বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের কুপিয়েছে হেলমেটধারীরা

আহত সিফাত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। তিনি ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি পদ প্রত্যাশী।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2023, 08:59 AM
Updated : 24 Jan 2023, 08:59 AM

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবাসের কক্ষে ঢুকে তিন শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে হেলমেট ও মুখোশ পরিহিতরা।

মঙ্গলবার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ৪০১৮ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মশিউর রহমান।

আহতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত, লোকপ্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জি এম ফাহাদ, ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাদ।

এদের মধ্যে গুরুতর আহত সিফাত ও ফাহাদকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। জিহাদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই বাংলা হলের প্রভোস্ট আবু জাফর বলেন, “গণিত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সিফাত ও লোকপ্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফাহাদের উপর অতর্কিত হামলায় তারা গুরুতর আহত হয়েছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করা যায়নি। পুরো বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখছে।”

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আহতদের মধ্যে সিফাতের সারা শরীরে কোপানোর জখম রয়েছে। তার একটা হাত ভেঙে গেছে। তাকেসহ আরেকজনকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”

হামলার বিষয়ে আহত সিফাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভোর রাত সাড়ে ৫টার দিকে হেলমেট ও মুখোশ পরে ১০-১৫ জনের একটি দল তার কক্ষে প্রবেশ করে। তাদের সবার হাতে ছিল রামদা, বগি দাসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র, হকিস্টিক, জিআই পাইপ ও রড। তারা কক্ষে প্রবেশ করে আমাদের তিনজনকে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে-কুপিয়ে আহত করে ফেলে রেখে গেছে।”

হামলার কারণ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই জানিয়ে ছাত্রলীগের সক্রিয় এই কর্মী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। তবে তিনি ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্বের পদ প্রত্যাশী।

হামলাকারীদের মধ্যে কয়েকজনকে চিনতে পেরেছেন দাবি করে সিফাত অভিযোগ করেন, রিয়াজ মোল্লার নেতৃত্বে হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বহিরাগতরাও ছিলো।

তিনি আরও বলেন, হামলায় তার দুই পা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত-জখম হয়েছে। হাতের তিনটি আঙ্গুল পিটিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। হামলাকারীরা তার দুই পায়ের রগ কাটারও চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ সিফাতের।

ওই হলের আবাসিক ছাত্র জিয়া বলেন, সাড়ে ৫টার দিকে ফজরের আযানের পর হঠাৎ করে ১০-১৫ জন হেলমেট পরিহিত অবস্থায় হলে প্রবেশ করে। তারা সব কক্ষ বাইরে থেকে আটকে দেয়।

“পরে তারা সিফাতকে কক্ষ থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে পিটিয়ে ও কুপিয়ে এবং জিএম ফাহাদের হাত ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি তাকে কুপিয়ে জখম করে চলে যায়।”

এদিকে হামলার সঙ্গে জড়িত নন দাবি করে রিয়াজ মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, “সিফাত বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় জমি দখল থেকে শুরু নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। বহু মানুষ তার ওপর ক্ষিপ্ত। এখন কারা তার ওপর হামলা করেছে সেটা বলতে পারবো না।”

বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই মশিউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কারা হামলা করেছে এখনও নিশ্চিত নই। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। ফুটেজ পেলে হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হবে।”

এর আগেও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।