’৯৬ শেয়ার কেলেঙ্কারিতিন জনের বিরুদ্ধে মামলা চলবে

ছিয়ানব্বইয়ের শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পুঁজিবাজারের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের তিন পরিচালক ও কর্মকর্তার অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2011, 02:46 AM
Updated : 23 Nov 2011, 02:46 AM
ঢাকা, নভেম্বর ২৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ছিয়ানব্বইয়ের শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পুঁজিবাজারের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের তিন পরিচালক ও কর্মকর্তার অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) দায়ের করা এ মামলার কার্যক্রম পরিচালনার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ছয় মাসের মধ্যে তা নিষ্পত্তিরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও শেখ মো. জাকির হোসেনের বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।
এ মামলার আসামিরা হলেন সিকিউরিটিজ কনসালটেন্ট লিমিটেডের তখনকার পরিচালক এম জি আজম চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এবং অনির্বাহী অনারারি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহাবুব আহমদ। এদের মধ্যে প্রথম দুই জন ১৯৯৬ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য ছিলেন।
কারসাজির ফলে দেশের দুই শেয়ার বাজারের সূচক ফুলে ফেঁপে ওঠার পর ১৯৯৬ সালে ব্যাপক ধস নামে পুঁজিবাজারে। ফলে বহু বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব হারান। ওই ঘটনায় এসইসি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বেক্সিমকো, শাইনপুকুরসহ বিভিন্ন কোম্পানির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। এ রকমই একটি মামলা হয় সিকিউরিটিজ কনসালটেন্ট লিমিটেড ও ওই তিনজনের বিরুদ্ধে।
১৯৯৭ সালে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে এসইসির করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, ডিএসইর সদস্য এম জি আজম চৌধুরী ও শহীদুল্লাহ সিকিউরিটিজ কনসালট্যান্ট লিমিটেডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকে বেআইনিভাবে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শেয়ার ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলেন। ওই সিন্ডিকেটের নামে কোম্পানির ডিভিপি (ডেলিভারি ভার্সেস পেমেন্ট) লেনদেনের মাধ্যমে আড়াই কোটি টাকার লেনদেন অনিষ্পন্ন রাখে।
অভিযোগে বলা হয়, ওই লেনদেনের কোনো তথ্য ডিএসইতে নেই। আসামিরা অসত্য লেনদেন দেখিয়ে অসৎ ও প্রতারণামূলকভাবে পুঁজিবাজারকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করেছেন। বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের ভুয়া ও অলিক হস্তান্তর দেখিয়ে জনগণকে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার উচ্চমূল্যে কিনতে প্রলুব্ধ করেছেন।
আসামিরা এ মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে নিু আদালতে আবেদন করলে ১৯৯৯ সালের ১৬ মার্চ বিচারিক আদালত তা খারিজ করে অভিযোগ গঠন করে। তবে তারা একইবছর হাইকোর্টে আলাদাভাবে মামলা বাতিলের আবেদন করলে আদালত মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করে।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ওই রুল হাইকোর্টর কার্যতালিকায় আসে। তিনদিন শুনানির পর বুধবার এ বিষয়ে রায় দিলো আদালত।
রায়ে বলা হয়েছে, “এ মামলার সঙ্গে জনস্বার্থ জড়িত। কে দোষী আর কে নির্দোষ, তা নিু আদালতে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে। এই মুহূর্তে মামলার কার্যক্রমের ওপর কোনোরকম হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না।”
এসইসির পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট ড. আবুল কাশেম মোহাম্মদ আলী। আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাফায়াত সুলতানা রুমী।
রায়ের পর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, নিু আদালতে এ মামলা চলতে আর বাধা নেই। সিকিউরিটিজ কনসালট্যান্ট লিমিটেডের কোনো ব্রোকারেজ লাইসেন্স ছিল না। কিন্তু এ কোম্পানির নামে তারা তিনজন শেয়ার কেনাবেচা করেছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএন/জেকে/১৬০০ ঘ.