ব্যালন দ’র
স্পেনের এই মিডফিল্ডার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কারটি উৎসর্গ করেছেন স্প্যানিশ ফুটবলের সেই সব গ্রেটদের, যারা কখনও পাননি এই স্বাদ।
Published : 29 Oct 2024, 07:20 PM
বিজয়ীর নাম ঘোষণার পর ক্রাচে ভর দিয়ে মঞ্চের দিকে যাচ্ছিলেন রদ্রি। তাকে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে সাহায্য করলেন ফরাসি তারকা দিদিয়ের দ্রগবা। তখনও মুখে হাসি নেই স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের। ব্যালন দ’র হাতে পাওয়ার পর চুমু খেয়ে এবার চওড়া হাসি দিলেন তিনি। তার চোখেমুখে ফুটে উঠল উচ্ছ্বাস। পরে নিজের অনুভূতি তুলে ধরে ম্যানচেস্টার সিটি তারকা বললেন, তার নয়, জয় হয়েছে স্প্যানিশ ফুটবলের।
সত্যিই তাই। ৬৪ বছর পর বর্ষসেরা ফুটবলারের মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি জিতলেন স্পেনের কোনো পুরুষ ফুটবলার। সবশেষ ১৯৬০ সালে জিতেছিলেন লুইস সুয়ারেস। এতদিন স্পেনে জন্ম নেওয়া একমাত্র ব্যালন দ’র জয়ী ছিলেন বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলানের সাবেক এই মিডফিল্ডার। এবার তার পাশে বসলেন আরেক মিডফিল্ডার।
স্পেনের খেলোয়াড়দের মধ্যে সুয়ারেসের আগে অবশ্য ব্যালন দ’র জিতেছিলেন আলফ্রেদো দি স্তেফানো (১৯৫৭ ও ১৯৫৯)। তবে তার জন্ম ছিল আর্জেন্টিনায়, ১৯৫৬ সালে স্পেনের নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন কিংবদন্তি এই ফরোয়ার্ড।
স্প্যানিশদের দীর্ঘ পাঁচ যুগেরও বেশি সময়ের অপেক্ষার অবসান হলো সোমবার। প্যারিসে জমকালো অনুষ্ঠানে রদ্রির হাতে তুলে দেওয়া হয় ফরাসি সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’- এর পুরস্কার, ব্যালন দ’র ২০২৪। রেয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিউস জুনিয়রকে পেছনে ফেলে সম্মাননাটি পেলেন ২৮ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কারটি রদ্রি উৎসর্গ করেন স্প্যানিশ ফুটবলের সেই সব গ্রেটদের, যারা কখনও ব্যালন দ’র জয়ের স্বাদ পাননি।
“আজকের জয় আমার জন্য নয়, স্প্যানিশ ফুটবলের জয়। এটা (আন্দ্রেস) ইনিয়েস্তা, শাভি (এর্নান্দেস), ইকের (কাসিয়াস), সের্হিও বুসকেতসের মতো আরও অনেক খেলোয়াড়ের জন্য, যারা এটা জিততে পারেনি, যারা এর যোগ্য ছিলেন। এটা স্প্যানিশ ফুটবলের জন্য।”
“আজ অনেক বন্ধু আমাকে লিখেছে এবং বলেছে যে, ফুটবলের জয় হয়েছে। কারণ, এমন অনেক মিডফিল্ডার আজ আলোয় এসেছে যারা আড়ালে কাজ করে যায়, আজ সেসব প্রকাশ্যে আসছে।”
গত মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটি ও স্পেনের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেন রদ্রি। সিটির টানা চতুর্থ প্রিমিয়ার লিগ জয়ে বড় অবদান রাখেন তিনি। এরপর গত জুন-জুলাইয়ে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে স্পেনের শিরোপা জয়েও এই স্প্যানিয়ার্ড রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা; চোটের কারণে ফাইনালের দ্বিতীয়ার্ধে না খেলেও জেতেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে আসরে দলের সাত ম্যাচের সবগুলোতেই শুরুর একাদশে থেকে মাঝমাঠে সুর বেঁধে দেন তিনি, একটি গোল করেন শেষ ষোলোয় জর্জিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে।
সিটির হয়ে ২০২৩-২৪ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫০ ম্যাচে তিনি গোল করেন ৯টি। এছাড়া অবদান রাখেন সতীর্থদের ১৪ গোলে।