ফেনীতে ‘পাচারের সময়’ শতাধিক সুন্ধি কাছিম উদ্ধার, আটক ১

পরে কাছিমগুলো শহরের অদূরে কাজিরবাগ ইকোপার্কের পুকুরে ও সদর উপজেলার কালিদাস পাহাড়লিয়া নদীতে অবমুক্ত করা হয় বলে পুলিশ জানায়।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2023, 12:01 PM
Updated : 20 May 2023, 12:01 PM

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনীর বিসিক মোড় এলাকা থেকে ১০৮টি সুন্ধি কাছিম উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, কাছিমগুলো যে ব্যক্তি পাচার করছিলেন তাকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার মধ্যরাতে উদ্ধার করা কাছিমগুলো শনিবার দুপুরে শহরের অদূরে কাজিরবাগ ইকোপার্কের পুকুরে ও সদর উপজেলার কালিদাস পাহাড়লিয়া নদীতে অবমুক্ত করা হয় বলে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান।

এ ঘটনায় আটক কনক চন্দ্র দাস (৫৫) লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, পুলিশের কাছে গোপন সংবাদ আসে, এক ব্যক্তি অনেকগুলো কাছিম নিয়ে ঢাকার দিকে যাওয়ার জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওই এলাকায় অপেক্ষা করছে। পরে সেখানে অভিযান চালায় ফেনী মডেল থানা পুলিশ। এ সময় কনক চন্দ্রকে আটক করে তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে ১০৮টি সুন্ধি কাছিম উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার কাছিমগুলোর ওজন প্রায় ৮০ কেজি।

আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্বৃতি দিয়ে শাহাদাৎ হোসেন জানান, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন চর এলাকার লোকজনদের কাছ থেকে কাছিমগুলো তিনি (কনক চন্দ্র দাস) সংগ্রহ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এসব প্রাণী ফেনীসহ মাদারীপুর, সাতক্ষীরা ও খুলনার ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করে আসছেন।

সামাজিক বনবিভাগ ফেনীর সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র ভৌমিক বলেন, “পরিবেশের বিপর্যয় ও আবাসস্থল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এসব কাছিম ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।”

বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা মোবাইল ফোনে জানান, সুন্ধি প্রজাতির কাছিম স্থানীয়ভাবে ‘চিতি কাছিম’ নামেও পরিচিত। দুই থেকে তিন দশক আগেও দেশের নদী, খাল, বিল, হাওর ইত্যাদি জলাশয়ে প্রচুর সুন্ধি কাছিম দেখা যেত। তবে বাসস্থান ধ্বংস ও ক্রমাগত শিকারের কারণে এ জলজ প্রাণীটি হারিয়ে যেতে বসেছে।

ফেনী মডেল থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী সুন্ধি কাছিম প্রজাতিটি সংরক্ষিত। এ জাতীয় কাছিম হত্যা বা এর ক্ষতিসাধন শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

আটক কনক চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।