জাল ফেলা যাবে না, অথচ সব জেলে চালও পায় না

মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, কারা সহায়তা পাবেন আর কারা পাবেন না – এ ব্যাপারে সরকারের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই।

সাইদ মেমনবরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2023, 07:00 PM
Updated : 15 March 2023, 07:00 PM

ইলিশ রক্ষায় মার্চ ও এপ্রিলে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন নদীর প্রায় ২৯০ কিলোমিটার অভয়াশ্রমে সব ধরনের জেলের জাল ফেলা নিষেধ। কর্মহীন এই সময়ে জেলেদের পরিবার নিয়ে চলার জন্য সরকারিভাবে চাল সহায়তা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সহায়তা পায় অর্ধেক জেলে। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা বাকি অর্ধেক সহায়তা থেকে বঞ্চিত থাকে।  

মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারা সহায়তা পাবেন আর কারা পাবেন না – এ ব্যাপারে সরকারের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই।

কোথাও জেলেদের ‘আর্থিক অবস্থা’ এবং ‘বিকল্প পেশা’ বিবেচনায়, কোথাও তালিকার ক্রমানুসারে; আবার কোথাও নিবন্ধিত জেলেদের ইউনিয়ন কমিটি, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা পরিষদ থেকে নিজেদের মতো করে এটি নির্ধারণ করে দেয়।

জনপ্রতিনিধিরাও বলছেন, চাল বরাদ্দে সরকারের নীতিমালা না থাকায় অনেক জেলেই এ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, বিভাগে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা চার লাখ এক হাজার ৮৮। এর মধ্যে জাটকা ও ইলিশ শিকারের জেলের সংখ্যা তিন লাখ ৪৩ হাজার ১১৯। বাকি প্রায় ৫৭ হাজার ইলিশ ব্যতিত ছোট-বড় মাছ ধরার জেলে।

তাদের মধ্যে চাল সহায়তা পায় দুই লাখ তিন হাজার ১৮৭ জন। বাকি প্রায় দুই লাখ ইলিশ ও সাধারণ জেলে এই সহায়তার বাইরে থাকে। 

নভেম্বর থেকে জুন – এই আট মাস নদীতে জাটকা (যেসব ইলিশ ১০ ইঞ্চির নীচে) ধরা নিষেধ। আর মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ।

এজন্য গড়ে চার মাস জেলেদের ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। এ বছর এই চালের পরিমাণ বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৮২৯ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন।

‘উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জেলেও রয়েছে’

বরিশাল জেলার গজারিয়া, কালাবদর ও মেঘনা নদীর ৮২ কিলোমিটার এলাকা অভয়াশ্রম। সেখানে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ। জেলায় মোট জেলে রয়েছে ৮৬ হাজার ২৮৯ জন। এর মধ্যে সহায়তা পেয়েছে ৪৩ হাজার ২৬৭ জন জেলে। তাদের মাঝে ছয় হাজার ৯২২ দশমিক ৭২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

কীভাবে এই বরাদ্দ দেওয়া হয় জানতে চাইলে মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আনিচুর রহমান তালুকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সব জেলেরা দরিদ্র নয়। তাদের মধ্যে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জেলেও রয়েছে। সহায়তার চাল কারা পাবে, তা বাছাই করতে উপজেলা ভিত্তিক কমিটি রয়েছে। ওই কমিটি তালিকা তৈরি করে।

উপ-পরিচালক বলেন, “যাদের প্রয়োজন বেশি তাদেরই সহায়তার আওতায় আনা হয়।”

বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৪০ কেজি করে চাল সব জেলে পান না। অভয়াশ্রমে মাছ শিকার নিষিদ্ধ সময়ে কোনো সহায়তা দেওয়া হয় না। জাটকা সংরক্ষণ সহায়তার চাল যারা পান না তাদের অভয়াশ্রমে শিকার নিষিদ্ধ সময়ে সহায়তা দেওয়া উচিত। বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

বরিশাল সদর উপজেলায় চার হাজার ৭০০ তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৫৮২ জন সহায়তা পাচ্ছে।

সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জীব সন্যামত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চার মাসের মধ্যে দুই মাস করে ভাগ করে চার হাজার ৭০০ জনকে চাল দেওয়া হচ্ছে। এভাবে সবাইকে সহায়তার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

“জেলেদের মা ইলিশ সংরক্ষণ ও সমুদ্রে শিকার নিষিদ্ধ সময়েও সহায়তা দেওয়া হয়। তাই ভাগ করে দেওয়ায় কোনো সমস্যা হয় না।”

বরিশালের হিজলা উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ২০ হাজার। নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে আনুমানিক অন্তত হাজার তিনেক। কিন্তু জাটকা শিকার নিষিদ্ধ সময়ের জন্য চাল সহায়তা পাচ্ছে ১২ হাজার জেলে। বাকি প্রায় আট হাজার জেলে সহায়তার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

হিজলা উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা এম এম পারভেজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের চেষ্টা শতভাগ জেলে সহায়তার আওতায় আসুক। কিন্তু সবকিছু তো চাইলেই হবে না। সরকারের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।”

“শিকার নিষিদ্ধ সময় ছাড়াও মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকপ্লের মাধ্যমে জেলেদের সহায়তা করা হচ্ছে। নিষিদ্ধ সময়ে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য বকনা বাছুর দেওয়াসহ বিভিন্ন সময়ে সহায়তা দেওয়া হয়। জেলেদের সচেতন করার সব ধরনের চেষ্টা করা হয়। মাছের উৎপাদন বাড়লে জেলেদের লাভ। সেই বিষয়টি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

নিষিদ্ধ সময়ে জাল ফেলা ও মাছ শিকার বন্ধে সরকার সফল হয়েছে জানিয়ে এই মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, “এ কারণেই তো বর্তমানে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।”

মৎস্য বিভাগ জানায়, জাল ফেলা নিষিদ্ধ নদীপথ সবচেয়ে বেশি ভোলা জেলায়। সেখানে রয়েছে ইলিশা থেকে মনপুরার চর পিয়াল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ৯০ কিলোমিটার। এ ছাড়া ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালী জেলার চর রুস্তম পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।

বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি জেলে রয়েছে ভোলা জেলায়। সেখানে তালিকাভুক্ত জেলের সংখ্যা এক লাখ ৫৮ হাজার। এর মধ্যে খাদ্য সহায়তা পেয়েছে ৮৯ হাজার। প্রায় ৬০ হাজার জেলে সেখানে সহায়তার বাইরে।

কেন এই বিপুল সংখ্যক জেলে সহায়তার বাইরে রয়েছে- এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. এমদাদ উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার মনে করে সব জেলেই মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল নয়। এদের মধ্যে অনেকে কৃষিকাজ ও ছোটখাট ব্যবসা করেন। কেউ আবার অটোরিকশা বা পরিবহন চালান। তাই সব জেলের জন্য বরাদ্দ দেয়নি।

তবে সবার জন্য বরাদ্দের জন্য মৎস্য অধিদপ্তরের সুপারিশ রয়েছে জানিয়ে এমদাদ উল্লাহ বলেন, “কিন্তু সব জেলের মধ্যে কাদের বিকল্প পেশা আছে বা কাদের নেই এটা নিরূপণের কোনো নীতিমালা নেই। না থাকার কারণে সাধারণত জেলে তালিকার প্রথম থেকে যাদের নাম দেওয়া আছে তারা সহায়তা পান।”

ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়ন ইলিশ বা জাটকা জেলে এবং সাধারণ মাছ ধরার জেলে অধ্যুষিত এলাকা।

শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, “অনেক জেলের নামই নিবন্ধিত তালিকায় নেই। আবার যাদের নাম আছে তাদের সবার জন্য বরাদ্দও নেই। কারা সরকারের খাদ্য সহায়তা পাবেন তারও কোনো নীতিমালা নেই। তাই সাধারণত তালিকার ক্রমানুসার বিবেচনা করা হয়।

“ট্যাগ অফিসারের উস্থিতিতে জেলে সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। তিনি নিজেই বলছেন, নীতিমালা না থাকায় অনেক অসহায় তালিকাভুক্ত জেলেও সহায়তা পান না। কারণ, তালিকার ক্রমানুসারে তাদের নাম অনেক পেছনে।”

পটুয়াখালী জেলা সরকারি হিসেবে নিবন্ধিত জেলে ৮০ হাজার ৬১; এর মধ্যে ইলিশ বা জাটকা জেলে ৬৪ হাজার ৫৪৬। কিন্তু এ বছর সেখানে ৫০ হাজার ১৩৯ জেলেকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে আট হাজার ২২ দশমিক ২৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাকি প্রায় ১৪ হাজার জেলে সহায়তার বাইরে রয়েছে।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চাল বরাদ্দের ক্ষেত্রে নিবন্ধিত জেলেদের মধ্য থেকে ইউনিয়ন কমিটি আছে, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা পরিষদ থেকে নির্ধারণ করা হয়। তারপরেও যারা বেশি দরিদ্র তাদের মধ্য থেকে এ তালিকা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।”

তিনি আরও বলেন, “অভায়াশ্রমে মাছ ধরা যেখানে নিষিদ্ধ সেখানে আমাদের ৫০ হাজার জেলে নাই। যেমন- বাউফল, দশমিনা, গলাচিপা, কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালীর কিছু অংশ জাটকা বা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ এলাকা পড়েছে। বাকি অংশ কিন্তু খোলা।”

জাল ফেলা থেমে নেই

বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের হবিনগর এলাকায় সোমবার গিয়ে দেখা গেছে, নদীজুড়ে মাছ শিকার চলছে। মাঝনদী, তীরের কাছেও ঘের জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে জেলেরা।

নদী ও মাছের ওপর নির্ভরশীল অনেক জেলের প্রশ্ন, তারা যদি নদীতে জাল ফেলতে না পারে তাহলে পরিবার নিয়ে বাঁচবে কীভাবে? ফলে অনেকে আইন অমান্য করে নদীতে জাল ফেলতে যায় এবং জেল-জরিমানার শিকার হয়। অপরাধের মনোবৃত্তি বাড়ছে।

বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, গত বছর ২০২২ সালে মার্চ-এপ্রিলে ভোলা ও বরিশাল জেলায় জাল ফেলা নিষিদ্ধের সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত মোট ৩৩৫ জনকে জেল দিয়েছিল। মামলা হয়েছিল মোট ৬৯৭টি।

এ বছর অভিযান পরিচালনা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা কমে গেছে বলে অনেক জেলে জানিয়েছেন।

মাছ শিকাররত শায়েস্তাবাদ উপজেলার কামাড়পাড়ার জেলে দুলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি জাটকা শিকার করেন না। তিনি ছোট মাছ শিকার করেন। তাই তিনি চাল পান না।

তার দাবি, “বড় জাল দিয়ে শিকার করা জেলেরা চালও পায়, আবার মাছও ধরে। কেউ কিছু বলে না।”

পাশের আরেক জেলে করিম বলেন, “এক যুগ ধরে নদীতে মাছ শিকার করছি। কিন্তু কোনোদিন সহায়তা পাইনি।”

বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির হিজলা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. জাকির হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনোভাবেই মাছ ধরা থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। এর কারণ, বর্তমানে নদীতে প্রচুর মাছ রয়েছে। এক বস্তা চাল ও একটি বাছুরের চেয়ে একবার জাল ফেললে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার মাছ ধরা পড়ে। তাই জেলেরা নদীতে মাছ ধরে।

“মাছ ধরতে বাধা দিলে প্রশাসনের সঙ্গেও ঝামেলা করে। এ ছাড়া কিছু অসাধু কর্মকর্তা রয়েছে। তাদের ইন্ধনে জেলেরা মাছ ধরে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জেলেদের মাছ ধরতে নিষেধ করতে পারে। কিন্তু তারা করবে না। কিছু কিছু চেয়ারম্যান, সদস্য ও নেতা জেলেদের মাছ ধরতে উৎসাহ দেয়।”

এই সময়ে জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে অভিযান নেই অভিযোগ করে জাকির হোসেন বলেন, “মেঘনা নদীতে অভিযান চলে (শিকার নিষিদ্ধ সময়) সেটা দেখলে বোঝা যাবে না। নদীতে জেলেরা মাছ ধরছে।”

জেলেদের মাছ শিকার থেকে বিরত রাখতে কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও ট্রলার চালক বাদল মিয়া বলেন, “মাঝে-মধ্যে কোস্ট গার্ডের টহল দেখা যায়। ওই সময় জেলেরা নদীতে থাকে না।”

মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিন কারণে জেলেদের মাছ শিকার থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকা, দারিদ্র্য এবং আড়তদারদের প্রলোভন বা চাপ।

তিনি বলেন, রাতে নদীতে কোস্ট গার্ড ও নৌ-পুলিশ নদীতে অভিযান করতে চায় না। তাই রাতের বেলায় জেলেরা মাছ শিকার করেন।

কামাল হোসেন বলেন, বর্তমানে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ২৪ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৯২৫ জেলেকে চাল দেওয়া হয়েছে।

বঞ্চিত জেলেদের অনেকের অভিযোগ, এমন অনেক জেলে আছেন যারা সরকারি সহায়তা নিচ্ছেন আবার আইন অমান্য করে নদীতে জালও ফেলছে। তারা দুদিকেই লাভবান হচ্ছে।  

অপরদিকে যারা ৪০ কেজি চালের সহায়তা পাচ্ছে, তাদের অভিযোগ জনপ্রতিনিধিরা বরাদ্দের চাল কম দিচ্ছেন। বিকল্প কর্মস্থানের অংশ হিসেবে কোনো কোনো জেলে সরকারের পক্ষ থেকে বকনা বাছুর পাচ্ছেন।  

বাকেরগঞ্জের লক্ষ্মীবর্ধন গ্রামের জেলে জাহাঙ্গীর খান অভিযোগ করেন, তাদের ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ৩০-৩২ কেজি করে। বাকি চাল চেয়ারম্যান, মেম্বররা কম দেয়।

মাছ শিকার আট মাস বন্ধ থাকলেও চাল দেয় চার মাস। তাও কম দেয়, তাই জেলেরা মাছ শিকারে যায় বলে জানান জাহাঙ্গীর।

তবে চাল কম দেওয়ার ব্যাপারে কেউ কখনও কোনো অভিযোগ করেনি বলে জানান মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আনিচুর রহমান তালুকদার।

তিনি বলেন, “একটু তো সমস্যা হয়। জনপ্রতিনিধিরা তাদের নিজস্ব কিছু লোককে খুশি রাখতে জেলেদের কম দিয়ে তাদের দেয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ করে না। করলে সঠিকভাবে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”

(প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ভোলা ও পটুয়াখালী প্রতিনিধি।)