‘গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করলেন’ ব্যাংকের এজেন্ট ও পোস্ট মাস্টার

সাতক্ষীরায় অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক এশিয়া কর্তৃপক্ষ।

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2023, 05:30 PM
Updated : 14 March 2023, 05:30 PM

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ও এক পোস্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

শাখার উদ্যোক্তা আতাউর রহমান এলিট ও তালা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্য এ অর্থ আত্মসাৎ করেন বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। এ ঘটনার পর তারা অন্যত্র বদলি হয়ে যান।

ব্যাংক এশিয়ার বিজনেস অফিসার শারাফাত হোসেন বলেন, “প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকা ব্যাংক থেকে খোয়া গেছে। গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছি।

“টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, জড়িতদের পরিবারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। তারা ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। যদি না পাওয়া যায় তাহলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঘোনা নারাণপুরের কাশেম খাঁর স্ত্রী আসমা বেগম বলেন, “তিন বছর আগে পোস্ট অফিসে ফিক্সড-ডিপোজিট করে তিন লাখ টাকা রেখেছিলাম।

“মেয়াদ শেষে ফের দুই ভাই-বোনের নামে তিন বছরের জন্য চার লাখ টাকা রাখার কথা বলি পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্যকে।”

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক এশিয়াতে ইজি ফরমের মাধ্যেমে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলেন পোস্ট মাস্টার।

“গত ৮ ফেব্রুয়ারি আমার ভাই সোহাগের নামে দুই লাখ এবং আমার নামে দুই লাখ টাকা জমা দিয়ে পোস্ট মাস্টারকে রশিদ দেখাই।”

তখন পোস্ট মাস্টার বলেন, দুদিন পরে বই নিয়ে যাবেন। দুদিন পরে গেলে বই এখনো আসেনি, আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে তিনি সময়ক্ষেপণ করেন বলে জানান এ ভুক্তভোগী।

এই ভুক্তভোগীর মতো একই কথা বলেন চরগ্রামের মৃত আলাউদ্দিন শেখের মেয়ে ফারজানা খাতুন ও তার মা আলেয়া বেগম।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি তাদের থেকেও একইভাবে এজেন্ট ও পোস্ট মাস্টার ভুয়া ভাউসারের মাধ্যমে নয় লাখ টাকা নিয়েছেন বলে তারা অভিযোগ করেন।

তাদের মতো একইভাবে টাকা জমা রাখতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন বলে শাহাপুর গ্রামের সুফিয়া বেগম, হরিশচন্দ্রকাটি গ্রামের মান্নান গাজীর স্ত্রী কামেলা বেগম, হাজরাকাটি গ্রামের নিমাই কুমার শীল অভিযোগ করেন।

স্থানীয়রা জানায়, ২০১৪ সালে আতাউর রহমান এলিট তালা পোস্ট অফিসের উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে ২০২০ সালে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট হিসেবে আর্থিক লেনদেন শুরু করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে আতাউর রহমান এলিটের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্য বলেন, “টাকা আত্মসাতের বিষয়টি মিথ্যা। গ্রাহকরা আমার কাছে এলে অনলাইনে ফরম পূরণের জন্য এলিটের কাছে পাঠাতাম।

“ওখানে লেনদেন করলে সেটা তাদের ব্যাপার। পোস্ট অফিসের সঙ্গে সরাসরি ব্যাংক এশিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”

তালা পোস্ট অফিসের বর্তমান পোস্ট মাস্টার মধুসূদন বাছাঢ় বলেন, “আমি সদ্য যোগদান করেছি। গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ব্যাপারে অনেকে অভিযোগ নিয়ে আসছে; কিন্তু কত টাকা আত্মসাৎ হয়েছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাইনি।”

এ বিষয়ে তালা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ব্যাংক এশিয়ার টাকা মিসিং হওয়ার কথা শুনেছি। তবে কোনও অভিযোগ পাইনি।”