স্প্যানিশ ফুটবল
ফরোয়ার্ডরা চারটি গোল করেছেন, তবে বার্সেলোনার ‘হাই লাইন’ রক্ষণ কৌশলে বারবার ফাঁদে পড়েছে রেয়াল মাদ্রিদ।
Published : 27 Oct 2024, 11:33 AM
দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ফরোয়ার্ডরা আরও একবার জ্বলে উঠেছেন দারুণভাবে। তবে চূড়ান্ত ফলাফলেই যে ম্যাচের সবকিছু ফুটে ওঠে না, কোচের চেয়ে ভালো তা আর কে জানে! রেয়াল মাদ্রিদের জালে চার গোল দেওয়ার পর তাই রক্ষণভাগের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের তৃপ্তি আলাদা করেই ধরা দিল বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিকের কথায়।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে শনিবার বার্সেলোনার ত্রিফলায় বিদ্ধ হয়েছে রেয়াল। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া গোল করেছেন রবের্ত লেভানদোভস্কি, একটি করে গোল করে জয়কে পূর্ণতা দিয়েছেন লামিনে ইয়ামাল ও রাফিনিয়া।
চলতি মৌসুমে লা লিগায় ১১ ম্যাচেই ১৪ গোল হয়ে গেল লেভানদোভস্কির। গোলে সহায়তা তিনি করেছেন দুটি। রাফিনিয়ার গোল ও অ্যাসিস্ট সমান ৬টি করে। ইয়ামালের গোল ৫টি, সহায়তা ৬টিতে।
অন্য কোনো দলের কোনো ফুটবলার এখনও পর্যন্ত গোল করা ও সহায়তা মিলিয়ে দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেনি। বোঝা যাচ্ছে, বার্সেলোনার এই ত্রিফলা এবার কতটা ভয়ঙ্কর।
কিন্তু গোটা ম্যাচে আলাদা করে নজর কেড়েছে বার্সেলোনা ‘হাই লাইন’ রক্ষণভাগ। গোলশূন্য প্রথমার্ধে বারবার রেয়ালের আক্রমণভাগের ফুটবলারদের অফসাইডের ফাঁদে ফেলেছেন তারা। দ্বিতীয়ার্ধেও বারবার দেখা গেছে একই চিত্র। গোটা ম্যাচে ১২টি অফসাইড হয়েছে রেয়ালের। এমবাপে একাই অফসাইড হয়েছেন আটবার, এর মধ্যে প্রথমার্ধেই ছয় বার!
রক্ষণভাগের সেই কৌশল নিখুঁতভাবে কাজে লাগাতে পারায় ম্যাচের পর সন্তুষ্টি জানালেন বার্সেলোনা কোচ। প্রথমার্ধে গোলবিহীন থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে কৌশলে একটু বদল করে সাফল্য পাওয়ার কথাও জানালেন তিনি।
“রক্ষণভাগের প্রচেষ্টা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাই লাইন রক্ষণভাগ নিয়ে কীভাবে খেলব এবং কীভাবে বল নিয়ে চাপ গড়ে তুলব, সেটার অনেক অনুশীলন করেছি আমরা। রেয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে কোনো জায়গায় ছাড় না দেওয়াটাও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অবিশ্বাস্য সব ফুটবলার তাদের আছে।”
“বল পায়ে এবং বল ছাড়া আমরা ভালোভাবে চাপ তৈরি করেছি। বলের নিয়ন্ত্রণ আরও বেশি ছিল আমাদের কাছে, এজন্যই খেলাটা বদলে গেছে।”
হান্সি ফ্লিকের ছোঁয়ায় মৌসুমের শুরুটা অসাধারণ করেছে বার্সেলোনা। তরুণ দলকে প্রায় অপ্রতিরোধ্য এক শক্তিতে পরিণত করেছেন তিনি। জার্মান এই কোচের তত্ত্বাবধানে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মৌসুমের প্রথম ১৪ ম্যাচের ১২টিতেই জিতেছে কাতালানরা।
৫৯ বছর বয়সী কোচ বললেন, বার্সেলোনায় সময়টা দারুণ উপভোগ করছেন তিনি।
“সবসময় বলেছি, বার্সেলোনায় কাজ করে এবং বার্সেলোনায় থাকতে পেরে আমি উচ্ছ্বসিত। সবকিছুই দারুণ এখানে, আমি খুবই খুশি…। আমার জীবনের নতুন অধ্যায় চলছে এখানে এবং খুবই উপভোগ করছি।”
“দুর্দান্ত একটি ম্যাচ খেলেছি আমরা এবং আমি গর্বিত।”
দল এই মুহূর্তে যেভাবে খেলছে, সন্তুষ্টির সব উপকরণই পাচ্ছেন ফ্লিক। লা লিগার শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযানে এখনই তারা এগিয়ে গেছে ৬ পয়েন্টে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ও পয়েন্ট তালিকায় দুইয়ে থাকা রেয়ালকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে দল আরও দুর্বার হয়ে উঠবে বলে মনে করেন বার্সেলোনা কোচ।
“আমার মনে হয়, আমরা ভালোই করছি। নিজের পরিকল্পনায় আমরা অটল থাকতে পারছি, এই মুহূর্তে মসৃণভাবে এগোচ্ছি এবং এভাবেই সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”
“এই জয় ছেলেদের আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। ড্রেসিং রুমে ছেলেদের উদযাপন দেখেও ভালো লেগেছে। এখন রিকভারির জন্য একটি দিন থাকছে, তারপর ছেলেদের দুই দিনের ছুটি দেব। এরপর আবার আগামী সপ্তাহের এস্পানিওলের ম্যাচের দিকে মনোযোগ দেব আমরা।”