লুকা মদ্রিচের স্থায়িত্ব ও নিবেদনের সঙ্গে পাওলো মালদিনির মিল খুঁজে পাচ্ছেন রেয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি।
Published : 24 Feb 2025, 12:29 PM
লুকা মদ্রিচের স্কিল, নিবেদন, স্থায়িত্ব এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে বিস্ময় নতুন কিছু নয়। নানা সময়েই চমকে দিয়েছেন তিনি। সেই অবাক করার পালায় যেন শেষ বলে কিছু নেই। আরও একবার চোয়াল ঝুলিয়ে দিলেন তিনি অবিশ্বাস্য এক গোল উপহার দিয়ে। কোচ কার্লো আনচেলত্তি মুগ্ধতায় ভরা চোখ-মুখ নিয়ে বললেন, ফুটবল খেলাটির জন্যই বিশেষ এক প্রাপ্তির নাম এই মদ্রিচ।
বিস্ময় জাগানিয়া গোলটি মদ্রিচ করেছেন রোববার লা লিগায়। নিজেদের মাঠে জিরোনার বিপক্ষে ৪০ মিনিটে গোল বের করতে পারেনি চ্যাম্পিয়নরা। ৪১তম মিনিটে বক্সের অনেকটা বাইরে বুক দিয়ে বল নামিয়ে দুর্দান্ত এক ভলি করেন ৩৯ বছর বয়সী তারকা। তার পা থেকে ছুটে যাওয়া গোলা গোলকিপারকে কোনো সুযোগ না দিয়ে ছোবল দেয় জালে।
ইএসপিএন পরে জানায়, ২৯.৪ গজ দূর থেকে ওই শট নিয়েছেন মদ্রিচ। তার সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ক্যারিয়ারে সবচেয়ে দূর থেকে করা গোল এটিই।
পরে ভিনিসিউস জুনিয়র গোল করায় ২-০ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় রেয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের সেরা মদ্রিচই।
ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে এখন আর শুরুর একাদশে সুযোগ তেমন একটা হয় না তার। মাঠে নামার সুযোগও নিয়মিত হয় না। তবে এখনও যে দলে অবদান রাখতে পারেন বা ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারেন, তা প্রমাণ করে চলেছেন বারবার। এজন্যই এই মৌসুম তার সঙ্গে চুক্তি করেছে রেয়াল।
আগামী মৌসুমেও রেয়াল তাকে ধরে রাখবে কি না, সেটি বলবে সময়। তবে আনচেলত্তি তার ভোট দিয়ে রাখলেন আগেই।
“ফুটবলের জন্য একটি উপহার মদ্রিদ। সে যতিদিন মনে করে, ততদিনই খেলে যাওয়া উচিত। সে যা-ই করুক না কেন, সবসময়ই ভালো কিছু করে। ফুটবল খেলাটি ও রেয়াল মাদ্রিদে আমরা সৌভাগ্যবান তার মতো একজন কিংবদন্তিকে পেয়ে। গুরুত্ব, মান ও পেশাদারিত্ব দিয়ে সে সত্যিকারের এক উপহার।”
মদ্রিচ নিজে অবশ্য উচ্ছ্বাসে ভেসে যাচ্ছেন না এই গোলে। বরাবরের মতোই প্রতিক্রিয়ায় তিনি পরিমিত, ভাবনায় তার দলের কথা।
“জানি না, এটিই আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে দর্শনীয় গোল কি না। তবে ভালো ছিল এটি। বের্নাবেউয়ে গোল করা সবসময়ই বিশেষ কিছু…।”
“সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোয় ফুটে উঠেছে, আমরা ভালো অবস্থায় আছি। এটা ধরে রাখতে হবে এবং চালিয়ে যেতে হবে। আমার মতে, দল হিসেবে আরও ভালো করার সুযোগ আছে আমাদের।”
২০১২ সালে টটেনহ্যাম হটস্পার থেকে রেয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর মানিয়ে নিতে একটু সময় লেগেছিল মদ্রিচের। ম্পেনের ক্রীড়া দৈনিক মার্কার পাঠকদের ভোটে তখন তিনি ছিলেন মৌসুমের ‘সবচেয়ে বাজে সাইনিং।’ সেই তিনি সময়ের সঙ্গে হয়ে ওঠে দলের ভরসা। এখন তো দীর্ঘ পথচলায় ক্লাবের এরকম প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি। ইউরোপের সফলতম ক্লাবের গৌরবময় ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ২৮টি ট্রফি জয় করা ফুটবলার তিনিই।
আগামী সেপ্টেম্বরে তার ৪০ পূর্ণ হবে। তবু তাকে দলে চান আনচেলত্তি। মদ্রিচের মাঝে তিনি দেখছেন তার পুরোনো এক শিষ্যের ছায়া, ফুটবল ইতিহাসে সেই তিনিও আলাদা জায়গা নিয়ে আছেন কিংবদন্তি হিসেবে।
“আরেকজন ৪০ বছর বয়সী ফুটবলারের উদাহরণ দিতে পারি আমি… পাওলো মালদিনি। এই দুজনের তুলনা করতে পারেন। দুজনই দারুণ ‘রোল মডেল।’ এটা মোটেও কাকতালীয় ব্যাপার নয় যে, ৪০ বছর বয়সেও তারা এভাবে খেলছে। জিনগত ব্যাপার তো আছেই। তবে পেশাদারিত্ব, মানসিকতা ও নিবেদনই বেশি।”