শুধু হলান্ড নয়, সিটির গোটা দলকে থামাতেই বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন রিয়াল কোচ

ম্যানচেস্টার সিটিকে এই মুহূর্তে অপ্রতিরোধ্য মনে হচ্ছে কার্লো আনচেলত্তির কাছে, তবে রক্ষণে জোর দিয়ে প্রত্যাশিত ফলাফলের আশা করছেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2023, 05:30 AM
Updated : 9 May 2023, 05:30 AM

দুই দলে তারকার অভাব নেই। তবে এই মুহূর্তে উজ্জ্বলতম এবং বিশ্ব ফুটবলে সবচেয়ে আলোচিত সম্ভবত আর্লিং হলান্ড। ম্যানচেস্টার সিটিতে প্রথম মৌসুমেই অবিশ্বাস্য গতিতে ছুটছেন তিনি। রেকর্ডের পর রেকর্ড লুটিয়ে পড়ছে তার পায়ে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে মহারণের আগেও আলোচনার কেন্দ্রে তিনিই। তবে কার্লো আনচেলত্তি ভালো করেই জানেন, ব্যবধান গড়ে দেওয়ার মতো ফুটবলারের অভাব নেই সিটিতে। রিয়াল মাদ্রিদ কোচ তাই সাফ জানিয়ে দিলেন, শুধু একজনকে ভাবনায় রেখে মাঠে নামবে না তার দল। 

চলতি মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দিয়ে এর মধ্যেই ইতিহাসে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন হলান্ড। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড গড়ে এখন তা আরও এগিয়ে নেওয়ার পথে তিনি। প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ফুটবলার হিসেবে এক মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গোলের হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন বেশ আগেই। ‘গোল মেশিন’ হিসেবেও খ্যাতি পেয়ে গেছেন। 

সিটির তারকায় ঠাসা দল এবার আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে হলান্ডকে পেয়ে। অধরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপার দেখা পেতে সিটির ভরসা তিনিই। এবার এখনও পর্যন্ত ১২ গোল করে ইউরোপ সেরার মঞ্চেও সর্বোচ্চ গোল স্কোরার ২২ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। আপাতত তার ধারেকাছে কেউ নেই এখানে। সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে মঙ্গলবার তিনিই হবেন সিটির মূল অস্ত্র আর রিয়ালের বড় হুমকি। 

গত মৌসুমে সেমি-ফাইনালেই দ্বিতীয় লিগের ৮৯ মিনিট পর্যন্ত দুই লেগ মিলিয়ে দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে ছিল সিটি। তবে শেষ কয়েক মিনিটে অবিশ্বাস্যভাবে তিন গোল করে ৬-৫ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। এবার হলান্ডকে নিয়ে আরও শক্তিশালী ও পরিপূর্ণ স্কোয়াড সিটির। 

তবে কোচ হয়ে তো শুধু একজনকে নিয়ে ভাবলে চলে না। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি বললেন, সিটির গোটা দলকেই থামানো হবে কঠিন লড়াই। 

“শুধু একজন ফুটবলারকে থামাতে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি না, আমরা প্রস্তুত হচ্ছি গোটা দলকে থামাতে, যাদেরকে এই মুহূর্তে অপ্রতিরোধ্য মনে হচ্ছে।” 

“হলান্ডকে জায়গা করে দিতে ম্যানচেস্টার সিটি তাদের খেলার ধরন পাল্টায়নি। বরং তাকে লম্বা বল খেলিয়ে এবং আরও ‘ডিরেক্ট অ্যাপ্রোচ’ নিয়ে উর্ধ্বাধভাবে তাদের বিকল্প এখন আরও বেশি। এসবের পরও তারা এমন একটি দল, বল পায়ে তারা দুর্দান্ত ও খুবই ভালো খেলে।” 

সিটির আগ্রাসী ফুটবলের সামনে রক্ষণভাগেই যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, তা জানেন আনচেলত্তি। তাই পরিকল্পনায় জোর দেওয়া হচ্ছে এখানেই। তবে শেষ পর্যন্ত গত আসরের মতো গোলের মালা সাজিয়ে জিততে পারলেও আপত্তি নেই রিয়াল কোচের। 

“রক্ষণে খুব ভালো করতে পারলে সবচেয়ে খারাপ ফলাফলও হতে পারে একটি ড্র। তার পরও গত মৌসুমে আমরা পাঁচটি গোল হজম করে ছয়টি গোল করে ওদেরকে হারিয়েছিলাম। এবারও এমন কিছু হলে আমি সানন্দে গ্রহণ করে নেব।” 

গতবারের লড়াইয়ে দ্বিতীয় লেগ ছিল রিয়ালের মাঠে। এবার প্রথম লেগই এখানে। দ্বিতীয় লেগে তাই ম্যানচেস্টারে অপেক্ষা করবে আরও বড় চ্যালেঞ্জ। আনচেলত্তির চাওয়া, প্রথম লেগের মানসিকভাবে এগিয়ে থাকা। সেই এগিয়ে থাকা কেবল ফলাফলে নয়, মানসিকতার লড়াইয়েও। 

“আগামীকাল আমাদের পরিপূর্ণ একটি ম্যাচ খেলতে হবে এবং এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, দ্বিতীয় লেগের ম্যাচই হবে নির্ণায়ক। আমাদের লক্ষ্য থাকবে তাই কিছুটা এগিয়ে থেকে ম্যানচেস্টারে যাওয়া। এই এগিয়ে থাকা বলতে শুধু ফলাফলই বোঝাচ্ছি না, এটা শরীরী ভাষা ও মানসিকতাও এটির অংশ।” 

“যদি ভালো খেলা যায়, প্রতিপক্ষকে বিপাকে ফেলা যায়, তাদেরকে অস্বস্তির অবস্থায় ঠেলে দেওয়া যায়, তাহলেই মানসিকভাবে এগিয়ে থাকা যাবে। ফুটবল খেলাটি বিভিন্ন স্তর নিয়ে গড়ে ওঠে এবং মানসিকতা সেটির বড় অংশ। দ্বিতীয় লেগে ওদেরকে চাপে রাখতে কালকে আমাদের ভালো খেলতে হবে।”