বেশকিছু দিন আগে শাবকদের জন্ম হলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পার্ক কর্তৃপক্ষ সোমবার প্রাণীগুলোর জন্মের তথ্য প্রকাশ করে।
Published : 23 Oct 2023, 09:33 PM
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে তিন প্রাণী প্রজাতির পরিবারে পাঁচ শাবকের জন্ম হয়েছে।
বেশকিছু দিন আগে শাবকদের জন্ম হলেও নিরাপত্তার বিবেচনায় পার্ক কর্তৃপক্ষ সোমবার প্রাণীগুলোর জন্মের তথ্য প্রকাশ করে।
সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান বলেন, পার্কে জেব্রা পরিবারে দুই শাবকের জন্ম হয়েছে। নতুন অতিথিদের নিয়ে পার্কে জেব্রার সংখ্যা ২৯টিতে দাঁড়াল। এর মধ্যে ১৬টি পুরুষ ও ১৩টি মাদি।
পার্ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ সেপ্টেম্বর একটি এবং ১৩ সেপ্টেম্বর একটি শাবকের জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে এখন পর্যন্ত শাবকগুলো সুস্থ আছে।
সাফারি পার্কে আফ্রিকান প্রাণী কমন ইল্যান্ড পরিবারেও নতুন অতিথি এসেছে। গত ৯ অগাস্ট এ শাবকের জন্ম হয়। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মা প্রাণীটি শাবককে ঝোপের আড়ালে রাখে নিরাপত্তার জন্য। শাবকটি হাঁটাচলা শেখার পর মায়ের সঙ্গে সে বাইরে বেরিয়ে আসে।
বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান বলেন, কমল ইল্যান্ড আফ্রিকান প্রাণী। আফ্রিকা মহাদেশেই মূলত এদের বিচরণ।
একটি মাদি কমন ইল্যান্ড প্রাপ্তবয়স্ক হলে ওজন হয় ৩০০-৬০০ কেজি। পুরুষের ওজন হয় ৪০০-৯০০ পর্যন্ত। এদের দৈর্ঘ্য মাদির ক্ষেত্রে ৮০-১১০ ইঞ্চি ও পুরুষের ৯৪-১৩৬ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। এরা মূলত তৃণভোজী।
সাফারি পার্ক প্রতিষ্ঠার পর ২০১৫ সালের শেষের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে একটি পুরুষ ও একটি মাদি কমন ইল্যান্ড আনা হয়। ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি এ পরিবারে প্রথমবারের মত শাবকের জন্ম হয়।
বর্তমানে পার্কে নতুন শাবক নিয়ে কমন ইল্যান্ড পরিবারের সংখ্যা ৪-এ দাঁড়াল। যার মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি মাদি।
এক সময়ে বাংলাদেশের বনাঞ্চল অবাধ বিচরণ করা নীলগাই প্রায় ৮০ বছর আগে প্রাকৃতিক বন থেকে হারিয়ে যায়। ২০১৯ সালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জব্দ হওয়া বেশ কয়েকটি নীলগাই উদ্ধার করে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে রাখা হয়। সেখান থেকেই এখন জন্ম হচ্ছে নতুন অতিথির।
গত ৭ অক্টোবর এ পার্কের প্রাকৃতিক পরিবেশে একটি মাদি নীলগাই দুটি শাবকের জন্ম দেয়। এর আগে ২০২১ সালের অগাস্টে প্রথমবারের মত দুটি শাবকের জন্ম হয়েছিল। নতুন শাবক নিয়ে পার্কের নীলগাই পরিবারের সদস্য সংখ্যা আটটিতে দাঁড়াল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ অনুকূলে থাকায় ও সঠিক পরিচর্যায় নিয়মিত প্রাণীর জন্ম হচ্ছে পার্কে। প্রতিটি প্রাণী শাবকের জন্মের পর আমরা বিশেষ নজরদারি করে থাকি। মা ও শাবকের পুষ্টির কথা বিবেচনায় আমরা বিশেষ খাবারও পরিবেশন করি। নতুন শাবকগুলো এখন পর্যন্ত সুস্থ রয়েছে, মায়ের সাথে ঘুরছে আপন মনেই।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সাফারি পার্কে প্রাণী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করেছি। সঠিক খাবার ও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী হতে নিয়মিত শাবকের জন্ম হচ্ছে। দেশি-বিদেশি নানা প্রাণীর সমাহার থাকায় দর্শনার্থীদের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এখন পার্কটি।”
তিনি আরো বলেন, “একটি ভালো খবর হলো আমাদের জেব্রা পরিবারে যে ক্ষতি অতীতে হয়েছিল সে সংখ্যাটা আমরা কাটিয়ে উঠেছি।”