নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার একটি বেসরকারি ক্লিনিক থেকে
এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বজনদের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের মোগরাপাড়া চৌরাস্তার ‘সেবা হাসপাতাল’ নামের একটি ক্লিনিক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত জহিরুল ইসলাম (৩৭) উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁ গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি ওই হাসপাতালের ফার্মেসির দায়িত্বে ছিলেন।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জহিরুলের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে দাবি করেন তার বাবা আবুল হোসেন।
তিনি বলেন, বুধবার সকাল ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে তার ছেলের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। পরে তিনি হাসপাতালে গিয়ে একটি শয়নকক্ষের মেঝেতে জহিরুলের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
মরদেহে ইনজেকশনের ক্ষতসহ আঘাতের চিহ্ন দেখে এটি হত্যাকাণ্ড বলে তিনি সন্দেহ করছেন।
জহিরুলের শ্যালক রবি মোল্লার অভিযোগ, নিহতের বাম পায়ে সাতটি ও বাম হাতে ইনজেকশন ঢোকানোর দুটি চিহ্ন দেখা গেছে। তার গলায়ও আঘাতের চিহ্ন আছে। হাত-পায়ে রশি দিয়ে বাঁধার চিহ্ন ছিল।
তিনি বলেন, “সকালে গিয়ে হাসপাতালে কয়েকজন স্টাফ ছাড়া কাউকে দেখা যায়নি। এমনকি একজন রোগীও সেখানে ছিল না। এসব কারণে আমরা মনে করছি, জহিরুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা ক্লিনিকের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের শান্ত করে।
তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারছেন না স্বজনরা।
সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনের দাবি জানান তারা।
এদিকে জহিরুলের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে দাবি করে ক্লিনিকটির মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, “রাতের ডিউটি ছিল জহিরুলের। ডিউটি শেষে সে হাসপাতালে তার কক্ষে শুয়ে পড়ে। সকালে ডাকতে গিয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে ভেতরে ঢুকে তাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে একজন চিকিৎসক এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন, সে মারা গেছে।”
জহিরুলের হাতে-পায়ে আঘাতের চিহ্নের বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
এ ঘটনায় মনিরুলসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে বলে জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘খ’ সার্কেল) শেখ বিল্লাল হোসেন। তবে এ ঘটনায় বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
শেখ বিল্লাল বলেন, “নিহতের শরীরে ইনজেকশনের সুঁইয়ের খোঁচার মত কিছু চিহ্ন আছে। এছাড়া কিছু আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছে পুলিশ।”
“ময়নাতদন্তে প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ ও আঘাতের চিহ্নের বিষয়ে জানা যাবে,” বলেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।