ইংলিশ ফুটবল
গত মাসে টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে মারাত্মক ভুল করা গোলরক্ষক আলতাই বায়িনদির এবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জয়ের নায়ক।
Published : 13 Jan 2025, 07:30 PM
জীবন কত দ্রুত রং বদলাতে পারে, সেটা আবার দেখাল আলতাই বায়িনদিরের ঘটনা প্রবাহ। গত মাসে টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে মারাত্মক ভুল করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দ্বিতীয় পছন্দের গোলরক্ষক। আর্সেনালের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর তিনি ভাসছেন প্রশংসার জোয়ারে। তুর্কি গোলরক্ষক এখন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের দলটির জয়ের নায়ক।
এফএ কাপের তৃতীয় রাউন্ডে রোববার রাতে বায়িনদিরের বীরত্বে টাইব্রেকারে ৫-৩ গোলের জয় পায় হুবেন আমুরির দল। মূল ম্যাচ ও অতিরিক্ত সময় শেষ হয়েছিল ১-১ সমতায়।
গত মাসে টটেনহ্যামের বিপক্ষে ৪-৩ গোলের হারে বড় দায় ছিল বায়িনদিরের। লিগ কাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে ৮৮তম মিনিটে কর্নার থেকে সরাসরি গোল করেছিলেন টটেনহ্যাম অধিনায়ক সন হিউং-মিন।
সেই হারের পর সমর্থক থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞ সবার সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছিলেন বায়িনদির। মাত্র এক মাস ও এক ম্যাচ পর চিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে গেল! ২৬ বছর বয়সী গোলরক্ষককে এখন ইউনাইটেড কোচ আমুরির বর্ণনা করলেন ‘আমাদের নায়ক’ হিসেবে।
তুরস্কের দীর্ঘদেহী গোলরক্ষক ইউনাইটেডে সুযোগ পান কেবল কাপ প্রতিযোগিতায়। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ফেনেরবাচে থেকে ৪৩ লাখ পাউন্ডে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আসেন তিনি। চলতি মৌসুমে লিগ কাপ ও এফএ কাপ মিলিয়ে খেলতে পেরেছেন কেবল চার ম্যাচ।
টটেনহ্যামের বিপক্ষে ভুলে ভরা ম্যাচ খেলার পর বায়িনদিরের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। আর্সেনালের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সমালোচনা বদলে গেল প্রশংসায়। ৬১তম মিনিটে দিয়োগো দালোত মাঠ ছাড়ার পর অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে দলকে সমতায় রাখার পথ বায়িনদিরের জন্য সহজ ছিল না।
সে কারণেই ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় তাকে প্রশংসায় ভাসালেন ইউনাইটেড কোচ আমুরি।
“ফুটবলারের জীবন অনেক ধরনের চক্র ও মুহূর্ত পূর্ণ। কখনও কখনও এক সপ্তাহে জীবন পাল্টে যেতে পারে, সেটা দেখছেন আলতাইয়ের ক্ষেত্রে।”
“সে খুব ভালো একজন মানুষ। সে প্রচুর পরিশ্রম করে। এই দলের সব খেলোয়াড়ের সুযোগ আছে এবং তারা ভাগ্যবান, কারণ তারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলে। এক ম্যাচ খেললেন না ৯০ ম্যাচ খেললেন, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, কারণ এই দলের হয়ে খেলা সবসময়ই আনন্দের।”
একজন বেশি নিয়ে খেলার সময় এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল আর্সেনাল। কিন্তু ৭২তম মিনিটে তাদের অধিনায়ক মার্টিন ওডেগোরের স্পট কিক ঠেকিয়ে দেন বায়িনদির। সে সময় তিনি ব্যর্থ হলে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়তে হতো ইউনাইটেডকে।
উজ্জ্বীবিত ইউনাইটেডের রক্ষণ ম্যাচ নিয়ে যায় টাইব্রেকারে। সেখানেও আলো ছড়ান সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতার বায়িনদির। ফিরিয়ে দেন কাই হাভার্টজের শট। এতে একটি দারুণ কীর্তিও গড়েন তুর্কি গোলরক্ষক। ২০১৩-১৪ মৌসুমে রেকর্ড রাখার পর থেকে প্রিমিয়ার লিগের প্রথম গোলরক্ষক হিসেবে এফএ কাপে মূল ম্যাচ ও টাইব্রেকারে পেনাল্টি ঠেকালেন তিনি।
কীর্তিকে খুব বড় করে দেখছেন না বায়িনদির। তিনি খুশি দলে অবদান রাখতে পেরে।
“আমি এই মহান ক্লাবের সবাইকে খুশি করতে চাই। আমি এখানে প্রতিদিনই কাজ করি। যদি খেলার সুযোগ না মেলে, তাতে সমস্যা নেই। আপনাকে প্রতি মিনিট, প্রতি সেকেন্ডে প্রস্তুত থাকতে হবে। যদি আপনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড় হন, আপনাকে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।”