বেলিংহ্যামের গোলে স্বস্তির জয়ে শুরু ইংল্যান্ডের

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে বিবর্ণ পারফরম্যান্সে ইংলিশদের নিয়ে যে শঙ্কা জাগে, এখানে জিতলেও সেই মেঘ কাটল না খুব একটা।

দারুণ লক্ষ্যভেদী হেডে পথ দেখালেন জুড বেলিংহ্যাম। আশানুরূপ পারফরম্যান্স যদিও দেখাতে পারল না তার সতীর্থরা। তবে সেই পথে হেঁটে, সার্বিয়াকে হারিয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিযনশিপে কাঙ্ক্ষিত শুরু পেল ইংল্যান্ড।

জার্মানির পশ্চিমের শহর গেলসেনকিরশেনে রোববার রাতের ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছে গতবারের রানার্সআপরা।

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে হেরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে গ্যারেথ সাউথগেটের দল। ওই ম্যাচে তাদের পারফরম্যান্স ছিল ভীষণ বাজে, সমর্থকদের থেকে দুয়োও শুনতে হয় সেদিন।

ওই ম্যাচের পর কোচ শুনিয়েছিলেন আশার বানী। বলেছিলেন, মূল টুর্নামেন্ট শুরু হলে ঘুরে দাঁড়াবে তার দল। এখানে প্রত্যাশিত জয় মিললেও, তাদের পারফরম্যান্স ঘিরে শঙ্কার কালো মেঘ অবশ্য কাটল না। পুরো ম্যাচে গোলের জন্য মাত্র পাঁচটি শট নিতে পারে তারা, লক্ষ্যে থাকে তিনটি। অবশ্য সার্বিয়াও আলো ছড়াতে পারেনি, তাদের ছয় শটের একটিই থাকে লক্ষ্যে।

রেয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে অসাধারণ পারফরম্যান্সে অভিষেক মৌসুম রাঙানোর পর বেলিংহ্যামকে ঘিরে ইংল্যান্ডের প্রত্যাশাও বাড়ে বহুগুণে। শুরুতেই দলকে এগিয়ে নিয়ে তিনিও জানান দিলেন, প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে তিনি প্রস্তুত।

ম্যাচের শুরু থেকে একচেটিয়া পজেশন রেখে খেলতে থাকে ইংল্যান্ড। তবে তাদের আক্রমণগুলো ঠিক গোছানো হচ্ছিল না। ত্রয়োদশ মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম প্রচেষ্টা রাখতে পারে তারা এবং সেটাতেই গোল; বুকায়ো সাকা ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ান, প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে আসা বল ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে হেডে ঠিকানা খুঁজে নেন বেলিংহ্যাম।

সাত মিনিট পর ছোট্ট এক ভুলে বিপদে পড়তে যাচ্ছিল ইংল্যান্ড। নিজেদের সীমানায় ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ড বল হারালে পেয়ে যান আলেকসান্দার মিত্রোভিচ। জোরাল শট নেন আল হিলালের এই ফরোয়ার্ড, অল্পের জন্য তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হাফ ছাড়ে ইংলিশরা।

শুরুর ছন্দ অবশ্য ধরে রাখতে পারেনি ইংল্যান্ড। বল দখলে রাখায় মনোযোগী হয়ে ওঠে সার্বিয়াও। তবে, প্রথমার্ধের বাকি সময়ে উল্লেখযোগ্য কিছুই আর করতে পারেনি কেউ।

বিরতির পর প্রতিপক্ষ চাপ বাড়ালে বারবার ইংল্যান্ডের রক্ষণ উন্মুক্ত হয়ে পড়ছিল। তবে প্রতিবারই শেষে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছিল সার্বিয়া।

সাদামাটা ফুটবলের মাঝে ৫৬তম মিনিটে অনেক দূর থেকে চেষ্টা করেন অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ড, তবে তার জোরাল সোজাসুজি শট ঠেকাতে কোনো সমস্যা হয়নি গোলরক্ষকের। ৭৭তম মিনিটে ম্যাচের দ্বিতীয় সেরা সুযোগটি পায় ইংল্যান্ড। জ্যারড বোয়েনের ক্রস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে জোরাল হেড করেন হ্যারি কেইন; তবে দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় রুখে দেন গোলরক্ষক প্রেদরাগ রাইকোভিচ, বল তার হাত হয়ে ক্রসবারে লেগে ফেরে।

পাঁচ মিনিট পর ভালো একটি সুযোগ তৈরি করে সার্বিয়াও, যদিও ঠিকানা খুঁজে নিতে পারেনি তারাও। দুসান ভ্লাহোভিচের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট কোনোমতে একহাত দিয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান জর্ডান পিকফোর্ড। বাকিটা সময় কোনোমতে পার করে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড।

এদিনই ডেনমার্ক ও স্লোভেনিয়ার মধ্যে ‘সি’ গ্রুপের আরেক ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়েছে।