নাটকীয় জয়ে শীর্ষে আর্সেনাল

ম্যানচেস্টার সিটিকে পেছনে ফেলে লিগ টেবিলে শীর্ষে ফিরেছে মিকেল আর্তেতার দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2023, 02:36 PM
Updated : 18 Feb 2023, 02:36 PM

দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির শট নিলেন জর্জিনিয়ো। লাফিয়ে ওঠা এমিলিয়ানো মার্তিনেসকে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরল বল। কিন্তু পোস্টে ঘা খেয়ে মার্তিনেসের মাথায় লেগেই জড়াল জালে। এরপর গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি পেলেন জালের দেখা। রোমাঞ্চকর জয়ের উচ্ছ্বাসে মেতে উঠল আর্সেনাল।

ভিলা পার্কে শনিবার অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে দুইবার পিছিয়ে পড়েও ৪-২ গোলে জিতেছে আর্সেনাল। অ্যাস্টন ভিলার দুই গোলদাতা আর্থার ওয়াটকিন্স ও ফিলিপে কৌতিনিয়ো। মার্তিনেসের আত্মঘাতী গোল এবং মার্তিনেল্লির ব্যবধান গড়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত আর্সেনালকে ম্যাচে রাখে বুকায়ো সাকা ও আলেকসান্দার জিনচেঙ্কোর গোল।

আগের ম্যাচে আর্সেনালকে হারিয়ে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে এগিয়ে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে উঠেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। তাদেরকে ৩ পয়েন্টে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করল আর্সেনাল।

নিজেদের মাঠে শুরু থেকে উজ্জীবিত ফুটবল খেলতে থাকে অ্যাস্টন ভিলা। পঞ্চম মিনিটে গোলও পেয়ে যায় তারা। এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ম্যাথু স্টুয়ার্ট ক্যাসের বাড়ানো নিখুঁত ক্রস প্রথম প্রচেষ্টায় না পারলেও পরে ঠিকই নিয়ন্ত্রণ নেন ওয়াটকিন্স। ঠাণ্ডা মাথায় গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা উইলিয়াম সালিবাকে পাশ কাটিয়ে কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড। চার ম্যাচে এটি ওয়াটকিন্সের চতুর্থ গোল।

আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া আর্সেনাল সমতায় ফেরে ষোড়শ মিনিটে। বেন হোয়াইটের বাড়ানো বল টাইরন মিঙ্গস ক্লিয়ার করেছিলেন বটে, কিন্তু তার দুর্বল হেডে বল চলে যায় বক্সেই থাকা সাকার কাছে। বাঁ পায়ের জোরাল ভলিতে জাল খুঁজে নেন এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড।

রক্ষণের ঢিলেমিতে বিরতির আগেই উবে যায় আর্সেনালের স্বস্তি। ৩১তম মিনিটে আলেক্স মোরেনোর আড়াআড়ি ক্রস এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া ডামি করার পর প্রথম ছোঁয়ায় বলের নিয়ন্ত্রণ নেন কৌতিনিয়ো। এরপর নিচু শটে অ্যাস্টন ভিলাকে এগিয়ে নেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে উত্তাপ ছড়ায় দুই পক্ষের মধ্যে। সাকা-কৌতিনিয়োরা ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন।

দ্বিতীয়ার্ধেও বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে আর্সেনাল শাণাতে থাকে আক্রমণ, যদিও সেগুলো হচ্ছিল না তেমন একটা ধারাল। ৫৬তম মিনিটে বাইলাইনের ঠিক ওপর থেকে হোয়াইটের বাড়ানো ক্রসে এডি এনকেটিয়ার হেড ওপরের জাল কাঁপায়।

পাঁচ মিনিট পর সমতায় ফেরে আর্সেনাল। ছোট কর্নারের পর মার্টিন ওডেগারের পা ঘুরে বল যায় জিনচেঙ্কোর পায়ে। বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির শট নেন ইউক্রেইনের এই মিডফিল্ডার। বিশ্বকাপ জয়ী গোলরক্ষক মার্তিনেসকে বোকা বানিয়ে কাছের পোস্ট ঘেঁষে বল লুটোপুটি খায় জালে।

৬৩তম মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন এনকেটিয়া। চিপও করেছিলেন তিনি, কিন্তু তা ঠিকঠাক না হওয়ায় যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।

সুর্বণ সুযোগ আর্সেনালের দরজায় কড়া নেড়েছিল ৭৭তম মিনিটে। প্রতিপক্ষের ভুলে পাওয়া বল এনকেটিয়া বাড়িয়েছিলেন বক্সে ফাঁকায় থাকা ওডেগারকে। তাড়াহুড়ো করে পোস্টের বাইরে শট নেন তিনি। হতাশায় মুষড়ে পড়ে আর্সেনালের ডাগআউট।

৮২তম মিনিটে লেয়ন বেইলির শট গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে পোস্টে লেগে ফেরে। বড় বাঁচা বেঁচে যায় আর্সেনাল। কিন্তু নাটকীয়তার তখনও ঢের বাকি।

দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে মার্তিনেসের ওই আত্মঘাতী গোলে ঘুরে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। এরপর শেষের বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে মার্তিনেল্লি দলের জয় নিশ্চিত করেন।

কর্নারের সুযোগটি কাজে লাগাতে নিজের পোস্ট ছেড়ে আর্সেনালের বক্সে চলে এসেছিলেন মার্তিনেস। কর্নার ফেরানোর পর পাল্টা আক্রমণে ফাঁকা পোস্ট পেয়ে যান ফাবিও ভেইরা। বেশ খানিকটা এগিয়ে তিনি বল বাড়ান মার্তিনেল্লিকে। অনায়াসে জাল খুঁজে নেন তিনি। পয়েন্ট খোয়ানোর শঙ্কার মেঘ সরিয়ে জয়ের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে ‘গানার’ খ্যাত দলটি।

২৩ ম্যাচে ১৭ জয় ও ৩ ড্রয়ে আর্সেনালের পয়েন্ট হলো ৫৪। সমান ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থাকা ম্যানচেস্টার সিটি দিনের পরের ম্যাচে নটিংহ্যাম ফরেস্টের মুখোমুখি হবে।