“আত্মীয়তার সুবাদে বা রাজনৈতিক কারণে সে বা অন্য কেউ বাড়তি সুবিধা পাবেন না।”
Published : 19 Apr 2024, 04:39 PM
নাটোরের সিংড়া উপজেলায় অপহরণ ও মারধরের শিকার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেছেন, “এ ঘটনায় আমি লজ্জিত, দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।”
যার বিরুদ্ধে দেলোয়ারকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে, সেই লুৎফুল হাবিব রুবেলও সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক।
মারধরে গুরুতর আহত দেলোয়ার বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে দেখতে শুক্রবার সকালে উড়োজাহাজে করে রাজশাহী বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রতিমন্ত্রী পলক। সেখান থেকে যান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাও তার সঙ্গে ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী অসুস্থ দেলোয়ার এবং তার দুই ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। এ ছাড়া দায়িত্বরত চিকিৎসকের কাছে দেলোয়ারের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়ার অনুরোধ জানান।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পলক বলেন, “আমি বিদেশে ছিলাম। গতকাল রাত ১টায় দেশে ফিরেছি। তবে বিদেশে থেকেও সবসময় খোঁজখবর নিয়েছি। আমি ভাবতেও পারিনি, নাটোরের মাটিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে।
“এ ঘটনায় আমি লজ্জিত, দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনার খোঁজখবর রাখছেন। এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের সুষ্ঠু বিচার হবে। কেউ ছাড়া পাবে না।”
নাটোর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে সোমবার বিকালে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় একদল লোক। কয়েক ঘণ্টা পর তাকে বাড়ির সামনে ফেলে যায় তারা।
শাহজাহান ওমর ও এ কে আজাদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল
এ ঘটনার জন্য আরেক প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছে দেলোয়ারের পরিবার। ওই প্রার্থীকে মারধরের ঘটনায় ইতোমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রুবেল সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি সিংড়ার শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। সম্প্রতি সেই পদ ছেড়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদের লড়াইয়ে নেমেছে। দেলোয়ারকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন তিনি।
এ ঘটনায় রুবেলকে নির্বাচন কমিশনে তলব করা হয়েছে। তার প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না, সোমবার কমিশনে হাজির হয়ে সে বিষয়ে তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
ওই ঘটনায় দেলোয়ারের ভাই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার দুজনের মধ্যে একজন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই জবানন্দিতে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেলের পক্ষে তারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “লুৎফুল হাবিব আমার আত্মীয় তা অস্বীকার করব না। তবে আত্মীয়তার সুবাদে বা রাজনৈতিক কারণে সে বা অন্য কেউ বাড়তি সুবিধা পাবেন না। বরং এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যা এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে দলের পক্ষ থেকেও তাদের ব্যাপারে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।