সমতায় শেষ ইংল্যান্ড-জার্মানির রোমাঞ্চকর লড়াই

রোমাঞ্চের নানা বাঁক পেরিয়ে ৩-৩ গোলে ড্র হলো দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলের লড়াই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2022, 08:50 PM
Updated : 26 Sept 2022, 08:50 PM

সব রোমাঞ্চ যেন জমা ছিল দ্বিতীয়ার্ধের জন্য। ম্যাড়ম্যাড়ে প্রথমার্ধের পর জমজমাট ফুটবল উপহার দিল দুই দল। এক পর্যায়ে দুই গোলে এগিয়ে গেল জার্মানি। ১২ মিনিটের মধ্যে তিন গোল করে জয়ের আশা জাগাল ইংল্যান্ড। তবে শেষ পর্যন্ত ড্র হলো দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলের লড়াই।

লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে সোমবার রাতে উয়েফা নেশন্স লিগের ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হয়েছে।

গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ইলকান গিনদোয়ান জার্মানিকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কাই হাভার্টজ।

ম্যাচের যখন ২০ মিনিট বাকি, তখনও ২-০ গোলে পিছিয়ে ইংল্যান্ড। লুক শ, ম্যাসন মাউন্ট ও হ্যারি কেইনের লক্ষ্যভেদে ৩-২ গোলে এগিয়েও যায় তারা। স্বাগতিক গোলরক্ষকের ‘উপহার’ কাজে লাগিয়ে সমতায় ম্যাচ শেষ করেন হাভার্টজ।

‘এ’ লিগের তিন নম্বর গ্রুপের তলানিতে থেকে নেশন্স লিগ শেষ করা আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের। গ্যারেথ সাউথগেটের দল পেল না সান্ত্বনার জয়ও। আগের ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ পাওয়া জার্মানির এটি টুর্নামেন্টে চতুর্থ ড্র।

প্রথমার্ধে বল দখল ও আক্রমণে বেশ এগিয়েছিল জার্মানি। গোলের জন্য প্রথম শট নিয়েছিল তারাই। তবে ম্যাচের প্রথম পরিষ্কার সুযোগটা পায় ইংল্যান্ড। ২৪তম মিনিটে ডি বক্স থেকে রাহিম স্টার্লিংয়ের শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন জার্মান গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।

পরের মিনিটে কেইনের ভলি একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। বেঁচে যায় জার্মানি।

Also Read: হাঙ্গেরির স্বপ্ন ভেঙে ফাইনালসে ইতালি

৪৩তম মিনিটে আবার সুযোগ আসে স্টার্লিংয়ের সামনে। তবে আঁটসাঁট কোণ থেকে এড়াতে পারেননি টের স্টেগানকে, শট নেন গোলরক্ষক বরাবর। লম্বা সময় ধরে ওপেন প্লে থেকে গোল করতে না পারা ইংল্যান্ডের অপেক্ষা আরও বাড়ে।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে জসুয়া কিমিখ একটুর জন্য শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। বিরতির আগে গোলের জন্য জার্মানির এটি ছিল তৃতীয় শট। কিন্তু কোনোটিই ছিল না লক্ষ্যে। ৩৫ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা ইংল্যান্ডের চার শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে।

৫২তম মিনিটে সফল স্পট কিকে জার্মানিকে এগিয়ে নেন গিনদোয়ান। জামাল মুসিয়ালাকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুয়াইর ফাউল করলে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি দেন রেফারি।

৬১ ও ৬৩তম মিনিটে জার্মানির দুটি শট একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। নিকলাস সুলের শট বাম দিকের ও টিমো ভেরনারের প্রচেষ্টা ডান দিকের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।

একের পর এক আক্রমণ করে যাওয়া জার্মানি ৬৭তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে। প্রতি আক্রমণ থেকে বল পেয়ে ভেরনার খুঁজে নেন হাভার্টজকে। তার বাঁ পায়ের জোরাল শট দূরের পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জড়ায় জালে। তেমন কিছু করার ছিল না ইংলিশ গোলরক্ষকের।

২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর আক্রমণে গতি বাড়ায় ইংল্যান্ড। এতে বড় অবদান ৬৬তম মিনিটে বদলি নামা বুকায়ো সাকা ও ম্যাসন মাউন্টের।

৭১তম মিনিটে ব্যবধান কমান লুক শ। জেমস রিসের ক্রসে বল পেয়ে শট নেন তিনি। এগিয়ে এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টায় পা ছোঁয়ান টের স্টেগেন। বলের গতি কিছুটা কমে গেলেও গোললাইন অতিক্রম করে ঠিকই। নেশন্স লিগে ওপেন প্লেতে ইংল্যান্ডের এটাই প্রথম গোল।

৭৫তম মিনিটে সমতা ফেরায় ইংল্যান্ড। সাকার কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের মাথা থেকে বুলেট গতির শটে কাছের পোস্ট ঘেঁষে বল জালে পাঠান মাউন্ট। ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি টের স্টেগেন।

৮৩তম মিনিটে কেইনের সফল স্পট কিকে এগিয়েও যায় ইংল্যান্ড। জুড বেলিংহ্যামকে জার্মানির নিকো স্কলোটেরবেক ফাউল করলে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি দেন রেফারি।

মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ডের জয় দিয়েই ম্যাচ শেষ হতে যাচ্ছে। তবে নাটকীয়তার তখনও বাকি। গোলরক্ষকের উপহার কাজে লাগিয়ে ৮৭তম মিনিটে সমতা ফেরান হাভার্টজ! সের্গে জিনাব্রির শট শুয়ে পড়ে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টায় সফল হননি ইংলিশ গোলরক্ষক পোপ। ছুটে গিয়ে আলগা বল জালে পাঠান চেলসি মিডফিল্ডার।

৯০তম মিনিটে প্রতি আক্রমণে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন সাকা। ঝাঁপিয়ে পড়ে কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন টের স্টেগেন।

অন্য ম্যাচে হাঙ্গেরিকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে ফাইনালসে খেলা নিশ্চিত করেছে ইতালি। তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের গ্রুপ থেকে শেষ চারে যাওয়ার আশা জাগিয়েও ব্যর্থ হয়েছে হাঙ্গেরি। দুই নম্বরে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে তারা।

৬ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে তিনে জার্মানি। তিন ড্রয়ে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ৩। ‘এ’ লিগে ওয়েলসের পর কেবল তারাই কোনো জয় পায়নি।