রস চুরি করলেও সমস্যা নেই। সমস্যা হলো হাঁড়ি নিয়ে। কারণ বর্তমানে কালো রঙের হাঁড়ি পাওয়া যায় না- বলেন দীপক।
Published : 02 Feb 2023, 05:48 PM
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় চুরি ঠেকাতে খেজুর রসের হাঁড়ি শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করেছেন এক গাছি। হাড়ির দুষ্প্রাপ্যতায় তিনি শিকল ও তালা লাগিয়েছেন হাড়ির দামের দ্বিগুণের বেশি খরচ করে।
উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামের গাছি দীপক মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার দুটি গাছ থেকে এ বছর রসসহ চারটি হাঁড়ি চুরি হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে তিনি শিকল দিয়ে হাঁড়ি তালাবদ্ধ করেছেন।
দীপক বলেন, রস চুরি করলেও সমস্যা নেই। সমস্যা হলো হাঁড়ি নিয়ে। কারণ বর্তমানে কালো রঙের হাঁড়ি পাওয়া যায় না। লাল রঙের হাঁড়ি পাওয়া যায়। কিন্তু লাল রঙের হাঁড়ি পূজায় ব্যবহার হওয়ায় অনেকে এই হাঁড়ির রস নিতে চান না।
তিনি বলেন, একেকটি হাঁড়ির দাম ৮০ টাকা। চোরের হাত থেকে হাঁড়ি রক্ষায় ৮০ টাকার দামের তালা ও ১২৫ টাকা দামের শিকল কিনেছেন। দুইটি গাছে মোট ৪১০ টাকা দিয়ে দুইটি তালা ও শিকল কিনে তালা দিয়ে রাখেন।
পৌষের মাঝামাঝি থেকে গ্রামের ১৭টি খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করছেন এই গাছি।
প্রয়াত বাবা দেবেন্দ্র নাথ মজুমদারের হাত ধরেই এই পেশায় যুক্ত হয়েছেন জানিয়ে দীপক জানান, রস সংগ্রহ করে তা দিয়ে গুড় তৈরি করে ও কাঁচা রস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। এ থেকে যে টাকা আয় হয়, তা দিয়েই স্ত্রী কনিকা, ছেলে দিগন্ত ও মেয়ে জয়িতাকে নিয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করেন।
বর্তমানে এক হাঁড়ি খেজুরের রস ৩০০ টাকায় ও প্রতি কেজি গুড় ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে কাঁচা খেজুরের রসে নিপাহ ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই যারা কাঁচা রস খেতে চায়, তাদের না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বাদুড় যাতে রস খেতে না পারে সেজন্য জাল দিয়ে হাঁড়ির মুখ পেচিয়ে দেন তিনি। কিন্তু বাদুড় সেই জাল ছিড়েও রস খেতে পারে। তাই সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে বলেন দীপক।