বরিশালে নবজাতককে হত্যার অভিযোগ, মা গ্রেপ্তার

পরপর তৃতীয় সন্তানও মেয়ে হওয়ায় মা তাকে হত্যা করেন, পরিবার ও পুলিশের ভাষ্য।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2023, 12:49 PM
Updated : 20 April 2023, 12:49 PM

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় জন্মের অল্প সময় পরই কন্যাশিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। পুলিশ মাকে গ্রেপ্তার করেছে।

বৃহস্পতিবার ভোররাতে উপজেলার পূর্ব পয়সা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে আগৈলঝাড়া থানার এসআই আলী হোসেন জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তার রুমা বেগম (২৪) পয়সা গ্রামের দিনমজুর মিলন বখতিয়ারের স্ত্রী।

এসআই আলী হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছেলের আশায় তৃতীয়বার সন্তান নেয় এই দম্পত্তি। বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৪টা ১৫ মিনিটের দিকে স্বাভাবিকভাবে কন্যা শিশুর জন্ম হয়। সাড়ে ৫টার দিকে তাকে গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করেন তা মা। শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

“হত্যার কথা মা স্বীকার করেছে। তাকে গ্রেপ্তার করে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।”

আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজাহারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রুমার ৫ বছর ও ১৮ মাস বয়সী আরো দুই মেয়ে রয়েছে। শিশুটির মুখ চেপে ধরে ও রশি পেঁচিয়ে হত্যা করেছে তার মা।

“মা পুলিশের কাছে হত্যার স্বীকার করেছেন। এখন আদালতে জবানবন্দি দেবেন।”

এ ঘটনায় মিলন বখতিয়ার বাদী হয়ে স্ত্রীকে আসামি করে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

স্থানীয়রা সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মিলনের স্ত্রী রুমা খানম পুনরায় তৃতীয় কন্যা সন্তানের জম্ম দেন। প্রতিবেশী সাদিয়া বেগম রুমার কন্যা সন্তান দেখতে আসেন। তিনি সন্তান অচেতন অবস্থায় দেখতে পেলে মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ পায়।

শিশুটির মা রুমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আগে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া সন্তানও মেয়ে হওয়ায় ক্ষোভে-দুঃখে তাকে হত্যা করেছেন।

ধাত্রী ঝর্না বেগম (জডু) সাংবাদিকদের বলেন, “ফজরের আযানের ১০মিনিট আগে রুমা খানমের একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হয়। সন্তান কান্নাকাটি করলে তাকে পানি খাওয়ানো হয়। নবজাতক কন্যাসন্তান সুস্থ রেখে আমি বাড়ি চলে আসি। এরপর তার মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারি।”

মিলন সাংবাদিকদের বলেন, ছয় বছরের দাম্পত্য জীবনে পাঁচ বছর বয়সী মারুফা ও ১৮ মাস বয়সী সোহানা নামের দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। আবার মেয়ে হওয়ায় মেনে নিতে না পেরে মনঃক্ষুণ্ন হন। স্বামীসহ পরিবারের লোকজন রুমাকে সান্তনাও দেন।

“তবুও পাটের রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে এবং মুখ চেপে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে রুমা।”