“নৌকার বিপক্ষে ভোট করা কষ্টদায়ক এবং যন্ত্রণাদায়ক। তাই প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
Published : 16 Dec 2023, 11:17 PM
আওয়ামী লীগের টিকেট না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করা রাজশাহী-৩ আসনের টানা দুইবারের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
পবা ও মোহনপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনের সংসদ সদস্য শনিবার রাতে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তিনি নির্বাচন করবেন না। তাই প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রোববার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন করবেন।
আয়েন উদ্দিন বলেন, “ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। আমি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারি না। কী করে নৌকার বাইরে ভোট চাইব। নৌকার বাইরে ভোট চাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। নৌকার বিপক্ষে ভোট করা কষ্টদায়ক এবং যন্ত্রণাদায়ক। তাই প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে দুইবার দলীয় মনোনয়ন দিয়ে এমপি বানিয়েছেন। এত কম বয়সে এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। এরপর কী করে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আমি নির্বাচন করতে পারি। মানুষের বিবেক বলেও তো একটা কথা আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে আমার বিবেকের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। যেটা আমি করতে পারি না। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করলে এই কলঙ্ক মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বয়ে বেড়াতে হবে।
আয়েন উদ্দিন বলেন, “দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে ঢাকা থেকে রাজশাহী ফেরার দিন বিমানবন্দরে প্রচুর নেতাকর্মী জড়ো হন। তারা আমাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের সান্ত্বনা দিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কথা বলেছিলাম।
মনোনয়নপত্র জমা দিলেও নির্বাচনি কর্মকাণ্ড চালাননি বলেও জানান আয়েন উদ্দিন।
২০১৪ সালে রাজশাহী-৩ আসনে প্রথম দলীয় মনোনয়ন পেয়ে চমক দেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আয়েন উদ্দিন। সেবার দলের মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য মেরাজ উদ্দিন মোল্লার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে জেতেন তিনি।
এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয়বার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলনকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন আয়েন উদ্দিন।
এ আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি এবার প্রথম দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।
আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, “দলীয় সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে আয়েন উদ্দিন একজন রাজনৈতিক নেতার মতই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ তার বয়স কম। তার ভবিষ্যৎ রয়েছে। আমি আশা করি, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে ১৮ ডিসেম্বর থেকে তিনি নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচার চালাবেন।”
এর আগে ৭ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান। তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।
দুর্গাপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত তার আসনে এবার দলীয় মনোনয়ন পান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা।