ব্যালন দ’র
তবুও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রেয়াল মাদ্রিদের এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
Published : 29 Oct 2024, 05:13 PM
এবারের ব্যালন দ’র জয়ের সম্ভাবনায় সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রদ্রির কাছে হেরে হতাশা সঙ্গী হয় তার। রেয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান এই তারকা মনে করেন, বর্ণবাদের প্রতিবাদ করায় বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কারটি পাননি তিনি। তবে বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এই ফরোয়ার্ড।
প্যারিসে সোমবার রাতে জমকালো অনুষ্ঠানে দেওয়া হয় ফরাসি সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’ এর পুরস্কার, ব্যালন দ’র ২০২৪। ভিনিসিউসকে পেছনে ফেলে বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পান ২৮ বছর বয়সী স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রি।
সোমবার ভোটাভুটির ভিত্তিতে ব্যালন দ’রের ১২ জনের একটি তালিকা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে সবার ওপরে দেখা যায় ভিনিসিউসের নাম। কিন্তু খানিক পরই ছড়িয়ে পড়ে বিস্ফোরক এক খবর। সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএন জানায়, ব্যালন দ’র অনুষ্ঠানের জন্য প্যারিসে যাচ্ছেন না রেয়াল মাদ্রিদের কেউ, কারণ ক্লাবটি বুঝতে পেরেছে, ভিনিসিউস নয়, বর্ষসেরার পুরস্কারটি পাচ্ছেন রদ্রি। শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্যি হয়।
ব্যালন দ’র লড়াইয়ে দ্বিতীয় হয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজের হতাশা প্রকাশ করে ভিনিসিউস লেখেন, “যদি আমার এটা (বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ) করতে হয়, আমি দশবার করব। তারা প্রস্তুত নয়।”
ভিনিসিউস তার এই পোস্ট দিয়ে কী বোঝাতে চেয়েছেন জানতে চাইলে তার ম্যানেজমেন্ট স্টাফরা রয়টার্সকে বলেন, এখানে ভিনিসিউস বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তার লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। তারা বিশ্বাস করেন যে, এটাই তার ব্যালন দ’র না জেতার কারণ। তারা আরও বলেন, “ফুটবল বিশ্ব এমন খেলোয়াড়কে গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয় যিনি সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়াই করেন।”
স্পেনে প্রায়ই বর্ণবাদী আচরণের শিকার হতে দেখা যায় ভিনিসিউসকে। এর জন্য কয়েকজনকে শাস্তিও দিয়েছে স্পেনের আদালত। বৈষম্যমূলক এই আচরণ নিয়ে সোচ্চার ভিনিসিউস।
ভিনিসিউস ব্যালন দ’র না জিতলেও গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগার শিরোপা ঘরে তোলা রেয়াল জেতে বর্ষসেরা পুরুষ ক্লাবের পুরস্কার। কার্লো আনচেলত্তি নির্বাচিত হন বর্ষসেরা পুরুষ কোচ।
ভিনিসিউস ব্যালন দ’র না জেতায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান তার ক্লাব সতীর্থ এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ এই মিডফিল্ডার লেখেন, “ফুটবল রাজনীতি (পাশে ক্রস চিহ্ন)। আমার ভাই, তুমি বিশ্বের সেরা এবং কোনো পুরস্কারই এটার ব্যতিক্রম বলতে পারে না। ভালোবাসি আমার ভাই।”
রেয়ালের আরও কয়েকজন ভিনিসিউসের ছবি পোস্ট করে লেখেন, “তুমিই সেরা।”
ভিনিসিউসের ব্যালন দ’র না জেতা যেন বিশ্বাসই হচ্ছেন ব্রাজিলের নারী ফুটবলের কিংবদন্তি মার্তার। ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিও দিয়ে নিজের ভাবনা তুলে ধরেন তিনি।
“আমি সারা বছর অপেক্ষা করেছি কখন ভিনি জুনিয়রকে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে প্রাপ্য স্বীকৃতি দেওয়া হবে। আর এখন তারা আমাকে বলতে আসে যে ব্যালন দ’র তার জন্য নয়?”
গত মৌসুমে রেয়ালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ে বড় অবদান রাখেন ভিনিসিউস। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে দলের ২-০ ব্যবধানের জয়ে একটিসহ আসরে তিনি করেন ৬ গোল। নির্বাচিত হন আসরের সেরা খেলোয়াড়।
২০২৩-২৪ মৌসুমে লা লিগায় তিনি করেন ১৫ গোল। এছাড়া স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে করেন হ্যাটট্রিক।