তিন দিনে ৯ ইউনিটে কমিটি, ময়মনসিংহে মুখোমুখি ছাত্রলীগ

বৃহস্পতিবার আনন্দ মোহন কলেজ ক্যাম্পাসে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হাতবোমার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2022, 08:58 AM
Updated : 9 Dec 2022, 08:58 AM

ময়মনসিংহে সম্মেলন ছাড়াই তিন দিনে ছাত্রলীগের নয়টি ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করার পর জেলাজুড়ে সংগঠনটির দুপক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। ঘটছে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনা। 

‘অনৈতিক কার্যকলাপে’ জড়িত থাকার অভিযোগে গত সেপ্টেম্বরে অব্যহতি পাওয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরকে ৬ ডিসেম্বর তার পদে পুনর্বহাল করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। 

এর আগেই ৩ ডিসেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি জেলার নয়টি ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করেন। সেগুলো হচ্ছে- ময়মনসিংহ সদর, ফুলবাড়িয়া, গৌরীপুর, ত্রিশাল, ত্রিশাল পৌর, ভালুকা, ঈশ্বরগঞ্জ, ঈশ্বরগঞ্জ পৌর, মুক্তাগাছার কমিটি। 

এরপর থেকেই জেলাজুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার দুপুরে আনন্দ মোহন কলেজ ক্যাম্পাসে দুপক্ষ একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে। 

দুপক্ষের পরস্পরবিরোধী স্লোগানের একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণ ঘটানো হয় হাতবোমার। এতে কমপক্ষে তিন ছাত্রলীগ নেতা আহত হন। তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  

এ বিষয়ে আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শেখ সজল বলেন, “দীর্ঘ দুই বছর পর আমাদের কমিটি দিয়েছে। তাই, আমরা নেতাকর্মীরা একসঙ্গে স্লোগান দিয়েছি। তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে।” 

কেউ যদি হামলা করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তাহলে সাধারণ ছাত্রদের রক্ষায় তারা প্রস্তুত আছেন বলে জানান ছাত্রলীগের এই নেতা। 

এদিকে, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাহফুজুল আলম ফাহাদ বলেন, “আমরা মুখোমুখি অবস্থানে নেই। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি অর্থের বিনিময়ে কমিটি দেওয়ায় তাদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করছি। 

“এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটি হুমায়ুন কবিরের প্রত্যাহার আদেশ বাতিল করে আবারও তাকে জেলার সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্বহাল করেছে। দ্রুত আমরা তাকে স্বপদে দেখতে চাই।” 

এ ছাড়া কমিটি ঘোষণা করার পর থেকে জেলার মুক্তাগাছা ও গৌরীপুর উপজেলায়ও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।  

এ বিষয়ে মুক্তাগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুভ দে বলেন, “ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কোনো কমিটি দিতে পারেন না।” 

ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন কমিটি নিয়ে বাণিজ্য করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি। 

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, “আমি স্বপদে বহাল হওয়ার পরেও তাড়াহুড়া করে সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি মিলে নয়টি কমিটি দিয়েছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও নিয়মবর্হিভূত।” 

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন বলেন, “আমরা অবৈধ কোনো কমিটি দেইনি। কারণ, হুমায়ুন কবির ৬ ডিসেম্বর পদবি ফিরে পেয়েছেন। আমরা ২ তারিখ থেকে ৫ তারিখ রাত ১২টার আগেই কমিটি ঘোষণা করেছি।” 

কমিটি নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “অর্থের বিনিময়ে কোনো কমিটি দেওয়া হয়নি। আর্থিক সুবিধা নিয়ে কমিটি দিয়েছি এটা কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে তাহলে যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব।” 

কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, বৃহস্পতিবার টাউন হল এলাকায় ছাত্রলীগের দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় একজন আহত হয়েছে।