২০১৫ সালের অক্টোবরে ঘটনার সময় বাক-শ্রবণ ও মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরীর বয়স ছিল ১৪ বছর।
Published : 09 Oct 2024, 06:28 PM
বাক-শ্রবণ ও মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে এক বৃদ্ধকে নয় বছর পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে ভুক্তভোগীকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মেহেরপুরের একটি আদালত।
বুধবার মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ তৌহিদুল ইসলাম আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন বলে আসামি পক্ষের আইনজীবী মিয়াজান আলী জানান।
দণ্ডিত ষাটোর্ধ্ব গোলাম রসুল গাংনী উপজেলার বাসিন্দা।
আইনজীবী বলেন, ধর্ষণের ফলে ওই নারী একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ২১ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সন্তানের ভোরণপোষণ রাষ্ট্র বহন করবে। প্রয়োজনে সাজাপ্রাপ্ত আসামির সম্পত্তি বিক্রি করে সন্তানের ভোরণপোষণের টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
“ধর্ষকের সম্পত্তির মালিকানা এই সন্তানের উপর অর্পিত হবে। ভোরণপোষণের টাকার পরিমাণ নির্ধারণ এবং বাস্তবায়নের জন্য আদালত রায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।”
মামলায় বলা হয়, কিশোরীর মা দরিদ্র। মেয়েটি পিতৃহারা। ২০১৫ সালের ২ অক্টোবর গোলাম রসুল মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। চার মাস পর অসুস্থতার কারণে চিকিৎসকের কাছে গেলে তার গর্ভধারণের বিষয়টি পরিবার জানতে পারে। আপসের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় দরিদ্র পরিবারটি।
পরে কিশোরী ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গাংনী থানায় গোলাম রসুলকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৯ (১) ধারায় মামলা করেন। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ধর্ষণ ও শিশুটির পরিচয় শনাক্ত হয়।
আদালতের রায়ে সন্তোষ্ট কিশোরীর মা সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনার সময় আমার মেয়ের বয়স ছিল ১৪। সে মানসিক প্রতিবন্ধী। কখনও কখনও তাকে শেকলে বেঁধে কাজে যেত হয়। রায়ের মধ্য দিয়ে মেয়ে এবং তার সন্তান একটি পরিচয় পেল।”
আইনজীবী মিয়াজান আলী বলেন, আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাবাস দেওয়া হয়েছে রায়ে।
“ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কোনো সাক্ষী নেই। অন্য সাক্ষীরাও কিছু স্বীকার করেননি। কিন্তু ডিএনএ প্রতিবেদনে ধর্ষণ এবং গর্ভজাত শিশুর পিতৃপরিচয় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় দিয়েছে।”