কী কারণে এ বছর শীতে ইলিশ কম ধরা পড়ছে, তা বলতে পারছে না মৎস্য বিভাগ।
Published : 03 Jan 2025, 09:04 PM
বরিশালের মোকামে ইলিশ মাছের দাম ‘অস্বাভাবিক’ বেড়েছে।
নগরীর পোর্ট রোড মোকামে ১৬৭টি মাছের আড়ত রয়েছে। শুক্রবার মোকামে গিয়ে মাত্র ২০-২৫টি আড়তে ইলিশের দেখা মিলেছে।
এক কেজি দুইশ থেকে তিনশ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি তিন হাজার ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এতে প্রতি মণ ইলিশের দাম পড়েছে দেড় লাখ টাকা।
আর এক কেজি ওজনের মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায়; সে হিসেবে এক মণের দাম পড়ছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকা দরে। পাঁচটিতে এক কেজি ওজন হয়, এমন আকৃতির মাছের কেজি ছয়শত টাকা, হালিতে এককেজি ওজন হয়, এমন আকৃতির মাছের কেজি ছিল সাতশ টাকা।
কী কারণে এ বছর শীত মৌসুমে ইলিশ কম ধরা পড়ছে, তা বলতে পারছে না মৎস্য বিভাগও।
পোর্ট রোডের মাছ ব্যবসায়ী বেলায়েত সিকদার বলেন, “শুক্রবার বাজারে মাত্র ২০ মণ ইলিশ বেচা-কেনা হয়েছে। এসব মাছের সিংহভাগই ছোট আকারের। দেড় কেজি ওজনের একটি মাছও গত কয়েকদিন ধরে বাজারে উঠেনি।”
মেঘনা নদীর ধুলখোলা ৭ নম্বর ওয়ার্ড মাছ ঘাটের মালিক আলম চকিদার বলেন, “বর্তমানে মেঘনা নদীতে তেমন ইলিশ মাছ নেই। জেলেরা দিন ও রাতভর নদীতে জাল ফেলে খুব কম মাছ পায়। জেলেদের জালে ধরা পড়া মাছ জাটকা সাইজের। বড় সাইজের কোনো মাছ নেই।”
আলম চকিদার বলেন, “আগে প্রতিদিন ঘাটে ৪০ থেকে ৫০ হালি বিক্রি হত। বর্তমানে অর্ধেকের কম পাওয়া যায়।”
বাজারে খুচরা মাছ বিক্রেতা শিল্পী বেগম বলেন, ইলিশ মাছের বেশি দামের কারণে গত এক মাস ধরে মাছ কিনে বিক্রি করতে পারেননি তিনি। এখন সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতে আড়তদার মালিক সমিতিতে পরিচারিকার কাজ করছেন।
শ্রমিক উত্তম বলেন, ইলিশ উঠানো-নামানোয় নিয়োজিত রয়েছেন হাজারো শ্রমিক। ইলিশ কম ধরা পড়ায় সিংহভাগ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। অনেকেই বিকল্প পেশায় চলে গেছেন।
বরিশাল জেলার মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে শীতে ইলিশ পাওয়া যেত। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম হয়েছে। শুধু নদীতেই নয়, সাগরেও ইলিশ নেই। কেন নেই, তা আমরা বলতে পারব না।”