কোপা দেল রে
অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকের তিন গোলে স্বস্তির জয় পেয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
Published : 17 Jan 2025, 05:14 AM
স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে ভরাডুবির রেশ কাটতে না কাটতে আরেকটি ধাক্কা খেতে বসেছিল রেয়াল মাদ্রিদ। ঘটনাবহুল ম্যাচে তাদের কাঁপিয়ে দিল সেল্তা ভিগো। তবে অতিরিক্ত সময়ের তিন গোলে স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল কার্লো আনচেলত্তির দল।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ৫-২ গোলে জিতেছে রেয়াল।
কিলিয়ান এমবাপে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান ভিনিসিউস জুনিয়র। জোনাথান বাম্বা ব্যবধান কমানোর পর পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নেন মার্কোস আলোনসো।
সেখানে নিষ্প্রাণ প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে তিন গোল করে সেল্তা ভিগোর হৃদয় ভেঙে জয়ে ফিরল রেয়াল। জোড়া গোল করেন তরুণ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড এন্দ্রিক, অন্যটি উরুগুয়ের মিডফিল্ডার ফেদে ভালভের্দে।
সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে ৫-২ গোলে হেরেছিল রেয়াল। সেই ম্যাচের পর প্রথমবার মাঠে নেমে একই ব্যবধানে জিতল তারা। তবে হান্সি ফ্লিকের দলের মতো দাপুটে নয় তাদের জয়। সেল্তা ভিগো সমতা ফিরিয়ে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নেওয়ায় অনেক বেশি ভুগতে হয়েছে আনচেলত্তির দলকে।
প্রতিপক্ষের মাঠে পঞ্চম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পায় সেল্তা ভিগো। খুব কাছ থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি কার্ল স্টারফেল্ট।
পরের মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে লুকা মদ্রিচের শট ঠেকান সেল্তা ভিগো গোলরক্ষক ইভান ভিয়ার। চতুর্দশ মিনিটে অহেলিয়া চুয়ামেনির জোরাল শটও ব্যর্থ করে দেন তিনি।
৩০তম মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন ব্রাহিম দিয়াস। পা দিয়ে কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন ভিয়ার।
৩৭তম মিনিটে আর পারেননি সেল্তা ভিগো গোলরক্ষক। প্রতি-আক্রমণে মাঝমাঠে বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন এমবাপে। পায়ের কারিকুরিতে সঙ্গে লেগে থাকা খেলোয়াড়কে এড়িয়ে জোরাল শটে তিনি খুঁজে নেন জাল।
এই গোল নিয়ে বিতর্কের যথেষ্ট সুযোগ আছে। সেল্তা ভিগোর আক্রমণে উইলিয়ট সুইডবারি ডি-বক্সে ঢুকে পড়লে বল ঠেকাতে ঝাঁপ দেন গোলরক্ষকের আন্দ্রি লুনিন। কিন্তু বলের নাগাল পাননি তিনি, তার হাতে লেগে পড়ে যান সুইডিশ ফরোয়ার্ড। পেনাল্টির আবেদন সাড়া দেননি রেফারি। সেখান থেকেই রেয়ালের আক্রমণের সূচনা, যার পরিণতি ওই গোল।
এগিয়ে যাওয়ার পর আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে রেয়াল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান বাড়ায় তারা। দিয়াসের দারুণ পাস পেয়ে ৪৮তম মিনিটে জাল খুঁজে নেন ভিনিসিউস।
৫৭তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপে। খুব কাছ থেকেও হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। পরের মিনিটে ভিনিসিউসের চিপ শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন স্টারফেল্ট।
৬৯তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে সেল্তা ভিগোর উগো সোতেলোর বুলেট গতির শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন লুনিন।
আট মিনিট পর জালে বল পাঠান আর্দা গিলের। তবে তাকে বল দেওয়া ভিনিসিউস অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল।
এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার উপহার কাজে লাগিয়ে ৮৩তম মিনিটে ব্যবধান কমায় সেল্তা ভিগো। নিজেদের ডি-বক্সের পাশে ভুল পাস দিয়ে বসেন ফরাসি মিডফিল্ডার। বল পেয়ে অরক্ষিত বাম্বাকে খুঁজে নেন পাবলো দুরান। ঠাণ্ডা মাথায় বাকিটা সারেন কোত দি ভোয়ার ফরোয়ার্ড।
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে সফল স্পট কিকে সমতা ফেরান আলোনসো। ডি-বক্সে বাম্বাকে রেয়ালের রাউল আসেন্সিও ফাউল করায় পেনাল্টি পেয়েছিল সেল্তা ভিগো।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে কর্নার থেকে একটুর জন্য গোল পায়নি রেয়াল। আন্টোনিও রুডিগারের গায়ে লেগে পোস্ট ছুঁয়ে বেরিয়ে যায় বল।
ভিনিসিউসের বদলি নেমে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সুযোগ তৈরি করেন রদ্রিগো। তবে সেল্তা ভিগোর গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে পারেননি তিনি।
১০৮তম মিনিটে বুলেট গতির শটে রেয়ালকে এগিয়ে নেন এন্দ্রিক। গিলেরের কাছ থেকে ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে ঘুরে, গতিময় শটে তরুণ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড পরাস্ত করেন ভিয়ারকে।
চার মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে তীব্র গতির শটে ব্যবধান আরও বাড়ান ভালভের্দে। কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের।
১১৯তম মিনিটে ব্যবধানে আরও বাড়ান এন্দ্রিক। কর্নারের পর গিলের ক্রসে খুব কাছ থেকে ব্যাকহিলে জাল খুঁজে নেন এই তরুণ। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রেয়ালের হয়ে এটি তার চতুর্থ গোল।