ফেনীতে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে ১৯৯৩ সালের ২৭ জুন বড় ভাইকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ছোট ভাই আবুল খায়ের ও আব্দুল কাদের।
Published : 04 May 2023, 04:46 PM
পালিয়ে ছিলেন ৩০ বছর, ভারত পালাতে গিয়ে বন্দি ছিলেন শিলং কারাগারে, এরপর তৈরি করেছেন ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র। তবুও শেষরক্ষা হল না যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবুল খায়েরের।
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে বড় ভাইকে কুপিয়ে হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত এই আসামিকে বুধবার পটিয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
আবুল খায়ের ছাগলনাইয়া উপজেলার দক্ষিণ বল্লভপুর গ্রামের অলি আহম্মেদের ছেলে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর আবুল খায়ের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থেকে নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পেশায় আত্মগোপনে ছিলেন।
সাদেকুল ইসলাম জানান, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে ১৯৯৩ সালের ২৭ জুন বড় ভাই আবু তাহেরকে ধারালো দা দিয়ে ঘাড়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে ছোট দুই ভাই আবুল খায়ের ও আব্দুল কাদের।
এ ঘটনায় নিহতের বোন আমেনা বেগম বাদী হয়ে ছাগলনাইয়া থানায় আবুল খায়ের ও আব্দুল কাদেরকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পরবর্তীতে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হয়।
বিচার চলাকালে আসামিরা জামিনে গিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। আদালত পুলিশের তদন্ত এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য শেষে আসামিদের অনুপস্থিতিতে আবুল খায়ের এবং আব্দুল কাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, জামিনে গিয়ে আবুল খায়ের চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা এলাকায় ২ বছর পালিয়ে থাকেন। পরবর্তীতে তিনি ভারত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পথে বিএসএফের কাছে গ্রেপ্তার হয়ে শিলং কারাগারে ছয় মাস কারাভোগ করেন।
পরে তাকে বাংলাদেশে পাঠালে সিলেটে ছয় মাস অবস্থানের পর চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানার কমলাছড়ি এলাকায় তিন বছর বসবাস করেন।
গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে মিজান নামে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেন। এরপরে তিনি দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে মিজান পরিচয়ে চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানার কামাল বাজার এলাকায় বসবাস করছিলেন।
এ দীর্ঘসময় পালিয়ে থাকতে আবুল খায়ের দিনমজুরি, অটোরিকশা চালানোসহ বিভিন্ন পেশায় যুক্ত ছিলেন বলেও জানান স্কোয়াড্রন লিডার সাদেকুল ইসলাম।
এই র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, বুধবার আসামিকে পটিয়া থেকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে খায়ের নিজের নাম ও পরিচয় নিশ্চিত করে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। তাকে বৃহস্পতিবার ছাগলনাইয়া থানায় হস্তান্তর ও পরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে।
এ মামলার সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামিকেও গ্রেপ্তারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান র্যাব ফেনী ক্যাম্পের অধিনায়ক।