সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ ৩ হাজার কুইন্টাল মধু ও ৮০০ কুইন্টাল মোম সংগ্রহের আশা করছে।
Published : 04 Apr 2023, 07:32 PM
সুন্দরবনে মধু আহরণ মৌসুম শুরু হয়েছে ১ এপ্রিল। তবে দাপ্তরিক জটিলতার কারণে নির্ধারিত তারিখের তিন দিন পর খুলনার কয়রা উপজেলার মৌয়ালরা বনে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে মৌয়ালদের হাতে সুন্দরবনের মধু সংগ্রহের অনুমতিপত্র তুলে দেওয়া হয় বলে কয়রার কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় জানান।
তিনি জানান, সুন্দরবনে প্রবেশে কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন থেকে ৫০টি নৌকাকে অনুমতিপত্র দেওয়া হয়েছে। অনুমতি পেয়েই সকাল থেকে দলবেঁধে কয়রার চার শতাধিক মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করেছেন।
বিলম্বে অনুমতিপত্র দেওয়ার বিষয়ে শ্যামা প্রসাদ বলেন, “দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় মৌয়ালদের আবেদনপত্র রেঞ্জ অফিস থেকে ছাড় করাতে একটু বিলম্ব হয়েছে।
“প্রতিটি নৌকাকে ১৫ দিনের জন্য মধু আহরণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এক নৌকায় ১০ থেকে ১২ জন বাওয়ালি অবস্থান করতে পারবেন।”
তিনি আরও বলেন, “একজন বাওয়ালি ১৫ দিনের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ কেজি মধু ও ১৫ কেজি মোম আহরণ করতে পারবেন।
“প্রতি কুইন্টাল মধুর জন্য ১ হাজার ৬০০ টাকা ও মোমের জন্য ২ হাজার ২০০ টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে।”
মৌয়ালদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি দলে ৭ থেকে ৯ জন সদস্য থাকেন। প্রথমপর্যায়ে তারা ১৫ দিন সুন্দরবনে অবস্থান করে মধু ও মোম সংগ্রহ করে ফিরে আসবেন। পরে আবার যাবেন। এভাবে ৩১ মে পর্যন্ত মধু ও মোম সংগ্রহ করবেন তারা।
মৌয়ালরা জানান, মৌসুমের শুরুতে সুন্দরবনে খলিশা ও গরান ফুলের মধু পাওয়া যায়। আর শেষের দিকে কেওড়া, গিউ ও ছইলা ফুলের মধু পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেশি দাম পাওয়া যায় খলিশা ফুলের মধুতে।
খুলনা বিভাগীয় বন সংরক্ষক আবু নাসের মোহাম্মাদ মহসীন হোসেন জানান, সুন্দরবনে নির্বিঘ্নে মধু আহরণের জন্য বন বিভাগের টহল জোরদার করা হয়েছে। বন্যপ্রাণীর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য দলের একজন মৌয়ালকে সবসময় চারিদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া প্রতিটি মৌচাকের কিছু অংশ রেখে মধু আহরণ করতে বলা হয়েছে। মৌচাকের যে স্থানে ডিম থাকে সেখান থেকে কিছুটা রেখে কাটলে মৌচাকের সংখ্যা চার গুণ বৃদ্ধি পাবে।
এবার মধুর পরিমাণ বাড়বে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “গত মৌসুমে তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মধুর পরিমাণ কম হয়েছিল। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ফুল ঝরে যায়। এতে ফুলে মধুর পরিমাণ কমে আসে। এ বছর মৌসুমের আগেই কয়েক দফা বৃষ্টি হয়েছে।”
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ থেকে তিন হাজার কুইন্টাল মধু ও ৮০০ কুইন্টাল মোম সংগ্রহের আশা করা হচ্ছে বলে আবু নাসের জানান।