গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেডের নামে উচ্ছেদ বন্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে প্রস্তাবিত রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের [ইপিজেড] নামে  স্থানীয়দের উচ্ছেদের ‘পাঁয়তারা’ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন সেখানে বসবাসকারী সাঁওতাল ও বাঙালিরা।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2022, 06:10 PM
Updated : 8 June 2022, 03:18 AM

উপজেলার কাটামোড় এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে সাঁওতাল-বাঙালি নারীরা সাঁওতাল অধ্যুষিত মাদারপুর ও জয়পুর গ্রাম থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাটামোড়ে সমবেত হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন।

সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ এ সমাবেশের আয়োজন করে।

এতে সভাপতিত্ব করে সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ফিলিমন বাস্ক।

সমাবেশে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি আবুল বারাকাত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই জমিতে যদি ইপিজেড করতেই হয়, তাহলে আগে সাঁওতালদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যবস্থা করতে হবে। জোরপূর্বক কিছু করার চেষ্টা করা ব্যর্থ হবে।”

সমাবেশে ফিলিমন বাস্কে বলেন, ২০১৬ সালে ৬ নভেম্বর এই জমি উদ্ধার করতে গিয়ে তিন সাঁওতাল জীবন দিয়েছেন। অনেকে গুলিতে পঙ্গু হয়েছে। প্রয়োজনে আরও রক্ত দিব। কিন্তু বাপ-দাদার তিনফসলি জমিতে ইপিজেড করতে দেওয়া হবে না।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারের দাবিতে ছয় বছরেও তার বিচার হয়নি। মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ নিয়ে সাঁওতালদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সাঁওতাল ও বাঙালিদের ১ হাজার ৮৪০ দশমিক ৩০ একর জমি ১৯৬২ সালে অধিগ্রহণ করে সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার গড়ে তোলে রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু চিনিকল কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণের চুক্তি ভঙ্গ করে ওইসব জমি লিজ দিলে তাতে ধান-পাটসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়। ফলে গত ২০১৫ সালে সাঁওতাল ও স্থানীয় কিছু বাঙালি অধিগ্রহণ চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে তাদের পূর্বপুরুষদের জমি ফেরত পেতে আন্দোলন শুরু করে।

এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের ১ জুলাই ওই খামারের কিছু এলাকায় তারা চারটি বড় বসতি স্থাপন করে। পরবর্তীতে একই বছরের ৬ নভেম্বর ওই খামারের বাকি জমিতে চাষ করা আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ৯ জন পুলিশ সদস্য তিরবিদ্ধ ও ৪ জন সাঁওতাল গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে তিন সাঁওতাল মারা যান। পরবর্তীতে পুলিশ এক অভিযানে ওই বসতি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে।

আরও পড়ুন