সৌদিতে দুর্ঘটনায় নিহত: গাজীপুরের রনি দেশ ছাড়েন ৪ দিন আগে

নিহতের বাবা বলেন, “সরকারের কাছে আবেদন, তারা মরদেহ শনাক্ত করে তাড়াতাড়ি যেন ছেলের লাশটা আমার কাছে পাঠায়।”

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2023, 12:55 PM
Updated : 29 March 2023, 12:55 PM

সৌদি আরবে সোমবার সন্ধ্যায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত গাজীপুরের টঙ্গীর ইমাম হোসেন রনি চারদিন আগে দেশ ত্যাগ করেছিলেন।    

৪০ বছর বয়সী রনি টঙ্গী পশ্চিম থানার বড় দেওরা এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে।  

গত সোমবার সন্ধ্যায় সৌদি আরবের আসির প্রদেশে ওমরাহ যাত্রী বহনকারী একটি বাস উল্টে আগুন ধরে গেলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ২৪ জন নিহত হন। এর মধ্যে ১৮ বাংলাদেশির একজন টঙ্গীর ইমাম হোসেন রনি। এ ঘটনায় আরও ২৯ জন আহত হন।

রনির বোন হাজেরা আক্তার সীমা জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুই মাসের ছুটিতে দেশে এসে ৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় বিয়ে করেন তার ভাই।

তিনি আরও জানান, ১১ বছর আগে তার ভাই প্রথম বিয়ে করেছিলেন। তাদের সংসারে এক ছেলের জন্ম হয়। বিয়ের বছর তিনেক পর রনি সৌদি আরব চলে যান। দীর্ঘদিন দেশে না ফেরায় তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

রনির ছোট ভাই হোসেন আহমেদ জসিম বলেন, “গত শনিবার ভাইকে বিমান বন্দর দিয়ে আসি। ঠিকঠাক মত তিনি সৌদি পৌঁছেন। ওমরাহ পালন শেষে ১ এপ্রিল কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ২৭ তারিখ সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান।”

নিহতের বাবা আব্দুল লতিফ জানান, সৌদি আরবের আবা এলাকায়  একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন রনি।

“সরকারের কাছে আমার আবেদন, তারা মরদেহ শনাক্ত করে তাড়াতাড়ি যেন ছেলের লাশটা আমার কাছে পাঠায়।”

তিন ভাই, এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন ইমাম হোসেন রনি। বড় ভাই আলী হোসেন, ছোট ভাই হোসেন আহমেদ জসীম এবং বোন হাজেরা আক্তার সীমা।  

দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবরে তার স্বজনদের আহাজারি থামছে না।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে হাজেরা আক্তার বলেন, “আমার ভাইয়ের সাথে শেষ কথা হয় সোমবার ইফতারের ১০ মিনিট আগে। ভাই বলেছিল, ওমরাহ শেষে কাজে যোগদান করবে। বাংলাদেশে ইফতারের সময় হয়ে গেছে বলে ফোন রেখে দেয় রনি। তারপর আমরা তার মৃত্যুর সংবাদ পাই।”

রনির নববিবাহিতা স্ত্রী শীমু আক্তার মুর্ছা যেতে যেতে বলেন, “আমার স্বামীকে তোমরা আমার কাছে এনে দাও। আমি তাকে নিয়ে থাকতে চাই। আমি তো এতো টাকা-পয়সা চাইনি। তোমরা আমার স্বামীকে এনে দাও। আমি তাকে ছাড়া বাঁচবো না।”

টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি শাহ আলম জানান, নিহতদের লাশ বাংলাদেশে আসার পর সরকারি নির্দেশনা অনুসারে সব কাজ সম্পন্ন করা হবে।