হত্যার দেড় যুগ পর রায়, আইনজীবীসহ দুই জনের যাবজ্জীবন

মামলাটি সুনামগঞ্জের হলেও একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টের আদেশে মামলাটি সিলেটে স্থানান্তরিত হয়।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2022, 06:55 PM
Updated : 9 Nov 2022, 06:55 PM

সুনামগঞ্জের একটি হত্যা মামলায় ১৯ বছর পর এক আইনজীবীসহ দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। এ ছাড়া ওই আইনজীবীর সহোদরের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়।   

বাদীপক্ষের আইনজীবী শহিদুজ্জামান চৌধুরী জানান, বুধবার সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শায়লা শারমিন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। 

দণ্ডিতরা হলেন সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও দিরাই উপজেলার টংগর গ্রামের প্রয়াত মদরিছ আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম এবং আব্দুর রহিমের ছেলে সবজুল ইসলাম। 

নুরুল ইসলামকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়, যা অনাদায়ে আরও দুই বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। সবজুল ইসলামকে যাবজ্জীবনসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, যা অনাদায়ে আরও ৩ বছর কারাভোগ করতে হবে। 

অপর দণ্ডপ্রাপ্ত হলেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের ভাই ময়নুল হক; তাকে ১০ বছরের সাজাসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়, যা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাভোগ করতে হবে। 

রায় ঘোষণার সময় সবজুল ইসলাম ও ময়নুল হক পলাতক ছিলেন। 

মামলার নথি থেকে জানা যায়, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের টংগর গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুল আলিম খান মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আজমল খান বাদী হয়ে পরদিন হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিরাই থানার ওসি সুভাষ চন্দ্র সাহা ৪১ জনকে আসামি করে ২০০৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ অভিযোগ তুললে মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। 

পরবর্তীতে সিআইডি তদন্ত শেষে ৪১ জনকে আসামি করে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে। বারবার তারিখ পরিবর্তনের পরও অভিযোগ গঠন না হওয়ায় বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে রিট করে। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালে মামলাটি সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। 

সিলেট আদালতে ওই বছরের ১৪মে ৪১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। বুধবার ঘোষিত রায়ে ৪১ আসামির তিন জনকে সাজা দিয়ে বাকিদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। 

বাদীপক্ষের আইনজীবী শহিদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, পিয়ারা বেগম নামের এক নারী বাদী হয়েও একই ঘটনায় আরেকটি মামলা করেছিলেন। এই পাল্টা মামলার বিচারও একসঙ্গে হয় এবং সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। 

শহিদুজ্জামান চৌধুরী ছাড়াও বাদীপক্ষের আরেক আইনজীবী ছিলেন এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত পিপি জসিম উদ্দিন।