি।”

“আমি পুরোপুরি নিঁখুত ছিলাম না কিন্তু আমি এটা করেছি। আমি যা অর্জন করেছি তা নিয়ে আমি অনেক গর্বিত। বিশ্বের আর কেউ এটা করতে পারেনি, এমনকি করার চেষ্টাও করতে পারেনি।”

সেমি-ফাইনালে অনায়াসে দৌড়ে ৯.৮৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে বোল্ট ফাইনালে ওঠায় বোঝা গিয়েছিল ফিটনেস নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ফাইনালে শুরুতে অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন। তবে বড় বড় পদক্ষেপে শেষ দিকে এসে ২০০৪ সালে এথেন্স অলিম্পিকে সোনাজয়ী গ্যাটলিনকে ছাড়িয়ে যান জ্যামাইকার এই দ্রুততম মানব।

“সে সব সময়ই খুব ভালো শুরু করে। আমারটা অত ভালো হয়নি, কিন্তু আমি কেবল ভেবেছি, আতংকিত হওয়ার দরকার নেই।”

অলিম্পিক স্টেডিয়ামের গ্যালারি ‘বোল্ট, বোল্ট, বোল্ট’ চিৎকারে মুখরিত ছিল। ব্রাজিলে নিজের এত ভক্ত দেখে বিস্মিতও হয়েছেন এই কিংবদন্তি অ্যাথলেট। তবে রুপা জেতা গ্যাটলিনকে দর্শকদের দুয়ো দেওয়াটা মেনে নিতে পারেননি।

“আমি অবাক হয়েছিলাম। এই প্রথম আমি একটি স্টেডিয়ামে যেখানে দর্শকরা কাউকে দুয়ো দিয়েছে। এটা ভয়ংকর।”