স্প্যানিশ ফুটবল
চলতি মৌসুমে অসাধারণ ফর্মে আছেন বার্সেলোনার ফরোয়ার্ড লাইনের এই তিন ফুটবলার, তাদের পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত কোচ হান্সি ফ্লিক।
Published : 07 Oct 2024, 01:23 PM
বয়স পেরিয়ে গেছে ৩৬। কিন্তু রবের্ত লেভানদোভস্কি ফিরে গেছেন যেন ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছেন তিনি। দুর্দান্ত ছন্দে আছেন রাফিনিয়া। লামিনে ইয়ামাল তো ম্যাচের পর ম্যাচ আলোকিত করে চলেছেন নিজের প্রতিভার ছটায়। সব মিলিয়ে বার্সেলোনার আক্রমণভাগের ধার ও ধারাবাহিকতায় উচ্ছ্বসিত কোচ হান্সি ফ্লিক।
লেভানদোভস্কির প্রথমার্ধের হ্যাটট্রিকে লা লিগায় রোববার আলাভেসকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শীর্ষস্থান মজবুত রাখে বার্সেলোনা।
লা লিগায় এবার ১০ গোল হয়ে গেল লেভানদোভস্কির। আসরে ছয় গোলের বেশি করতে পারেননি আর কোনো ফুটবলার।
১০ গোল করার পাশাপাশি আরও দুটি গোলে সহায়তা করেছেন তিনি। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে ১২ গোলের সম্পৃক্ততা চলতি মৌসুমে নেই আর কারও।
রাফিনিয়া গোল করেছেন পাঁচটি, সহায়তা করেছেন চারটিতে। ইয়ামাল জালের দেখা পেয়েছেন চারবার, সহায়তা করেছেন পাঁচ গোলে।
লা লিগার ৯ ম্যাচে ২৮ গোল হয়ে গেছে বার্সেলোনার। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই মৌসুমে ১১ ম্যাচের পাঁচটিতেই তিন বা এর বেশি গোল করেছে তারা।
এসব পরিসংখ্যানেই ফুটে উঠছে, বার্সেলোনার আক্রমণভাগ এখন কতটা ভয়ঙ্কর। কোচ ফ্লিক জানালেন, আক্রমণভাগের এই ত্রয়ীর মধ্যে বোঝাপড়া আরও জমিয়ে তুলতে চেষ্টা চলছে তার দিক থেকে।
“অবশ্যই আমরা কাজ করে চলেছি (তিনজনের রসায়ন আরও জমিয়ে তুলতে)। প্রতিটি অনুশীলন সেশনে, প্রতিটি বৈঠকে ট্যাকটিক্যাল ব্যাপারগুলো ওদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, পজিশনের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। তারা দুর্দান্ত পারফর্ম করে চলেছেন এবং তারা অবিশ্বাস্য, তাদের সক্রিয়তা দলকে সহায়তা করছে।”
“দিনশেষে, আমরা যখন এত গোল করতে পারছি, দলের জন্য এটা দারুণ এবং পরের ম্যাচের আগে দলকে তা আরও আত্মবিশ্বাস জোগায়। ফুটবলটা আমরা এভাবেই খেলতে চাই।”
তিনজনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সী লেভানদোভস্কিই এখন সবচেয়ে উজ্জ্বল। এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১১ ম্যাচে ১২ গোল করে ফেলেছেন তিনি এর মধ্যেই। নিজের কাজে এই ফরোয়ার্ডকেই বিশ্বের সেরা মনে করেন কোচ ফ্লিক।
“লেভিকে (লেভানদোভস্কি) সবাই সহায়তা করে এবং বক্সের ভেতর নিজের কাজটা সে জানে। আমার চোখে, গোলমুখে সে বিশ্বের সেরা। বায়ার্ন মিউনিখে তাকে যেভাবে দেখেছি, এখানেও তেমনই আছে।”
“এত লম্বা সময় ধরে এত ভালো খেলে চলেছে সে, এত গোল করেছে, দারুণ ব্যাপার। তাকে নিয়ে আমি খুবই খুশি। দেখতেই পারছেন, সে এখন শতভাগ ফিট আছে এবং সতীর্থদের কাছ থেকে সবরকম সহায়তা সে পাচ্ছে, সবার প্রশংসাই করতে হবে আমাকে, দলের জন্য এসব খুব ভালো।”
ফ্লিকের কোচিংয়ে শুরুতেই যেভাবে জ্বলে উঠেছে বার্সেলোনা, অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে বায়ার্ন মিউনিখের কথা। ২০১৯-২০ মৌসুমের মাঝপথে ভারপ্রাপ্ত কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বায়ার্নকে বুন্ডেসলিগা, জার্মান কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ‘ট্রেবল’ জিতিয়েছিলেন তিনি।
তবে সেই দলের সঙ্গে এই দলের তুলনায় একদমই যেতে চান না ফ্লিক। দলের পারফরম্যান্সে খুশি হলেও উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে চান না তিনি এখনই।
“না, না… এই তুলনা আমার পছন্দ নয়। এই দল পুরোই আলাদা। প্রেক্ষাপট-পরিস্থিতি আলাদা। এই মুহূর্তে সব ভালো হচ্ছে এবং এই দলের কোচ হিসেবে আমি খুশি। তবে এটাও জানি, ফুটবলে খুব দ্রুত সব বদলে যেতে পারে।”
“আমাদের যা আছে, সেসবের মূল্যায়ন করি আমি। পরিকল্পনা কার্যকর হলে দেখতে ভালো লাগে। এই দল যা করছে, তা দুর্দান্ত। ড্রেসিং রুমের আবহ দারুণ। ব্যাপারটা স্রেফ জয়-হার নয়। আমরা প্রতিটি ম্যাচ বিশ্লেষণ করি। এজন্যই বিশ্লেষকদের এত বড় গ্রুপ আছে। আমরা ফুটবলারদের প্রতি ম্যাচের পরই দেখাই যে, পরের ম্যাচে আরও উন্নতি করতে হবে।”
৯ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগের শীর্ষে বার্সেলোনা, তিন পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে রেয়াল মাদ্রিদ।