কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় এক তরুণকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ সাত কিশোরকে আটক করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার গাজীপুর আজিজিয়া সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস।
পুলিশ বলছে, আটকরা সবাই কিশোর বয়সী; এদের মধ্যে কয়েকজন এসএসসি পরীক্ষার্থীও আছে।
নিহত সিয়াম আল হেলাল সরকার (১৭) উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের চরমোহনপুর এলাকার হেলাল উদ্দিন ওরফে বাক্কা মিয়ার ছেলে। সিয়াম স্থানীয় একটি মাদরাসার আলিমের (একাদশ) শিক্ষার্থী ছিল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটকদের নাম-পরিচয় জানা জায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এদিন দুপুর ১টায় দাখিল পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা বের হচ্ছিল। এক চাচাতো ভাইকে নিতে কেন্দ্রের সামনে আসেন সিয়াম। এসময় কয়েকজন কিশোরের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে কিশোররা সিয়ামকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও পরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি দিয়ে আঘাত করে চলে যায়। স্থানীয়রা সিয়ামকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় পরীক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা এদিক-সেদিক দৌঁড়াতে শুরু করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা আমেনা আক্তার জানান, সিয়ামের কোমরে ছুরিকাঘাতের গভীর দুটি চিহ্ন পাওয়া গেছে।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ওই তরুণের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমি শুনেই থানার ওসিকে কল দিয়ে বলেছি; ঘটনাস্থলে পুলিশ আছে। তাকে কারা হত্যা করেছে তা এখনও জানা যায়নি। শুনেছি, তার সঙ্গে কয়েকজনের শত্রুতা ছিল; এর জেরে এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে।”
নাম প্রকাশ না শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, হত্যাকারীরা সবাই কিশোর বয়সী; এরা এলাকায় কিশোর গ্যাং-এর সদস্য বলে পরিচিত। ভয়ে এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে চায় না।
বিকাল ৪টার দিকে তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, “হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা মেঘনা উপজেলার দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। পরে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে আমরা সাতজনকে আটক করি। আটকদের মধ্যে কয়েকজন এসএসসি পরীক্ষার্থীও আছে। তাদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
“হত্যার পেছনের কারণ এখনো জানতে পারিনি, তবে আমাদের তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে বলে জানান ওসি।