প্রথমার্ধেই চার গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ মুঠোয় নেয় ক্রিস্তফ গালতিয়ের দল।
Published : 26 Oct 2022, 02:56 AM
লিওনেল মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপে একসঙ্গে জ্বলে উঠলে কী হতে পারে, সেটাই দেখল ম্যাকাবি খাইফা। প্রথমার্ধেই চার গোল হজম করল দলটি। দ্বিতীয়ার্ধে আত্মঘাতীও হলো তারা। ইসরায়েলের দলটিকে স্রেফ খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় খেলা নিশ্চিত করল পিএসজি।
নিজেদের মাঠে মঙ্গলবার ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচে খাইফাকে ৭-২ গোলে হারায় ক্রিস্তফ গালতিয়ের দল। দুই অর্ধে পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করে মাত্র দুই গোল শোধ করতে পারে দলটি।
পিএসজির জয়ে জোড়া গোলের আলো ছড়ান মেসি ও এমবাপে। একবার করে জালের দেখা পান নেইমার ও কার্লোস সোলের।
জিতলেই নিশ্চিত শেষ ষোলোর টিকেট-এই সমীকরণে খেলতে নেমে পিএসজির আক্রমণত্রয়ী শুরু থেকে কাঁপন ধরিয়ে দেয় খাইফার রক্ষণে। শেষ পর্যন্ত আধিপত্য করে দাপুটে জয়ে পাঁচ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোয় ওঠে তারা।
কিক অফের একটু পরই গ্যালারিতে আতশবাজি পোড়ানো হলে ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় মাঠ। আতশবাজি এসে পড়ে মাঠের কোণায়ও। তাতে খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ।
নবম মিনিটে নেইমারের পাস বক্সে ফাঁকায় পেয়ে ফাবিয়ান রুইজ বাইরে শট নেন। চতুর্দশ মিনিটে ভলো সুযোগ তৈরি হয়েছিল। বল পায়ে ডিফেন্ডারদের প্রতিরোধ ভেঙে ছুটছিলেন নেইমার, কিন্তু সময়মতো ডান দিকে থাকা এমবাপেকে পাস দিতে পারেননি। অষ্টাদশ মিনিটে আবারও সুযোগ নষ্ট করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
পরের মিনিটে এগিয়ে যায় পিএসজি। বক্সের ভেতরেই বাঁ দিক থেকে মেসি পাস দেন মাঝখানে এমবাপেকে। ফরাসি ফরোয়ার্ড সুবিধা করতে পারেননি। তবে ডিফেন্ডারের চার্জে বল হারানোর আগে ফিরিয়ে দেন মেসিকে। বাঁ পায়ের আলতো নিখুঁত ভলিতে জাল খুঁজে নেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
আগ্রাসী লাইপজিগে ধরাশায়ী রিয়াল
ফের মাহরেজের পেনাল্টি মিসে সিটির হতাশা, নকআউটে ডর্টমুন্ড
৩২তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করা এমবাপের গোলের ধরনও প্রায় একই। নেইমার স্লাইডে বল বাড়ান তাকে; ফরাসি ফরোয়ার্ড পাস দেন মেসির উদ্দেশ্যে, কিন্তু বল এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে ফিরে যায় বাঁ দিকে থাকা এমবাপের কাছেই। কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
তিন মিনিট পর আবারও আক্রমণভাগের তিন তারকার ঝলক। এবার এমবাপের পা হয়ে বল যায় মেসির কাছে। তার পাস পেয়ে নিখুঁত চিপে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়ান নেইমার।
৩৮তম মিনিটে ফ্রি কিকে হেড করে ব্যবধান কমান আবদুলায়ে সেক। কিন্তু একটু পর খাইফা আবারও খেয়ে বসে গোল। এমবাপের সাথে একবার বল দেওয়া-নেওয়া করে পায়ের কারিকুরিতে এক ডিফেন্ডারকে ছিটকে দিয়ে বাঁ পায়ের বাঁকানো নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন মেসি।
পিএসজি ও জাতীয় দল মিলিয়ে এ নিয়ে সবশেষ ৯ ম্যাচে ১১ গোল করলেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।
দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে কর্নারের পর দূরের পোস্টে থাকা সেক হেডে জানলুইজি দোন্নারুম্মাকে পরাস্ত করেন। পিএসজি অফসাইডের দাবি তুললেও কাজ হয়নি।
৬৪তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ওঠা আশরাফ হাকিমি রাইট উইং ধরে অনেকটা এগিয়ে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান। প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান পায়ে বাঁকানো শটে জাল খুঁজে নেন এমবাপে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এবারের আসরে এটি তার ষষ্ঠ গোল।
একটু পর নেইমারের শট খাইফার গোল্ডবার্গের পায়ে লেগে জালে জড়ালে বড় জয়ের পথে ছুটতে থাকে পিএসজি।
৭৬তম মিনিটে হ্যাটট্রিকের আনন্দে ডানা মেলতে পারতেন মেসি। কিন্তু একটু দুরূহ কোণ থেকে তার নেওয়া শট ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরে। আট মিনিট পর বদলি নামা কার্লোস সোলের শেষ গোলটি করেন।
গ্রুপের অন্য ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ালেও শেষ রক্ষা হয়নি ইউভেন্তুসের। সাত গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে তাদেরকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়েছে বেনফিকা। পিএসজির সমান ১১ পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে পর্তুগালের দলটি।
পাঁচ ম্যাচে ৩ করে পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে ইউভেন্তুস ও খাইফার। দুই দলের সামনেই আছে পয়েন্ট টেবিলে তৃতীয় স্থানে থেকে ইউরোপা লিগে জায়গা পাওয়ার ম্যাচ।
গ্রুপের শেষ রাউন্ডে আগামী বুধবার ইউভেন্তুস মুখোমুখি হবে পিএসজির। আর বেনফিকার বিপক্ষে লড়বে খাইফা।