কুষ্টিয়ায় দুই হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

২০১৬ সালে হোমিও চিকিৎসক মীর সানাউর রহমান আর ২০১৭ সালে ব্যবসায়ী রিয়াজুল হত্যা মামলায় আদালত এই রায় দেয়।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 August 2022, 11:26 AM
Updated : 11 August 2022, 11:26 AM

কুষ্টিয়া সদর ও কুমারখালী উপজেলার দুটি হত্যা মামলায় ছয়জনকে যাবজ্জীবন দিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত ১-এর বিচারক তাজুল ইসলাম ও বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আশরাফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতের পিপি অনুপকুমার নন্দী মামলার নথির বরাতে জানান, সদর উপজেলার বজলুর রহমানের ছেলে হোমিও চিকিৎসক মীর সানাউর রহমানকে (৫৭) ২০১৬ সালের ২০ মে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়। আসামিরা চাপাতিসহ রড ও লাঠিসোটা দিয়ে তাদের উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করেন। স্থানীয়রা তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া সে ঘটনায় আরও একজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মীর আনিসুর রহমান কুষ্টিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলা তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল কুষ্টিয়া থানার এসআই আজিজুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র দেন। প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে সাম্প্রদায়িক উস্কানি থেকে কতিপয় ধর্মান্ধ ব্যক্তিদের দ্বারা হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত চার আসামি হলেন সদর উপজেলার খাজানগর গ্রামের বাসিন্দা মজিবর রহমান ব্যাপারির ছেলে আজিজুল ইসলাম (২৫), আব্দুর রহমান ওরফে কালা কাজীর ছেলে সাইজুদ্দিন কাজী (৩০), কবুরহাট দোস্তপাড়ার আব্দুস সামাদ সরদারের ছেলে জয়নাল সরদার (৩৮) ও খাজানগর মাদ্রাসাপাড়ার আজিজুল হক খানের ছেলে সাইফুল ইসলাম খান (৩০)।

যাবজ্জীবন ছাড়াও রায়ে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে আদালত। জরিমানা না দিলে তাদের আরও এক বছর কারাগারে থাকতে হবে।

অপরদিকে ২০১৭ সালের ২৩ এপ্রিল কুমারখালী উপজেলার বাড়াদি গ্রামের রিয়াজুল (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা মামলায় আরও দুইজনকে যাবজ্জীবন দিয়েছে কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালত।

আদালতের পিপি রফিকুল ইসলাম মামলার নথির বরাতে জানান, উচ্চশব্দে গানা বাজানোকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে রিয়াজুলকে হামলা চালিয়ে হত্যা করেন প্রতিবেশীরা। ধারালো চাকুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রিয়াজুল।

এ ঘটনায় তার ছেলে শহিদুল ইসলাম কুমারখালী থানায় নয়জনের নামোল্লেখসহ হত্যা মামলা করেন। মামলা তদন্ত শেষে কুমারখালী থানার এসআই দীলিপ কুমার বিশ্বাস একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগপত্র দাখিল করেন আদালতে।

বিচারে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন সাজা দেয় আদালত।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন একই গ্রামের আইনুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে সিফাত বিশ্বাস (৫০) ও তার ভাতিজা ওয়াসিম আলি (৩৭)।

একই সঙ্গে আদালত তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। জরিমানা না দিলে তাদের আরও ছয় মাস কারাগারে রাখার আদেশও দিয়েছে আদালত।

এ মামলার অন্য সাত আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।