কুষ্টিয়ায় নিখোঁজের ২২ দিন পর ‘ছিনতাইকারী চক্রে’র সদস্যদের দেখিয়ে দেওয়া স্থান থেকে এক ইজিবাইক চালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় শহরের পূর্ব মজমপুরের বানী সিনেমা হলের পেছনে একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন আমবাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) পলাশ কান্তি।
নিহত ইজিবাইক চালকের নাম হিরু, তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতি গ্রামের বশির উদ্দিনের ছেলে।
লাশের হদিস দেওয়া ‘ছিনতাই চক্রে’র সদস্যের নাম জনি (৩০)। তার বাড়ি একই উপজেলার বারখাদা গ্রামে।
গত ২ অগাস্ট ইজিবাইক নিয়ে প্রতিদিনকার মতো কাজে বেরিয়ে নিখোঁজ হন হিরু। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করে পরিবার।
সেখানে বলা হয়, প্রতিদিনের মতো কাজে বের হলেও রাতে আর বাড়ি ফেরেননি হিরু। পরিবারের সদস্যরা আশপাশের সম্ভাব্য আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি খোঁজ করে না পেয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
এরপর সাতদিন পার হলেও তার খোঁজ না মেলায় হিরুর সন্ধানে মানববন্ধন করেন পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা।
কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) পলাশ কান্তি বলেন, “এ মাসের শুরুর দিকে জগতির চালক হিরু ইজিবাইকসহ নিখোঁজ এমন একটি জিডির সূত্র ধরে পুলিশের বিভিন্ন শাখা মাঠে নামে। দুইদিন আগে মিরপুর থানা পুলিশ অন্য একটি মামলায় জনিকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এক পর্যায়ে জনি স্বীকার করে যে, ইজিবাইক চুরি ও ছিনতাইয়ের একটি চক্র আছে তার।
“তারাই ২ অগাস্ট সন্ধ্যায় ইজিবাইক চালক হিরুকে বাসার মালামাল বহন করার কথা বলে ভাড়া করে। বানী সিনেমা হলের পেছনের একটি বাসার গেইটের সামনে ইজিবাইকটি রেখে জনি এবং তার আরও দুই সহযোগী হিরুকে বাসার ভেতর থেকে মালামাল নেওয়ার জন্য একটি কক্ষে ঢোকায়। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা দুই সহযোগী আচমকা হিরুকে চেপে ধরে মুখ বেঁধে ফেলে।”
জিজ্ঞাসাবাদে জনি আরও জানিয়েছে, হিরুর দুই হাত ও পা কাপড় দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। এরপর লাশটি ওই বাসার সীমানার ভেতর মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখে। পরে ইজি বাইকটি পাবনায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেয়।
গ্রেপ্তার জনির দেখিয়ে দেওয়া স্থান থেকেই হিরুর লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তিনি জানান, এ ছিনতাই চক্রটির মূল হোতাসহ জড়িত সবাইকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।