রুবেলের চাচা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এটা একটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।”
Published : 02 Oct 2024, 03:45 PM
কুষ্টিয়া শহরে হাত-পা বেঁধে ও মুখে গামছা পেচিয়ে মেসের ছাদ থেকে ফেলে এক কলেজ ছাত্রকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৪নং পৌর ওয়ার্ডের কোর্টপাড়ার স্যার ইকবাল রোডের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মো. মাহফুজুল হক চৌধুরী।
বনফুড বেকারীর সামনে লাল মিয়ার ঐ চারতলা ভবনটিতে ছাত্ররা মেস করে থাকতেন। নিহত রুবেল (২২) ভবনটির তিনতলার মেসে থাকতেন।
কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কলেজের পাওয়ার ডিপার্টমেন্টের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী রুবেল কুমারখালী উপজেলার মির্জাপুর এলাকার শহিদুল মণ্ডলের ছেলে।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কে বা কারা রুবেলকে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে ও মুখ গামছা দিয়ে পেচিয়ে মারধর করে নিচে ফেলে দেয়।
কয়েকজন পথচারী তাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ওই মেসের চতুর্থ তলার বাসিন্দা ও স্থানীয় দোকান কর্মচারী কামরুল হাসান শুভ বলেন, “রাতে হঠাৎ শোর-চিৎকার শুনে নীচে নেমে দেখি ভবনের লাগোয়া ড্রেন সংলগ্ন গলিপথের উপর রুবেলের হাত-পা-মুখ বাধা অচেতন দেহ পড়ে আছে। আশেপাশের লোকজন ঘিরে ছিল।
“সাদা রংয়ের রশি দিয়ে রুবেলের হাত-পা বাধা ছিল। সেগুলি হাত দিয়ে দ্রুত খোলা যাচ্ছিল না। পরে পাশের একটি দোকান থেকে ছুরি এনে বাধন কাটা হয় এবং দ্রুত রুবেলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”
মেসের পরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, “বিকাল থেকে রুবেলকে চিন্তিত থাকতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পরে আমরা একসাথে মেস খরচের হিসাবে বসেছিলাম।
“এর মধ্যে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্ষ থেকে চিৎকার শুনে নিচে নেমে দেখি মুমূর্ষ অবস্থায় রুবেল পড়ে আছে। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”
রুবেলের চাচা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রুবেলের এক সহপাঠী মোবাইলে জানায় রুবেল এক্সিডেন্ট করেছে। সংবাদ পেয়ে রাতেই আমরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে এসে তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় দেখি।
“এসময় ডাক্তার রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত রাজশাহী নিতে বল্লে আমরা অ্যাম্বুলেন্সে রওনা হই। কিন্তু পথে রাত ১টার দিকে নাটোর জেলার লালপুর এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই রুবেল মারা যায়।”
“এটা একটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”- যুক্ত করেন তিনি।
ওসি মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, নিহত রুবেলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
“ধারণা করা হচ্ছে মেসের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে দ্বন্দ্বের কারণে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার দুই রুমমেট হৃদয় ও রাইসুলকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।