ফেনীর সোনাগাজীতে চুরি ও হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া এক বৃদ্ধাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার রাতে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরডুব্বা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান সোনাগাজী মডেল থানার ওসি খালেদ হোসেন দাইয়্যান।
দণ্ডিত সফুরা খাতুন (৭০) ওই এলাকার মমতাজ উদ্দিনের স্ত্রী।
একই মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত সফুরা খাতুনের মেয়েজামাই সেলিম খান কারাগারে আছেন।
মামলার বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ২০১১ সালের ২৯ অক্টোবর মধ্যরাতে উপজেলার চরগণেশ গ্রামের দুবাই প্রবাসী নুর মোহাম্মদ সোহেলের বাড়িতে সবার খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে চুরির পরিকল্পনা করেন গৃহকর্মী সফুরা খাতুন। বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়লে সফুরা মেয়ের স্বামী সেলিম ঘরে ঢুকে গহনা ও নগদ টাকা চুরি করেন।
বিষয়টি টের পেয়ে চিৎকার করলে সেলিম দা দিয়ে কুপিয়ে প্রবাসীর মা আয়েশা আক্তার নিলুফা, বোন তাহমিনা আক্তার ও বোনের মেয়ে আসমা আক্তার তানিশাকে জখম করেন।
তিনি বলেন, পরে প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ৩০ অক্টোবর সকালে শিশু তানিশার মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে ওইদিন দুবাই থেকে দেশে ফিরে সোনাগাজী মডেল থানায় হত্যা ও চুরির মামলা করেন প্রবাসী সোহেল।
২০১৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর সিআইডির পরিদর্শক নুরুল ইসলাম দুজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১৪ সালের ৫ মে আদালত মামলার বিচারকার্য শুরু করে।
ওসি আরও বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল ফেনীর অতিরিক্ত দায়রা জজ সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফ আসামি সেলিম খানের উপস্থিতিতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং একই মামলায় শাশুড়ি সফুরা খাতুনের অনুপস্থিতিতে তাকে যাবজ্জীবন ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি বৃদ্ধা সফুরা খাতুনকে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।