হামলার পর স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে হামলাকারী যুবকসহ ১০ জনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
Published : 01 Jul 2023, 10:31 AM
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ছোট বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করার জেরে ইউপি সদস্যের কার্যালয়ে ডাকা সালিশে ‘বখাটে’র ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন এক যুবক।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর এলাকায় স্থানীয় ২ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান সজীবের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি সুদ্বীপ রায় পলাশ।
নিহত রবিউল হক শাহেদ উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে। ২২ বছর বয়সী শাহেদ পেশায় এস্কেভেটর চালক ছিলেন।
নিহতের বোন সাথী আক্তার বলেন, বড়ভাই শাহেদ শুক্রবার বিকালে ছোটবোনসহ কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে পর্যটন স্পট চম্পকনগর শমসের গাজীর দিঘি ও সুড়ঙ্গ এলাকায় বেড়াতে যান।
এ সময় স্থানীয় কয়েক ‘বখাটে’ ছোটবোনকে উদ্দেশ্য করে নানা কুরুচিপূর্ণ কথা বলে এবং শরীরের ওড়না ধরে টান দেয়। এর প্রতিবাদে বখাটেদের সাথে তর্কের এক পর্যায়ে এক বখাটেকে ‘চড়-থাপ্পড়’ দেয় শাহেদ। এতে শাহেদের ওপর ক্ষিপ্ত হয় বখাটেরা।
সাথী আক্তার আরও বলেন, সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিচারের জন্য বখাটেরা স্থানীয় ২ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান সজীবের কার্যালয়ে জড়ো হয়।
পরে ঘটনাটি জানতে পেরে উভয়পক্ষকে সন্ধ্যায় তার কার্যালয়ে আসতে বলেন সজীব মেম্বার। অভিযুক্ত ‘বখাটে’রা সেখানে আগে থেকে অবস্থান করছিল।
“ভাই শাহেদ কার্যালয়ে গেলে বিচারের আলোচনার এক পর্যায়ে দুই পক্ষের কথা কাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় হঠাৎ এক বখাটে ভাইকে ঝাপটে ধরে তার বুকে একাধিক ছুরিকাঘাত করে।”
এতে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শাহেদ। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক (ইএমও) আতকিয়া মাহমুদা তাহা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই শাহেদের মৃত্যু হয়। নিহতের বুকে একাধিক ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
ওসি সুদ্বীপ রায় জানান, ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
খবর পেয়ে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে হামলার পর স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে হামলাকারী যুবকসহ ১০ জনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
বিষয়টি জানতে ২ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য (মেম্বার) ফজলুর রহমান সজীবের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করেছে। তদন্তের স্বার্থে আটকদের নাম ও পরিচয় আপাতত জানানো যাচ্ছে না।
ওই এলাকার উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
ওসি সুদ্বীপ রায় পলাশ আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের মা মরিয়ম ১২ জনের নামোল্লেখ করে এবং ৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে ‘সায়েম’ নামে এক যুবক শাহেদকে ছুরিকাঘাত করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।