বিশ্বকাপ বাছাই
প্রথমবার জাতীয় দলে এসে নিয়মিত হওয়ার প্রত্যয় জানালেন তরুণ এই রাইট ব্যাক।
Published : 18 Mar 2025, 05:47 PM
পাঁচ বছর আগে করোনাভাইরাসের কঠিন সময়ে ওয়েজলির বয়স তখন মাত্র ১৬। অল্প বয়সেই ‘পরিবারের প্রয়োজনে’ আয়-রোজগারের পথে হাঁটেন কিশোর ওয়েজলি। পার্কিং লটে সাহায্য করতেন তার মাকে, পরিষ্কার করে দিতেন ক্রেতাদের গাড়ি। ফুটবল ক্যারিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তায়ও ছিলেন। সেই ছেলেটি স্বপ্ন সত্যি করে জায়গা করে নিয়েছেন ব্রাজিল দলে। উন্মুখ হয়ে আছেন কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলার সুযোগের জন্য।
২১ বছর বয়সী ওয়েজলি ব্রাজিলের বাইরে খুব পরিচিত কেউ নন। তবে ২০২৪ সালে দেশের সেরা রাইট-ব্যাক নির্বাচিত হওয়ার পর ফ্লামেঙ্গোর এই তরুণকে নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে।
ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন টিভির সঙ্গে আলাপচারিতায় ওয়েজলি ফিরে গেলেন দরিভাল জুনিয়রের দলে প্রথম ডাক পাওয়ার সময়টায়।
“স্বীকার করছি, আমি খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম। ঘুম থেকে ওঠার পর এবং যখন তৈরি হচ্ছিলাম, মাথার ভেতরে যেন একটা সিনেমা চলছিল আর আমি নিজেকে বারবার বলছিলাম- এটা কি সত্যি? এটা একটা স্বপ্ন যেটা আমি উপলব্ধি করতে পারছি এবং আমি খুব করে এই হলুদ জার্সি পরতে চাই, যেটা সব খেলোয়াড়েরই স্বপ্ন।”
“মনে আছে সেই সময়ের কথা, একটাই স্বপ্ন নিয়ে আমি এলাকা ছেড়েছিলাম। দেশের জার্সি পরাই একজন খেলোয়াড়ের চূড়ান্ত লক্ষ্য। এই সবকিছু নিয়ে ভাবছিলাম এবং নিজেকে বলেছিলাম, আমি এতদূর এসেছি, এখন সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে অবস্থান ধরে রাখা। এগুলোই আমার মাথায় কাজ করছিল, মাথায় ঘুরছিল আমার পুরো (জীবনের) গল্প। এখন যেহেতু আমি এখানে আসতে পেরেছি, থেকে যাওয়ার জন্য আমি সবকিছু করব।”
অনুশীলনের আগে রেয়াল মাদ্রিদ তারকা রদ্রিগোর পাশে বসেছিলেন ওয়েজলি। সঙ্গে ছিলেন ফ্লামেঙ্গো সতীর্থ জেহসন, মাত্র ৬ বছরের বড় হলেও যাকে তিনি দেখেন বাবার মতো। ছিলেন অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা আরেক ডিফেন্ডার লিও ওরচিজ। ওয়েজলি এমন কিছুই ভেবেছিলেন নিজের জন্য।
“আমি জীবনের দারুণ এক সময় কাটাচ্ছি। বলব না, এটা আমি কল্পনা করিনি। এর জন্যই খেটেছি, তাই কল্পনা করেছি। ফ্লামেঙ্গো সমর্থকদের পাশাপাশি এমনকি অন্য দলের সমর্থকরাও আমার জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার দাবি তুলছিল। আমি ভাষা হারিয়ে ফেলছিলাম, এসব দেখে আমি ভাবছিলাম, সত্যিই কি এমনটা ঘটবে? এটা আমার মাথা ঢুকে গিয়েছিল। আমি সেভাবেই পরিশ্রম করছিলাম যেন ডাক আসে, শেষ পর্যন্ত সেই ডাক এসেছে।”
দলে এলেও শুরুর একাদশে সুযোগ পাওয়া সহজ হবে না তার জন্য। আট ডিফেন্ডারের কঠিন লড়াইয়ে জিতে নিজের জায়গা করে নিতে হবে। খোলা মন নিয়েই নিজের কাজটা করে যেতে চান ওয়েজলি।
“আশা করি, ফ্লামেঙ্গোতে যেভাবে খেলি সেই সামর্থ্য এখানেও দেখাতে পারব। আমি জানি, এটা ভিন্ন খেলা, এটা জাতীয় দল। এখানে অনেক তারকা আছেন। আমি দরিভালের পরিকল্পনা অনুসরণ করব। তিনি যেটা করতে বলবেন, আমি সেটাই করব।”
“এই ম্যাচগুলো খেলতে যারা এখানে আছে, সবারই এটা প্রাপ্য। এটা কোনো বোঝা নয়, যারা এখানে আছে তারা এমন বড় ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত। এখনও কেন আমি খেলার সুযোগ পাইনি জানি না, দেখা যাক।”
বাংলাদেশ সময় আগামী শুক্রবার ভোরে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। পাঁচ দিন পর তারা খেলবে আর্জেন্টিনার মাঠে।