সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরীক্ষায় বসে অরিত্র প্রশ্নের উত্তর বলে দিচ্ছে। তার শ্রুতিলেখক দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুচিত্রা বিশ্বাস খাতায় উত্তর লিখে যাচ্ছে।
Published : 17 Aug 2023, 08:11 PM
দৃষ্টিহীনতা বাধা হতে পারেনি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইশতিয়াক আলম অরিত্র’র।
সে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করে, যন্ত্রের সাহায্যে শুনে শুনে তা আয়ত্ত করে ‘ভালো প্রস্তুতি নিয়ে’ এবার এইচএসসি পরীক্ষায় বসেছে।
বৃহস্পতিবার এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে অরিত্র শ্রুতি লেখকের মাধ্যমে পরীক্ষা দিয়েছে।
জেলার মুকসুদপুরের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ফিরোজ আলম মৃধার ছেলে অরিত্র উপজেলার হাদিউজ্জামান মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৩.৮ পেয়েছিল।
এবার সে সরকারি মুকসুদপুর কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
তার পরীক্ষার কেন্দ্র উপজেলার সরকারি সাবের মিয়া জসিমুদ্দীন এসজে উচ্চ বিদ্যালয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরীক্ষায় বসে অরিত্র প্রশ্নের উত্তর বলে দিচ্ছে। তার শ্রুতিলেখক দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুচিত্রা বিশ্বাস খাতায় উত্তর লিখে যাচ্ছে।
ইশতিয়াক আলম অরিত্রর বাবা ফিরোজ আলম মৃধা বলেন, “আমার ছেলের জন্ম থেকেই চোখে সমস্যা। প্রথমে বাম চোখে সমস্যা ছিল। ইন্ডিয়া থেকে অপারেশন করানোর পরে তার ডান চোখে সমস্যা হয়। বর্তমানে তাকে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা করানো হচ্ছে।”
সন্তানের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন ফিরোজ আলম মৃধা।
সরকারি এসজে উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব ও সরকারি মুকসুদপুর কলেজের প্রভাষক কবির আহম্মেদ বলেন, “অরিত্র আমাদের কলেজের নিয়মিত ও মেধাবী ছাত্র। সে কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে পুরস্কারও জিতেছে। সে তার দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে শ্রুতিলেখক দিয়ে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষায় তার অংশ নেওয়া অনেক শিক্ষার্থীকে অনুপ্রাণিত করেছে।”
মুকসুদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদৎ আলী মোল্যা বলেন, “তার এই ইচ্ছাশক্তিকে আমি সাধুবাদ জানাই। তার মনোবল তাকে ব্যাপক সাফল্য এনে দেবে। আশা করি, এইচএসসিতে সে ভালো ফলাফল করবে।”
পরীক্ষা শেষে অরিত্রের ভাষ্য, “আমার পরীক্ষা ভালো হয়েছে। আশা করছি, এইচএসসিতে ভালো রেজাল্ট হবে।”
নিজের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছে ইশতিয়াক আলম অরিত্র।
ওই কেন্দ্রের রাকিবুল ইসলাম নামে এক পরীক্ষার্থীর ভাষ্য, “অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর উৎকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করেছে অরিত্র। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে তার এ অংশগ্রহণ আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে । তার দেখাদেখি এইচএসসিতে ভালো রেজাল্ট করতে আমরও চেষ্টা করছি।”