নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ পোষণ করা যুক্তরাষ্ট্রের জ্ঞানের অভাব: মোমেন

“এই দেশটা হচ্ছে ডেমোক্রেসির একটা কেন্দ্রবিন্দু।”

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2023, 03:47 PM
Updated : 8 Jan 2023, 03:47 PM

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ পোষণ করা যুক্তরাষ্ট্রের জ্ঞানের অভাব বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এ নিয়ে কারো ‘মাতব্বরি’ করে পরামর্শ দেওয়ারও দরকার নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রোববার দুপরে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-গেট কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “অন্যরা মাতব্বরি করতে পারেন। কিন্তু দে শ্যুড ফলো আস। আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করেছে। সুতরাং ওই সম্পর্কে উনারা যে বিভিন্ন সন্দেহ পোষণ করেন, তাদের ইতিহাস সম্পর্কে অভিজ্ঞতার অভাব, জ্ঞানের অভাব।“

“এবং তারা হয়তো জিনিসগুলো ঠিকমতো পর্যবেক্ষণ করছেন না বলে অনেক সময় অনেকগুলো অবান্তর বক্তব্য দিয়ে থাকেন। আমি আশা করবো, তারা আমাদের ইতিহাস পড়ুক, আর আমাদের চলার পথটা দেখুক। এই দেশটা হচ্ছে ডেমোক্রেসির একটা কেন্দ্রবিন্দু।”  

আব্দুল মোমেন বলেন, “আমেরিকার ৭২ পার্সেন্ট জনগণ মনে করে আমেরিকার ডেমোক্রেসি খুব দুর্বল। আর দেশটির রিপাবলিকান পার্টির ৭৭ পার্সেন্ট মনে করে যে, গত প্রেসিডেন্ট ইলেকশন ছিল ফ্রড এবং দে হ্যাভ স্টুলেন দ্য ইলেকশন। এই রকম তাদের মন-মানসিকতা। আমাদের দেশেও কিছু লোক এই ধরনের আছে।”

বাংলাদেশের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও স্বতঃস্ফূর্ত উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ওই দেশে অ্যাভারেজ কতো লোকে ভোট দেয়? পঞ্চাশের নিচে ভোট দেয়। আর আমাদের দেশে ৭২, ৮০, ৯০ পার্সেন্ট লোকে ভোট দেয়। ওইসব দেশে ইলেকশনের এক মাস আগে ক্যাম্পেইন শুরু হয়, আমাদের এক বছর আগেই শুরু হয়ে যায়।“

আগামী জাতীয় নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষণ করতে চাইলে সেই অনুমতি দেওয়া হবে জানিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, “উই হ্যাভ নাথিং টু হাইড।”   

তিনি বলেন, “আমাদের (দেশের) জন্ম হয়েছে ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, তুলে ধরার জন্য। এই দেশের প্রত্যেক মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এই প্রিন্সিপলগুলো আছে। সো, আমাদেরকে অন্যরা মাতব্বরি করে এই পরামর্শ দেওয়ার দরকার নাই। উনারা আয়নায় নিজেদের মুখ দেখুক।”

“তবে আমরা অঙ্গীকার করেছি, প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার করেছেন যে, আগামী নির্বাচন স্বচ্ছ, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক হবে। সবাইকে নিয়ে আমরা করতে চাই, যারা নির্বাচনে আসবেন।”

এ সময় বাংলাদেশের পাসপোর্টের মান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বিমানবন্দরে ই-গেট কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে আমাদের পাসপোর্টের মান আরও বৃদ্ধি পাবে। তখন বহু দেশে যাওয়ার জন্য আমাদের ভিসার দরকার হবে না। অনেক দেশ সাগ্রহে আমাদের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি করতে চাচ্ছে। এটা ইতিবাচক।” 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকলে দেশ অনেক উন্নত অবস্থানে পৌঁছাবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “দেশে পাসপোর্ট পেতে কিছু ভোগান্তি পোহাতে হয়। আমরা পাসপোর্টের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সম্প্রতি আমাদের পাসপোর্টের সেবা অনেক উন্নত হয়েছে, আগের মতো বছরখানেক বসে থাকতে হয় না। কিছু কিছু যেগুলো অবাঞ্ছিত, সেগুলোতে সময় লাগে। অধিকাংশই পাসপোর্ট পেয়ে যান।”

ই-গেট কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নূরুল আনোয়ার, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মহের উদ্দিন শেখ, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান।